রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে ‘সন্ত্রাস’ ঠেকাতে তিনি ‘গ্রাউন্ড জ়িরো গর্ভনর’ হতে চান বলে দাবি করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়িতে বিজেপির নেতৃত্বে পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং তাদের সহযোগী তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। তার পরে, রাজ্যপালের ওই ঘোষণা। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘ভোটকে ঘিরে ভয়-ভীতি, খুন-জখমের রাজনীতি চলতে পারে না। এই অবস্থাকে যেতেই হবে। এটা যাবেই। সংবিধান, গণতন্ত্র, মানুষের জন্য এটা চ্যালেঞ্জ। এ ভাবে চলতে পারে না। যাঁদের গণতন্ত্রের পাহারাদার হওয়ার কথা, তাঁদের হাতে যেন গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা না বাজে।’’ যদিও তাঁর এই বক্তব্যের পিছনের কারণ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
পঞ্চায়েত ভোট-পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যপাল এ দিন বলেন, ‘‘রিপোর্ট যা আসছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের ও চিন্তার। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ব্যবস্থা মেনে কাজের নির্দেশ দিয়েছি। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি দেখতে চাই। আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে নিজের মতো করে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে চাই। নির্বাচনী সন্ত্রাসের প্রেক্ষিতে আমি গ্রাউন্ড জ়িরো গর্ভনর হতে চাই।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘উনি বিজেপির দলদাসের মতো আচরণ করছেন। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বিরোধীদের অক্সিজেন দিচ্ছেন।’’ পক্ষান্তরে, রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের পুরোটাই জ়িরো (শূন্য)। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, পুরোটা একই চিত্র। তৃণমূলের বধ্যভূমিতে রাজ্যপাল মানুষের কথা শুনতে চান।’’ আবার বাঁকুড়ার ছাতনায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপালের কাজ কোনও ঘটনা ঘটলে সেখানে ছুটে যাওয়া নয়। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। এই সব বক্তৃতা করে লাভ কী?’’
রাজ্যপাল দাবি করেন, হাই কোর্ট পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণে যা বলেছে, তাতে ‘পরিস্থিতি’ বোঝা গিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশ যাতে পালন হয়, তা দেখা এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করতে রাজ্যপাল হিসেবে আমি বাধ্য এবং বদ্ধপরিকর।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই পরিবেশ বদলাতে হবে। যাতে প্রত্যেক মানুষ অবাধে ও শান্তিতে নিজের ভোট দিতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।’’
পাহাড়ের ‘মহাজোটের’ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে, রাজ্যপাল কালিম্পঙের ডেলোতে যান। সেখানে আট মাইল এলাকার একটি অনাথ আশ্রম ঘুরে দেখে বলেন, ‘‘আমি শান্তি, সম্প্রীতি রক্ষার যে অভিযানে নেমেছি, তাতে শিশুরা শান্তির রক্ষাকারী প্রতীক হবে।’’
তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র, কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের মন্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল তৃণমূলের উপরে সন্ত্রাস দেখতে পান না।’’ বাম নেতা সুজন বলেন, ‘‘রাজ্যপাল বোসের হাতে রাজভবন সুরক্ষিত কি না, প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। নবান্নের হাতে মানুষের নিরাপত্তা সুরক্ষিত কি না, সে প্রশ্নও আছে। তা হলে মানুষ করবেন কী?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy