Advertisement
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পারিবারিক বিবাদ ঘিরে গুলি, জখম ৭

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় হাজরা পরিবারের কয়েক বিঘা পৈতৃক জমি রয়েছে। ভাই-বোন মিলিয়ে ওই জমির শরিক দশ জন। অভিযোগ, আদিত্য নামে এক ভাই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তাঁর ভাগের সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।

জখম শুভময় হাজরা। এসএসকেএমে। নিজস্ব চিত্র

জখম শুভময় হাজরা। এসএসকেএমে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১৪
Share: Save:

পারিবারিক সম্পত্তির দখলদারিকে কেন্দ্র করে বচসা। তার জেরে গুলিবিদ্ধ হলেন এক মহিলা-সহ সাত জন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুর থানার নেপালগঞ্জের রাঘবপুর এলাকায়। জখম লোকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই ঘটনায় পরিবারেরই এক সদস্যকে গ্রেফতার করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় হাজরা পরিবারের কয়েক বিঘা পৈতৃক জমি রয়েছে। ভাই-বোন মিলিয়ে ওই জমির শরিক দশ জন। অভিযোগ, আদিত্য নামে এক ভাই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তাঁর ভাগের সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তার জেরে মাঝে মধ্যেই আদিত্যের ছেলে মৃন্ময়ের সঙ্গে তাঁর কয়েক জন কাকা ও খুড়তুতো ভাইদের ঝগড়া-মারামারি লেগেই থাকত। আগেও দুই পরিবারের মধ্যে বেশ কয়েক বার সংঘর্ষ হয়েছে।

অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যায় মৃন্ময় মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তাঁর কয়েক জন খুড়তুতো ভাই ও এক কাকা তাঁকে মারধর করেন।

মৃন্ময়ের এক কাকিমাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সন্ধ্যায় এলাকার লোকজন দু’পক্ষের ঝামেলা মিটিয়ে দেন। মৃন্ময় ও তাঁর খুড়তোতো ভাইয়েরা বাড়িতে ফিরে যান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে দলবল নিয়ে কাকার বাড়িতে চড়াও হন মৃন্ময়। ওই সময়ে তাঁর দুই কাকা রথীন ও শশাঙ্ক এবং তাঁদের পরিবারের লোকজন রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। আচমকা হামলা চালান মৃন্ময় ও তাঁর দলবল। রথীনের স্ত্রী শিখাকে মৃন্ময় মারধর করেন বলে অভিযোগ। পাল্টা মৃন্ময়ের উপরে চড়াও হন তাঁর খুড়তুতো ভাইয়েরা। এর পরেই মৃন্ময়ের বাহিনী এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন রথীন ও শশাঙ্ক। রথীনের স্ত্রী শিখা, ছেলে তন্ময়ও গুলিতে জখম হন। শশাঙ্কের ছেলে মৃগাঙ্ক, শুভময় ও সুকোমলেরও গুলি লাগে। পরে মৃন্ময়ের ভাই মলয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। জখমদের প্রথমে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তন্ময়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তন্ময়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। গুলি তাঁর গলা ফুটো করে বেরিয়ে গিয়েছে। তবে বাকি জখমদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ঘটনার পর থেকে মৃন্ময় ফেরার বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃন্ময়ের বাবা আদিত্য বলেন, ‘‘আমি আমার ভাগের অংশটি দাবি করেছি। সেই কারণে আমায় বহু বার মারধর করা হয়েছে। ২০১৩ সালে আমায় রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। ওই ঘটনার জেরে এখনও আদালতে মামলা চলছে। শুধু আমায় নয়। আমার ছেলেদেরও নানা সময়ে মারধর করা হয়েছে। আমি সব ক্ষেত্রেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি। ভাই ও ভাইপোদের অত্যাচারে আমি দু’বার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছি। এখন হাঁটাচলা প্রায় করতেই পারি না।’’

ওই গুলি চালানোর ঘটনায় মৃন্ময় ও তাঁর ভাই মলয় জড়িত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ, ওই রাতে আদিত্যের জামাই সাগরও মৃন্ময়ের সঙ্গে ছিল। ঘটনার পর থেকে মৃন্ময় ও সাগর দু’জনেই এলাকা ছাড়া বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। মৃন্ময় ও সাগরের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের এক কর্তা।

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Injury Firing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy