শিক্ষক সংগঠন জুটা-র বারণ ছিল। তা সত্ত্বেও সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন সংক্রান্ত বৈঠকে হাজির হলেন বহু বিভাগীয় প্রধান। পরে তাঁদের অনেকেই জানান, উপাচার্য কোনও বৈঠকে ডাকলে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে উপস্থিত থাকতে তাঁরা বাধ্য। যে-সব বিভাগীয় প্রধান এ দিন অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁরাও জানিয়ে দেন, বিভাগের অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে যেতে পারেননি।
যাদবপুরে সমাবর্তন ২৪ ডিসেম্বর। তা নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিন বৈঠক ডাকেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে সাধারণ সভার বৈঠকের পরে জুটা-র সাধারণ সম্পাদিকা নীলাঞ্জনা গুপ্ত জানিয়েছিলেন, সোমবারের বৈঠকে বিভাগীয় প্রধানেরা যাতে উপস্থিত না-থাকেন, সেই জন্য তাঁদের অনুরোধ জানানো হবে।
উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবিতে জুটা তাঁর সঙ্গে প্রশাসনিক অসহযোগিতার যে-পথ ধরেছে, ওই বৈঠকে না-যাওয়াটাকে তারই অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন সংগঠনের নেতারা। যদিও পেশাগত দায়বদ্ধতা থেকে বিভাগীয় প্রধানদের পক্ষে উপাচার্যের ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। এ দিনের বৈঠকের পরে এক কর্তা বলেন, “উপাচার্যকে একেবারে বয়কট করে চলা যে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পক্ষে সম্ভব হবে না, সেটাই সোমবারের বৈঠকে প্রমাণিত হয়ে গেল। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে উপাচার্যের কথা মানতে শিক্ষকেরা বাধ্য।”
নীলাঞ্জনাদেবী এ দিন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮টি বিভাগ এবং ২১টি স্কুল অব স্টাডিজের মধ্যে মাত্র ১৯ জন প্রধান উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে তিনি বলেন, “উপস্থিত বিভাগীয় প্রধানদের অনেকেই জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত ভাবে জুটা-র অবস্থানকে সমর্থন করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবিধি অনুযায়ী তাঁদের পক্ষে ওই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা সম্ভব নয়।”
ইংরেজির বিভাগীয় প্রধান শান্তনু বিশ্বাসের বক্তব্যেও নীলাঞ্জনাদেবীর কথারই প্রতিফলন। শান্তনুবাবু বলেন, “বিভাগীয় প্রধান হিসেবে আমি উপাচার্যের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বাধ্য। তাই ব্যক্তিগত ভাবে জুটা-র অবস্থানকে সমর্থন করলেও বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা সম্ভব নয়।” মেটালার্জির বিভাগীয় প্রধান প্রভাস মাজি জানান, ওই পদের দায়িত্ব পালনের জন্যই তিনি বৈঠকে ছিলেন।
ঘেরাওকারী ছাত্রছাত্রীদের হটাতে পুলিশি তাণ্ডবের পরে আন্দোলনের জেরে যাদবপুরের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ উপাচার্যের ইস্তফার দাবিতে অনড়। এই নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা গণভোটে নেমেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গোলমালের আবহে সমাবর্তন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে কে সমাবর্তনে উপস্থিত থাকবেন, তা এখনও ঠিক করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। সাম্মানিক ডিলিট প্রাপকদেরও কেউ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে এখনও জানাননি। সাম্মানিক ডিলিট প্রাপকদের মধ্যে আছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী এবং অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধন। সৌরভ এবং অম্বানী না-এলে তাঁদের জায়গায় যথাক্রমে ফুটবলার তথা এ বারের লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া এবং শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েনকাকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। আর প্রণববাবু আসবেন কি না, জানার চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy