ভাগে নেওয়া এক বিঘা জমিতে ধান আর আলু চাষ করে খানাকুলের ভূমিহীন কৃষক প্রতাপ বেরা। বুধবার থেকে নতিবপুর গ্রামে মুখেমুখে ফিরছে তাঁর নাম। খানাকুলের নতিবপুর ভূদেব বিদ্যালয়ের ছাত্র তাঁর ছেলে প্রদীপ মাধ্যমিকে ৬৫৪ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। গর্বের ছেলেকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ চড়েছে গ্রামে। তাতে চিন্তা বেড়েছে প্রতাপের। এ বার ছেলেকে উচ্চমাধ্যমিক পড়াবেন কী করে? কোথা থেকে আসবে টাকা? প্রশ্ন তাড়া করছে প্রতাপকে।
ভাগচাষের পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন প্রতাপ। চার জনের পরিবারে তিনি-ই একমাত্র রোজগেরে। নিজেকে নিয়ে কোনও স্বপ্ন দেখেননি তিনি। প্রতাপ বলেন, ‘‘যত কষ্টই হোক, ছেলেকে পড়াতে চাই। প্রয়োজনে আরও বেশি করে খাটব। সরকারি সাহায্যের জন্য দরবার করব। গ্রামবাসী ও ছেলের স্কুলে শিক্ষকেরা সকলে পাশে আছেন।”
ছেলের পড়াশোনা নিয়ে আশঙ্কায় মা চম্পাদেবীও। জানতে চাইছেন, ‘‘ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য সত্যিই কি কেউ এগিয়ে আসবেন।”
প্রদীপের প্রতিবেশী অষ্টপদ সামন্ত বলেছেন, “সংসারে চরম অভাব-অনটনের মধ্যেও প্রদীপের এই সাফল্য আমাদের মতো দুঃস্থ পরিবারগুলির পড়ুয়াদের কাছে দৃষ্টান্ত। তার সাফল্য ছেলেদের উদ্বুদ্ধ করছে। প্রদীপের পাশে দাঁড়াতে আবেদন করব সকলের কাছে।”
বিজ্ঞান নিয়েই পড়তে চায় প্রদীপ। বলে, “আমাদের স্কুলেই সায়েন্সে ভর্তি হব। স্বপ্ন দেখতে ভয় পাই। দাদা আর আমাকে পড়াতে বাবা কী রকম পরিশ্রম করছেন, কত ঝুঁকির কাজ করছেন, তা দেখছি।”
নিজের এক ছটাক জমিও নেই প্রতাপবাবুর। এক বিঘা জমি ভাগে নিয়ে ধান আর আলু চাষ করেন। ধান চাষ করে সারা বছরের চালের প্রয়োজন মেটে। আলু বিক্রি করে কিছু টাকা ঘরে আসে।
নতিবপুর ভূদেব বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ মানস সামন্ত বলেন, “পঞ্চম শ্রেণি থেকেই ভাল রেজাল্ট করে প্রদীপ। অত্যন্ত গরিব পরিবারের ওই ছাত্র বিনয়ী, ভদ্র এবং শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা স্কুল শিক্ষকেরা ওর পাশে আছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস অনেক মানুষ ওকে সাহায্য করবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy