Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Former Panchayat leader Arrested

‘আক্রান্ত’ পুলিশ, গ্রেফতার নেতা

গ্রামের মানুষ এবং তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, পুলিশই নির্বিচারে লাঠিপেটা করে, গ্রামবাসীদের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৬
Share: Save:

পুলিশের এক গাড়িচালকের নির্মীয়মাণ বাড়িতে প্রায়ই মদের আসরের জন্য এলাকার পরিবেশ খারাপ হচ্ছে, এই অভিযোগে সোমবার রাতে ওই ঘরে তালা দিয়ে দিয়েছিলেন হাওড়ার রাজাপুরের জগদীশপুর গ্রামের কিছু বাসিন্দা। সেই ঘটনাকে ঘিরে তুলকালাম হল। পুলিশ বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। পক্ষান্তরে, মদের আসরের প্রতিবাদের নামে পুলিশকর্মীদের খুনের চেষ্টা, হুমকি, সরকারি কাজে বাধা-সহ নানা অভিযোগে তৃণমূলের প্রাক্তন এক পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আরও জনা পনেরো লোকের নামে ওই অভিযোগ পুলিশ দায়ের করেছে। ধৃত অরুণ মালিককে মঙ্গলবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে উলুবেড়িয়া আদালত।

গ্রামের মানুষ এবং তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, পুলিশই নির্বিচারে লাঠিপেটা করে, গ্রামবাসীদের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে। হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপেরও জবাব দেননি। অন্য এক পুলিশকর্তা জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজনের দাবি, সোমবার, বড়দিনের রাতেও ওই নির্মীয়মাণ বাড়িতে মদের আসর বসেছিল। পুলিশের ওই গাড়িচালক বাদেও এক কনস্টেবল, দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন। তারস্বরে গান চালিয়ে নাচানাচি, চিৎকার-চেঁচামেচি চলছিল। প্রতিবাদে রাত ১০টা নাগাদ ওই ঘরে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশের দু’টি মোটরবাইক জলে ফেলে দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে রাজাপুর থানার বাহিনী আসে। এলাকাবাসীর একাংশের বক্তব্য, ওই বাড়িতে মদের আসরের জন্য এলাকার পরিবেশ খারাপ হচ্ছে বলে পুলিশকে বার বার বলা হলেও কর্ণপাত করা হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, এ দিন পুলিশকে সে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা না-শুনেই লাঠিপেটা করে লোকজনকে সরিয়ে আটক সহকর্মী এবং অন্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তখনকার মতো বিষয়টি থেমে গেলেও পুলিশ গভীর রাতে ফের গ্রামে এসে বাড়ি বাড়ি ঢুকে বেধড়ক মারধর করে। অরুণকে গ্রেফতার করা হয়।

এক পুলিশ আধিকারিকের পাল্টা অভিযোগ, দু’-একজন পুলিশকর্মী নিমন্ত্রণ রক্ষার্থে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। গ্রামবাসীরা পুলিশের উপরে হামলা চালায়। মারধর, খুনের চেষ্টা করা হয়। পুলিশের বাইক ভাঙচুর করা হয়। মোট ১৪টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এমন ব্যাখ্যা উড়িয়ে সুপর্ণা দলুই, শ্রাবন্তী দলুই প্রমুখ গ্রামবাসীর দাবি, বহু আন্দোলন করে গ্রামে মদের সমস্ত ঠেক বন্ধ করা হয়েছে। এখন পুলিশই আসর বসালে আগের পরিবেশ ফিরে আসতে পারে। তাই প্রতিবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালায়। এলাবাসীর একাংশের প্রশ্ন, পুজোর সময় শব্দদূষণের কথা বলে যেখানে পুলিশ মাইক-বক্স বন্ধ করে, সেখানে তারাই জোরে গান বাজিয়ে মদ্যপ অবস্থায় নাচানাচি, গালিগালাজ কেন করবে?

বলাই মালিক নামে এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘গোলমাল দেখে বাইরে বেরিয়েছিলাম। পুলিশ কোনও কথা না শুনেই মারল।’’ এক মহিলার কথায়, ‘‘পুলিশ অন্ধকারের মধ্যে এলোপাথাড়ি মারধর করেছে। ভয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিই।’’ এলাকার তৃণমূল নেতা তথা উলুবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অরুণ দলুইয়ের দাবি, বিক্ষোভ থেকে বাঁচতে পালাতে গিয়ে পুলিশকর্মী বাইক নিয়ে জলে পড়ে যান। নিজেদের দোষ ঢাকতে পুলিশ মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে। খুনের চেষ্টার মতো গুরুতর ধারায় মামলা রুজু করা নিয়েও পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রামে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Rajapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy