কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বৈভব শাণ্ডিল্যের মা।
শনিবার সকালে বন্ধুর বাড়ি যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন অভিজাত পরিবারের তরুণ। রবিবার মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর ও দুই বন্ধুর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে স্তব্ধ বেলেঘাটার ‘নস্করভিলা’। তিন তরুণ যে মন্দারমণি যাচ্ছেন তা-ই জানতেন না তাঁদের বাড়ির লোক।
বেলেঘাটায় সাবেক জমিদার নস্কর পরিবারের নাম বিশেষ পরিচিত। কংগ্রেসি জমানায় রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছিলেন পরিবারের দুই সদস্য হেমচন্দ্র ও অর্ধেন্দুশেখর। সেই পরিবারেরই শুভেন্দুশেখরের ছেলে বছর একুশের শিবরাজ। ব্রিটেনে অ্যাকাউন্ট্যান্সি নিয়ে পড়তেন। ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। পারিবারিক সূত্রে খবর, শুভেন্দুবাবুর বড় ছেলেও ব্রিটেনে পড়াশোনা করেন।
পরিবারের এক সদস্য জানান, শনিবার সকালে রাজারহাট নিউ টাউনে বন্ধুর বাড়ি যাবেন বলে শিবরাজ গাড়ি নিয়ে বেরোন। বন্ধু বৈভব শাণ্ডিল্যের বাড়িতে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি ফিরে আসে। এখন জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে বৈভবের গাড়িতে মন্দারমণি রওনা হন শিবরাজ ও তাঁদের আর এক বন্ধু সন্তোষপুরের বাসিন্দা সুরজ দাশগুপ্ত।
রবিবার দুর্ঘটনার খবর পেয়েই সস্ত্রীক কাঁথির দিকে রওনা হয়েছেন শুভেন্দুশেখর। শিবরাজের মৃতদেহ দ্রুত ফিরে পেতে বার বার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁর জ্যাঠা অশোক নস্করকে।
খবর পেয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে পৌঁছে যান মৃত অন্য দুই তরুণের পরিজনও। রাজারহাটের বাসিন্দা বৈভব শাণ্ডিল্যের পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে কলকাতার সেক্টর ফাইভে। তাঁর বাবা নলিনী সিংহ অসুস্থ। কথা বলতে পারেন না। এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আত্মীয়রা রাজারহাটের বাড়িতে যান। পরে বৈভবের মা ও আর এক আত্মীয়াকে নিয়ে তাঁর কাকা প্রবীণ সিংহ মন্দারমণিতে যান। মন্দারমণি উপকূল থানায় বসে প্রবীণ জানান, বৈভব এমবিএ পড়ছিলেন। পারিবারিক ব্যবসার গাড়ি নিয়েই তিনি মন্দারমণি এসেছিলেন। এই সময়ে থানার বাইরে গাড়িতে বসে একটানা কেঁদে গিয়েছেন বৈভবের মা। সুরজ দাশগুপ্তের বাবা রবীন দাশগুপ্ত আসেন কাঁথি হাসপাতালে। সেখানেই শোয়ানো ছিল সুরজের দেহ। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি রবীনবাবু। শুধু জানিয়েছেন, সুরজও ব্রিটেনের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্ট্যান্সি নিয়ে পড়তেন। তিন মাসের ছুটি নিয়ে দেশে এসেছিলেন। ২০ সেপ্টেম্বর ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
তুবড়ে যাওয়া সেই বিএমডব্লিউ।
মন্দারমণি যাওয়ার পরিকল্পনার কথা যে তাঁরা জানতেন না তা মেনে নিয়েছেন শিবরাজ ও বৈভবের পরিবারের সদস্যরা। বৈভবের কাকা প্রবীণ সিংহের কথায়, ‘‘ওরা এখানে আসবে, আমরা কেউই জানতাম না। জানলে ওদের এ ভাবে ছেড়ে দিতাম না।’’
মন্দারমণিতে সোহম গুহের তোলা ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy