বেরিয়ে গেলেন মানস ভুঁইয়া। রয়ে গেলেন আব্দুল মান্নান!
সবে শেষ হয়েছে মতামত নেওয়া। একে একে বিধায়কেরা বেরিয়ে যাচ্ছেন বিধান ভবন থেকে। মানসবাবুও নিজের ভোট দিয়ে বিধান ভবনের চার তলা থেকে নেমে বেরিয়ে গেলেন। কিন্তু প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ জনাকয়েক বিধায়ক ও নেতা পরিবিষ্ট হয়ে তখনও আলোচনায় মশগুল মান্নান!
বিরোধী দলনেতা বাছাইয়ে এই দুই বর্ষীয়ান বিধায়ককে নিয়েই এ বার চলছে টানাপড়েন। কংগ্রেসের বিধায়কেরা কাকে চান, তা জানতে শুক্রবার দিল্লি থেকে এসেছিলেন সি পি জোশী, অম্বিকা সোনি এবং অবিনাশ পাণ্ডে।
কংগ্রেসের ৪৪ জন বিধায়কের মধ্যে এ দিন উপস্থিত ছিলেন ৩৯ জন। প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ভাবে প্রদেশ সভাপতির ঘরে ডেকে গোপন ব্যালটে তাঁদের পছন্দের নাম জানাতে বলেন এআইসিসি-র তিন সদস্য। বিধানসভা কেন্দ্র এবং বিধায়কের নাম লেখা ছাপানো কাগজে প্রত্যেক বিধায়ককে লিখতে বলা হয়েছিল, পরিষদীয় দলনেতা হিসেবে পছন্দের নাম। অনুপস্থিত পাঁচ বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, প্রমথনাথ রায়, অরিন্দম ভট্টাচার্য, মইনুল হক এবং ঈশা খান চৌধুরীর মতামতও জেনে নেওয়া হবে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। বিধায়কদের খামবন্দি এই গোপন মতামত খতিয়ে দেখে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী বিরোধী দলনেতার নাম চূড়ান্ত করবেন। প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা জানাচ্ছেন, ১৯৯৬ সালে শেষ বার অতীশ সিংহ ও সৌগত রায়ের মধ্যে পরিষদীয় নেতা বাছতে বিধায়কদের মধ্যে ভোট নেওয়া হয়েছিল। জিতেছিলেন অতীশ।
গোপন ব্যালটে নিজের নিজের মত জানানোর পরে বেশির ভাগ বিধায়ককেই মান্নানের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। কথা প্রসঙ্গেই মান্নান বলছিলেন, ‘‘অনেক বিধায়কই ভোটের ফলপ্রকাশের পরে আমাকে অভিন্দন জানিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, জোট না হলে নিজেদের কেন্দ্রে জিততে পারতেন না!’’ বিধানসভা ভোটের অনেক আগেই বামেদের সঙ্গে জোটের তত্ত্বের প্রবল প্রবক্তা ছিলেন মান্নান। ভোটের বছরদুয়েক আগেই ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’ মঞ্চ গড়ে শাসকের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে বিরোধী শিবির ও ব্যক্তিদের একজোট করতে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাঁর। সেই সূত্রেই বাম নেতাদের সঙ্গেও তাঁর সমন্বয় ভাল। তার উপরে তিনি দলের সংখ্যালঘু মুখও বটে। এ সব কারণেই বড় অংশের পছন্দ চাঁপদানির বিধায়ক।
পরিষদীয় রীতিনীতিতে মানসবাবুর অভিজ্ঞতা অবশ্য তাঁকেও দৌড়ে রেখেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার আগে পরিষদীয় দলনেতার দায়িত্ব সামলেছেন। তারও আগে হয়েছিলেন বিরোধী দলের সচেতক। তবে প্রথম দিকে জোটের বিরোধিতা করে ‘একলা চলা’র পক্ষপাতী ছিলেন তিনি। হাইকম্যান্ডের মনোভাব বুঝে সুর বদলে জোটপন্থী হয়ে ওঠেন! কিন্তু দলের একাংশ মানসবাবুকে নিয়ে এখনও সংশয়ী!
দলে মান্নান-মানসের রসায়ন ভাল। তাই দু’জনের মধ্যে যিনিই দলনেতা হোন না কেন, পারস্পরিক সহযোগিতায় কোনও বাধা হবে না বলেই দলীয় নেতৃত্বের ধারণা।
বিধানসভার ভিতরে-বাইরে শাসক দলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে এ দিনই বিধায়কদের নির্দেশ দিয়েছেন অধীর। এ বার থেকে বিধান ভবনের একটি ঘর নির্দিষ্ট করা হচ্ছে পরিষদীয় দলের জন্য।
এখন অপেক্ষা শুধু হাইকম্যান্ডের তরফে দলনেতার নাম ঘোষণার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy