ভারতের জাতীয় সঙ্গীত কী? দেশের জাতীয় ফলের নাম জানিস? বল দেখি, জাতীয় পাখি কী?
কলেজ ক্যান্টিনে সিনিয়র ‘দাদা’দের র্যাগিংয়ের মতো শোনালেও এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হল যে যুবককে, তিনি তখন নৈহাটি স্টেশনের ওভারব্রিজে দাঁড়িয়ে। তাঁকে জিআরপি থানায় নিয়ে গিয়ে এমন প্রশ্ন করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি বাংলাদেশি কি না, তা জানতেই হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নদিয়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর দাবি, প্রশ্নকর্তা সাদা পোশাকে থাকলেও নিজেকে জিআরপি কর্মী বলে পরিচয় দেন।
বুধবারের এই ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। নিন্দায় সরব হয়েছে নেটিজেনরা। প্রতিবাদে নেমেছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। নৈহাটি জিআরপি-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। নৈহাটি জিআরপি থানার ওসি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে তাঁর মতে, পুলিশ সাধারণত এমন প্রশ্ন করে না। তাই এই ঘটনায় পুলিশ কর্মীর যুক্ত না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ওই ব্যক্তি জিআরপি কর্মী না হলে সৌরভকে থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করল কী ভাবে।
কী ঘটেছিল বুধবার?
সৌরভের বাড়ি ধুবুলিয়ায়। তিনি জানালেন, বারাসতের এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়েছিলেন। সেই সূত্রেই নৈহাটি স্টেশনে নেমে সোদপুরের টিকিট কাটছিলেন।
সৌরভের কথায়, ‘‘ওভারব্রিজ দিয়ে টিকিট কাউন্টারের দিকে যাচ্ছিলাম। পিছন থেকে এক জন ডাক দিয়ে দাঁড়াতে বলে। আচমকাই শুরু হয় হম্বিতম্বি, প্রশ্নবাণ।’’ সৌরভের অভিযোগ, নিজেকে জিআরপি থানার কনস্টেবল পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি তাঁকে শুরু থেকেই বাংলাদেশি ধরে নিয়ে গালিগালাজ শুরু করে। নিজের প্যান কার্ড, রেশন কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবই, আধার কার্ডের ছবি-সহ একাধিক প্রমাণপত্র ছিল সৌরভের কাছে। সে সব দেখিয়েও নিস্তার মেলেনি। তাঁর ফোনের মেসেজ, ব্যাগ, মানিব্যাগ ঘাঁটতে শুরু করে ওই ব্যক্তি।
এখানেই শেষ নয়। সৌরভের অভিযোগ, তাঁকে জিআরপি থানায় নিয়ে গিয়ে ফের শুরু হয় মানসিক অত্যাচার। তাঁর মানিব্যাগে বাংলাদেশের দু’টি নোট ছিল। তা রাখা বেআইনি বলে ধমক দিতে থাকে ওই ব্যক্তি। সৌরভ তাঁকে জানান, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা সংগ্রহের শখ আছে তাঁর। কিন্তু সেই জবাব সন্তুষ্ট করতে পারেনি প্রশ্নকর্তাকে। সৌরভের বন্ধুর বাবা পুলিশকর্মী। অভিযোগ, তাঁর কাছে ফোন করে পরিচয় যাচাই করে নেওয়ার কথা বললে ফের উড়ে আসে একচোট গালাগাল। সৌরভ বাংলাদেশি, এ কথা স্বীকার করিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয় বলেও তাঁর অভিযোগ।
ঘণ্টা দেড়েক পরে তাঁকে ছাড়া হয়। এর পরেই সৌরভের বন্ধুরা বিষয়টি নিয়ে সরব হন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy