Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
মার শিক্ষকদের

টোকাটুকিতে বাধা, ভাঙচুর কলেজে

টোকাটুকিতে বাধা দিয়েছিলেন শিক্ষকেরা। পরিণামে, পরীক্ষা শেষে কলেজে ভাঙচুর চালায় এক দল ছাত্র। শিক্ষকদের দিকে লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে যায় তারা। ঘরে ঢুকে কোনও রকমে রক্ষা পেয়েছেন অধ্যক্ষ। শিক্ষকদের গাড়িতে লাঠির ঘা পড়েছে বলেও অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৩
Share: Save:

টোকাটুকিতে বাধা দিয়েছিলেন শিক্ষকেরা। পরিণামে, পরীক্ষা শেষে কলেজে ভাঙচুর চালায় এক দল ছাত্র। শিক্ষকদের দিকে লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে যায় তারা। ঘরে ঢুকে কোনও রকমে রক্ষা পেয়েছেন অধ্যক্ষ। শিক্ষকদের গাড়িতে লাঠির ঘা পড়েছে বলেও অভিযোগ।

শান্তিপুর কলেজে শিক্ষকের দিকে ছাত্রনেতার রিভলভার তাক করা নিয়ে যখন রাজ্য তোলপাড়, তখন বুধবার ডায়মন্ড হারবার ফকিরচাঁদ কলেজের এই ঘটনা শিক্ষাঙ্গণে নৈরাজ্যের ছবিটা ফের সামনে এনে দিয়েছে।

বা়ড়ি ফেরার পথে ট্রেনেও শিক্ষকদের উপরে হামলা চলতে পারে এই আশঙ্কায় রেলপুলিশের কাছে নিরাপত্তা চান ফকিরচাঁদ কলেজ কর্তৃপক্ষ। রেলপুলিশ হাজির ছিল ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে। ৫টা ৩৫ মিনিটের আপ ডায়মন্ড হারবার লোকালে কল্যাণপুর পর্যন্ত ট্রেনে মোতায়েন ছিল তারা।

ফকিরচাঁদ কলেজের অধ্যক্ষ গোকুলানন্দ গোস্বামী জানান, তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মগরহাট কলেজের সিট পড়েছিল ফকিরচাঁদে। ওই কলেজকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখতে এ দিনই প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলেন ফকিরচাঁদে। পুলিশ জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন রাখার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। পুলিশ থাকলেও তাঁরা সংখ্যায় ছিলেন হাতেগোনা। গোলমালের খবর দেওয়ার পরে অবশ্য পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।’’

মগরাহাট কলেজের ছেলেরা ফকিরচাঁদে পরীক্ষা দিতে এসে বছর দু’য়েক আগেও একই কাণ্ড ঘটিয়েছিল। মগরাহাট কলেজের অধ্যক্ষ আশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাত্রদের পই পই করে বলে দেওয়া হয়েছিল, পরীক্ষা দিতে গিয়ে যেন কোনও গণ্ডগোল না পাকায়। তা সত্ত্বেও এমন ঘটনা ঘটল। অভিযুক্তদের ছাত্রদের চিহ্নিত করতে পারলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

কী হয়েছিল বুধবার?

ফকিরচাঁদ কলেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ অগস্ট
থেকে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ফকিরচাঁদ কলেজে সিট পড়েছে কাকদ্বীপ, ফলতা,
শিরাকোল ও মগরাহাট কলেজের। ১৭টি রুমে চারটি কলেজের প্রায় সাড়ে ৮০০ পরীক্ষার্থী। বুধবার ছিল শেষ পরীক্ষা, ইতিহাস।

মগরাহাট কলেজের প্রায় সাড়ে চারশো ছেলেমেয়ে এসেছিল পরীক্ষা দিতে। ফকিরচাঁদ কলেজ সূত্রের খবর, রোজই কিছু না কিছু টোকাটুকির ঘটনা ঘটেছে। বাধাও দেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ দিন খাতা খুলে টোকাটুকি, চিরকুট বিলি
চলছিল দেদার। কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকার তা নজরে পড়ায় তাঁরা বাধা দেন। বকাবকি করেন। শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন।

তখনকার মতো চুপ করে গেলেও বেলা ১টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করে কিছু ছাত্র। অভিযোগ, চারতলা ভবনের বেশ কিছু ক্লাসঘরে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। নোটিস বোর্ড, ঘড়ি ভাঙে ছাত্রেরা। লাঠি নিয়ে শিক্ষকদের তাড়া করে। টিচার্স রুমে ঢুকে কোনওমতে রক্ষা পান তাঁরা।

গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীরা। কলকাতা থেকে যাতায়াত করেন এক শিক্ষিকা। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেরা দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়ে গিয়েছে। একা যাতায়াত করি। খুবই ভয়ে ভয়ে আছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Student College Vandalism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy