পরিদর্শনে কৃষিমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
রাতের অন্ধকারে কখনও ভাঙা পড়ছে পাঁচিল। কখনও ভাঙা পড়ছে রাস্তার আলোক-স্তম্ভ। চুরি হয়ে যাচ্ছে আলো।
নিরাপত্তা নিয়ে সব সময়েই আতঙ্কে থাকেন চুঁচুড়ার ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের কর্মীরা। কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ খেত যে রাতে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে এ কথা তাঁরা সকলেই স্বীকার করেন। বুধবার সেই কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার আশ্বাস দিয়ে গেলেন কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। কৃষিমন্ত্রী বলেন, “ধান উত্পাদনে পশ্চিমবঙ্গ দেশে প্রথম। গবেষণার মাধ্যমে এখানে নতুন প্রজাতির ধান উত্পাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে কৃষকদের আয় বাড়ানোই প্রধান লক্ষ্য। এই কেন্দ্রের কর্তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে সাজানোর নির্দিষ্ট প্রস্তাব আমাদের কাছে পাঠালে দ্রুত তা বিবেচনা করা হবে। সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ বজায় রাখার জন্যই নিরাপত্তা পরিকাঠামো সাজাতে হবে।”
কেন্দ্রের যুগ্ম অধিকর্তা মাধবচন্দ্র ধাড়া জানান, পুলিশি নিরাপত্তা, রাস্তা তৈরি, বিদ্যুদয়ন এ সব নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। মন্ত্রী তা দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
২৩০ একর জমিতে কেন্দ্রটি চালু হয় ১৯০৩ সালে। কয়েকটি প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষানবীশ চাষিদের আবাসন ছাড়া কেন্দ্রের বাকি অংশ পুরোটাই খোলা খেত। নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছেন ১০ জন। কিন্তু তাঁরা মূলত প্রশাসনিক ভবন পাহারার কাজই করেন। কেন্দ্রটি পুরোটাই পাঁচিলে ঘেরা হলেও অনেক জায়গাতেই তা ভাঙা। উপযুক্ত রক্ষনাবেক্ষণ এবং নজরদারির অভাব স্পষ্ট গোটা কেন্দ্র জুড়ে। রাস্তার আলো বলতে কিছুই নেই। আলোক-স্তম্ভগুলির গোড়া থেকে কেটে উধাও করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এক সময় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব বন্ধের জন্য কেন্দ্রের ভিতরে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছিল। এখন আর সেখানে পুলিশ থাকে না। ক্যাম্পের দরজা থেকে আলোসবই চুরি হয়ে গিয়েছে। রয়েছে শুধু জঙ্গলবেষ্টিত ঘরটি। বিভিন্ন সময়ে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ট হয়ে কেন্দ্রের কর্মীরা তা বন্ধের আবেদনও জানিয়েছেন প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে।
প্রথম বার এই কেন্দ্রে এসে কৃষিমন্ত্রী সকলের সঙ্গে আলোচনা করেন। রাতের অন্ধকারে সমাজবিরোধীদের অবাধ বিচরণ বন্ধের আশ্বাস দেন। কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, জেলা সভাধিপতি মেহেবুব রহমান প্রমুখ। গবেষকেরা তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে উত্পাদিত ধানের নমুনা দেখান পূর্ণেন্দুবাবুদের। তা স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা ভাল এবং চাষিরা এই ধান চাষ করে কতটা লাভবান হবেন সে সম্পর্কে অবহিত করেন। বেচারামবাবু বলেন, ‘‘সব ত্রুটি-বিচ্যুতি সমাধান করে এই গবেষণা কেন্দ্রকে আরও উন্নত মানের গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’’ মন্ত্রীদের আশ্বাসে আশার আলো দেখছেন ওই কেন্দ্রের কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy