হাসপাতাল চত্বরে চলছে পরিষ্কারের কাজ। — নিজস্ব চিত্র
স্টেট জেনারেল হাসপাতালের গোটা পরিবেশই ক্রমশ ‘বিষাক্ত’ হয়ে উঠছে!
বিশেষজ্ঞদের থেকে এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই তড়িঘড়ি ঘুসুড়ির জায়সবাল হাসপাতালের পরিবেশ ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। হাওড়া পুরসভা, বিধায়ক ও সাংসদ তহবিল মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকা খরচে শুরু হয়েছে প্রায় ৩৫ বছর ধরে সংস্কার না হওয়া হাসপাতালের পরিকাঠামো ও পরিবেশ উন্নয়নের কাজ।
বালি, বেলুড়, লিলুয়া-সহ বালির বিস্তীর্ণ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা এই স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উপরেই নির্ভরশীল। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই প্রায় ২২ বিঘা জমির উপরে থাকা এই হাসপাতালের পরিবেশ ক্রমশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছিল। সেই কারণেই রোগী আসাও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলেই দাবি হাসপাতাল কর্তাদের।
কর্মীদের অভিযোগ, প্রায় ৩০ বছর ধরে হাসপাতালের পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়ন হয়নি। চত্বরের ভিতরে দু’টি বড় পুকুর থাকলেও সেগুলি আবর্জনা ও জঙ্গলে ভরে ছিল। সেখানেই আশপাশের কলকারখানার নোংরা জল, পোড়া তেল এসে মিশত। রাস্তাঘাট ভেসে থাকে আবর্জনা পড়ে বুজে যাওয়া নর্দমার জলে। এ বারও হাসপাতাল চত্বরের চারদিকে মিলেছিল ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মশার লার্ভা। কর্মীদের আবাসনগুলি ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছিল। কয়েক বছর আগে ওই সমস্ত আবাসনে অসামাজিক কাজ হচ্ছে শুনে হাসপাতালের সুপার নিজে গিয়ে হাতেনাতে কয়েক জনকে ধরে ছিলেন। স্থানীয় কাউন্সিলর কৈলাস মিশ্র জানান, জায়সবাল হাসপাতালের সব থেকে বড় সমস্যা হল দীর্ঘ দিন বর্ষার জল জমে থাকা। জল জমে হাসপাতালের একতলায় পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়া ছিল নিত্য ঘটনা। জল ভেঙে হাসপাতালে ঢুকতে গিয়ে সাপের কামড় খেতে হয়েছে অনেককে।
এত দিনে সেই ছবি বদলাচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে সেই ‘মিশন জায়সবাল’ কাজের সূচনা করে বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া বলেন, ‘‘হাসপাতালের পরিবেশই যদি সুস্থ না থাকে তা হলে সেখানে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠবেন কী করে? তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির কাজ শেষ করা হবে।’’
বৈশালীদেবী জানান, ইতিমধ্যেই পুরসভার জলসম্পদ দফতর থেকে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পে দু’টি পুকুর সংস্কার করা হয়েছে। তৈরি করা হচ্ছে ‘হেলথ পার্ক’। সেখানে বিভিন্ন ঔষুধী গাছ লাগানো হবে। যাতে রোগীরা বিকেলে সেখানে পায়চারি করতে পারেন। থাকবে কাচের তৈরি ঘর। সেখানে রোগীর পরিজন থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের নিয়ে চিকিৎসকেরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক আলোচনাসভা করবেন। বহিরাগতদের ঠেকাতে তৈরি করা হচ্ছে সীমানা প্রাচীর, লাগানো হচ্ছে জোরালো আলো।
জিটি রোডের থেকে প্রায় তিন ফুট নিচু ওই হাসপাতাল চত্বরকে উঁচু করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নতুন ভবন তৈরি, বর্তমান ভবন পুর্নগঠন ছাড়াও আধুনিক ওটি, ডিজিটাল এক্স রে-সহ অন্য পরিষেবাও চালু করা হবে বলে জানান সুপার সুখেন্দু বিশ্বাস। হাওড়ার চিকিৎসক, মেয়র রথীন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়া শহরটাকেও বাঁচানো হচ্ছে। জায়সবাল হাসপাতাল ভেন্টিলেশনের শেষ পর্যায়ে গেলেও সেটি বাঁচিয়ে তোলাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy