রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কী রিপোর্ট দিয়ে এলেন, তা প্রকাশ্যে জানাতে নারাজ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের গণনা শুরু হতে না হতেই দিল্লি থেকে ফিরে সোজা চলে গিয়েছিলেন ভাঙড়ে। সেখান থেকে ফিরে রাজভবনে তাঁর ডাকা আর সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া রিপোর্ট প্রসঙ্গে প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। প্রশ্ন করা হয়, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কী রিপোর্ট দিয়েছেন তিনি? উত্তরে তিনি স্পষ্টই জানান, বিষয়টি তিনি প্রকাশ্যে আনবেন না।
৮ জুলাই রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে নানা জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। ওই দিন একাধিক সন্ত্রাসের ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছিল ১৫ জনের। তার পরেই রাজ্যপাল সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে শাহের বাসভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক হয়। সেই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল চরমে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। যদিও ওই দুই সাক্ষাতের পরে দিল্লিতে মুখ খোলেননি তিনি। কিন্তু মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে বোস বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার সাংবিধানিক সহকর্মী। তাই তার সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে, আমি তা প্রকাশ্যে আনব না।’’ সেই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন সাংবিধানিক পদে থেকে অনেক কথাই প্রকাশ্যে আনা যায় না।
বাংলা রাজনীতির কারবারিদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে যে ভাবে লাগাতার হিংসা হচ্ছে সেই বিষয় নিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই রিপোর্টে ঠিক কী কী বিষয় উল্লেখ করেছেন তিনি, তা তিনি প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না। পঞ্চায়েত ভোটে বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ক্যানিং, ভাঙড়, কোচবিহার-সহ একাধিক জেলায় গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এমনকি, সন্ত্রাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য রাজভবনেই ‘শান্তি কক্ষ’ তৈরি করেছিলেন তিনি। সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে ‘শান্তি ও সংহতি কমিটি’ও গড়েছিলেন। এই বিষয়টিকে যদিও ভাল চোখে দেখেনি শাসকদল তৃণমূল।
ভোটের গণনা চলাকালীন রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘ভোটের ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে। এখন কোনও রাজনৈতিক রং না দেখে সকলের সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করা উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গণতন্ত্রে সন্ত্রাসের কোনও জায়গা নেই। তাই যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে শান্তি ফেরানোই আমাদের সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত।’’ গণনার দিনও রাজ্যপালের এমন ‘অতি সক্রিয়তা’কে কটাক্ষই করেছে তৃণমূল। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজ্যসভার চেয়ারম্যান পদ খালি হতে এখনও চার বছর দেরি রয়েছে। তাই এখনই এত সক্রিয়তার কোনও প্রয়োজন ছিল না রাজ্যপালের।’’ পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় যত দিন দায়িত্বে ছিলেন তত দিনে শাসক দলের সঙ্গে সংঘাতের পরিবেশ ছিল। রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের একাধিক ইস্যুতে দ্বন্দ্ব হয়েছে। ধনখড় দেশের উপরাষ্ট্রপতি হয়েছেন। তাই অরূপের কটাক্ষ, উপরাষ্ট্রপতি পদ খালি হতে এখনও চার বছর বাকি রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy