রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে অবৈধ নিয়োগ মামলা নিয়ে আরও একবার বিরোধীদের উদ্দেশে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য বিধানসভায় এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় হাজির হন। অধিবেশনে রেশন-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের প্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, “কথায় কথায় আদালতে চলে যাচ্ছে। তাই নতুন করে নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, আদালতে মামলা লড়তে লড়তে সরকারের সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।
নিয়োগ-দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী-সহ শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। রাজ্যের বিরোধী দলগুলি এ নিয়ে বিরোধিতার সুর উচ্চগ্রামে নিয়ে যেতে চাইছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রায়ই রাজ্যে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে যাওয়ার কথা বলছেন।
তা ছাড়া রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন বিষয়। আদালতের নির্দেশেই অবৈধ নিয়োগ নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে প্রায়ই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্য প্রশাসনকে।
এই দুই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে। দলীয় ভাবে তো বটেই, প্রশাসনিক ভাবেও বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগকে খণ্ডন করে পাল্টা আক্রমণে যেতে চাইছে শাসক দল। বছর ঘুরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বিরোধীদের প্রতি আরও এক বার সুর চ়ড়ালেন।
আগেও অবশ্য নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে বিরোধীদের যোগসূত্র থাকার বিষয়টি উস্কে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। টেনে এনেছিলেন বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রসঙ্গও। অবশ্য খড়্গপুরের বিজেপি সাংসদের নাম করেননি তিনি। ঝাড়গ্রাম সফরে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ঘর থেকে কারও দলিল পাওয়া গিয়েছিল। তখন তাঁকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয়েছে। ঠিকই করেছে। কিন্তু এ বার বিজেপি নেতার দলিল কেন এমন একটা প্রতারকের ঘরে পাওয়া গেল? এ ক্ষেত্রে কেন ওই নেতাকে গ্রেফতার করা হবে না?’’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে দিলীপের বাড়ির দলিল উদ্ধার হয়। সূত্রের খবর, শৌভিক মজুমদার নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটি জমি কিনেছিলেন দিলীপ। সেই দলিল পাওয়া যায় প্রসন্নর বাড়িতে। দিলীপ নিজেও অবশ্য বাড়ি কেনার বিষয়টি অস্বীকার করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy