(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
রাহুল গান্ধী-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত বৈঠক নিয়ে বঙ্গ রাজনীতি যখন আন্দোলিত, তখন অভিষেককে নিশানা করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধীকে একই বন্ধনীতে ফেলে আক্রমণ শানালেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবার বৃষ্টিভেজা ধর্মতলার সভা থেকে সেলিম বলেছেন, ‘‘কোনও রাহুল, কোনও মোদী অভিষেককে বাঁচাতে পারবে না!’’ সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘এক মাসের মধ্যে যদি ইডি, সিবিআই অভিষেককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে, তা হলে সিজিও কমপ্লেক্স ঘেরাও করা হবে!’’
‘তাৎপর্যপূর্ণ’ হল, মুম্বইয়ে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবারই। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক, রাহুলের সঙ্গে থাকছেন সেলিমের দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। ঘটনাচক্রে, সেলিম যখন বৃহস্পতিবার বিকালে ধর্মতলার সভা থেকে রাহুল-অভিষেককে আক্রমণ শানাচ্ছেন, তখন প্রায় সেই একই সময়ে মুম্বই পৌঁছেছেন সীতারাম। বিমানবন্দরে নামার পর মরাঠা সংস্কৃতি মেনে তাঁর ললাটে লাল টিকা পরিয়ে দেওয়া হয়। সেই তিলক-লাঞ্ছিত কপাল নিয়েই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে যোগ দেন।
রাহুল-অভিষেকের একান্ত বৈঠক নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বাংলার রাজনীতিতে অনেকে বলছেন, লোকসভা ভোটে রাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্ভাব্য বোঝাপড়া নিয়ে দুই নেতার কথা হয়ে থাকতে পারে। লোকসভা ভোটে আসন ভাগাভাগি একটা বড় বিষয়। তা নিয়েও দুই নেতার আলোচনা হয়ে থাকতে পারে, এমন অনুমান করে বাংলায় অধীর চৌধুরীর ‘ঘনিষ্ঠ’ কংগ্রেস নেতারা (যাঁরা তীব্র তৃণমূল বিরোধী) খানিকটা বিমর্ষই হয়ে পড়েছেন। অনেকের মতে, সেলিমও সেই সব আন্দাজ করেই সরাসরি রাহুলকে নিশানা করে থাকতে পারেন।
সেলিম যে ভাবে বলেছেন, অভিষেক ‘বাঁচার জন্য’ রাহুলের কাছে গিয়েছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। একটি প্রশ্ন যেমন বলছে, রাহুলের নিজেরই সাংসদ পদ চলে গিয়েছিল। আদালতে ছোটাছুটি করে তা ফেরত পেয়েছেন কংগ্রেস নেতা। তিনি কী ভাবে অভিষেককে ‘বাঁচাতে’ পারেন! যাঁরা এই প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের মধ্যে সেলিমের ওই আক্রমণ খানিকটা ‘অপরিণত রাজনীতি’র পরিচয় দিয়েছে। তবে সিপিএমের অনেকে আবার বলছেন, রাহুলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সেলিম আসলে ইয়েচুরিকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন। একে রাহুলের সঙ্গে ইয়েচুরির বন্ধুত্ব সুবিদিত। তার উপর মমতার সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে ইয়েচুরির উপস্থিতি নিয়ে রাজ্যের সিপিএম নেতাদের নিচুতলার তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। সিপিএমের ওই অংশের মতে, সেই বিষয়টি ভেবেই রাহুল, অভিষেক, মোদীকে একযোগে আক্রমণ শানিয়ে থাকতে পারেন সেলিম।
আবার অনেকে বলছেন, সেলিম ‘মরিয়া’ হয়ে ওই আক্রমণ করেছেন। কারণ, ওই মন্তব্য না-করলে রাজ্যে তাঁর এবং তাঁর দলের ‘রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা’ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, তাঁরা বরাবরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে এবং অভিষেকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এসেছেন। সেই পরিস্থিতিতে ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম নেতা রাহুল যদি অভিষেকের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসে পড়েন, তা হলে ঘটনাটি সিপিএমের পক্ষে খুব ‘স্বস্তিকর’ হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy