ছ’মাস ধরে সতর্ক করছিল কেন্দ্র। এ বার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক সাফ জানিয়ে দিল— আধার কার্ড না থাকলে এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে আর ১০০ দিনের কাজ করা যাবে না।
শুক্রবারের এই বিজ্ঞপ্তিতে অশনি সঙ্কেত দেখছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। কারণ এ রাজ্যে ১ কোটি ৪৩ লক্ষ জব কার্ডধারীর মধ্যে আধার রয়েছে ৯৭ লক্ষ ৩ হাজারের। অর্থাৎ ৩২ শতাংশ জব কার্ডধারীর আধার কার্ড নেই। আবার যাঁদের রয়েছে, তাঁদের মাত্র ২৪% (৩৪ লক্ষ ৫১ হাজার)-এর আধার কার্ড ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সংযুক্ত।
পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘যাঁরা ১০০ দিনের কাজ করছেন তাঁদের সকলেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। প্রকল্পের পারিশ্রমিক ওই অ্যাকাউন্টেই জমা পড়ে।’’ কিন্তু যাঁদের আধার কার্ড রয়েছে, তাঁরা কেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে তা সংযুক্তিকরণে উদ্যোগী হচ্ছেন না, সরকারই বা কেন তাঁদের উৎসাহ দিচ্ছে না— সেই প্রশ্ন তুলেছেন পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশ।
এ দিকে হাতে মাত্র তিন মাস। এর মধ্যে বাকিদের আধার কার্ড ব্যাঙ্কে সংযুক্ত না হলে ১০০ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ মোটা টাকা হারাবে পঞ্চায়েত দফতর। পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজ এখন সাংবিধানিক অধিকার। সুপ্রিম কোর্টও বলেছে কোনও সুবিধা প্রদানের শর্ত হিসেবে আধার কার্ডকে বাধ্যতামূলক করা যাবে না। তার পরেও কেন্দ্র এমন সিদ্ধান্ত নিলে লড়াই হবে।’’
পঞ্চায়েত মন্ত্রী লড়াইয়ের কথা বললেও তাঁর দফতরের অফিসারেরাই দোটানায়। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৬-এ কেন্দ্র পৃথক আইন পাশ করে বলেছিল, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিতে আধার কার্ডকেই মাধ্যম ধরা হবে। সুতরাং মন্ত্রীর যুক্তি ধোপে ঠিকছে না।
নবান্নের খবর, ৯ জানুয়ারি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব অমরজিৎ সিংহ মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে বলেছেন, উপভোক্তাদের সঙ্গে লেনদেন পুরোপুরি ডিজিটাল মাধ্যমে করতে চায় কেন্দ্র। সেই কারণে ১০০ দিনের কাজের লেনদেন আধার কার্ডে করা হবে। জব কার্ডধারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্ত হলেই কাজ দেওয়া যাবে। এবং সেই কাজ দ্রুত সেরে ফেলতে হবে রাজ্যকে।
কেন্দ্র নবান্নকে জানিয়েছে, সকলের আধার কার্ড তৈরির জন্য বিশেষ শিবির করুন। আগামী তিন মাস মজুরি পেতে জব কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর কিংবা আধারের আবেদনের স্লিপকে সচিত্র পরিচয়পত্র হিসেবে দেখাতে হবে। সেই পরিচয়পত্র ছাড়া কাজ দেওয়া হবে না। এ নিয়েও ক্ষুব্ধ সুব্রতবাবু। তাঁর যুক্তি, ‘‘আধার কার্ড কেন্দ্রীয় প্রকল্প। অথচ সেই কার্ড তৈরির ভার রাজ্যকে নিতে বাধ্য করছে তারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy