কলকাতা হাই কোর্ট। —নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষক হিসাবে ৩৬ বছরের কর্মজীবন। অবসরের শেষ ছ'বছর মাত্র কাজ করেছেন স্থায়ী শিক্ষক হিসাবে। তার আগে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। আসানসোলের শিক্ষক যোগেন্দ্রকুমার যাদবকে ২০ বছরের স্থায়ী চাকরির বেতন-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, ওই শিক্ষককে দু'মাসের মধ্যে ২০ বছরের বেতন দিতে হবে।
১৯৮৫ সালে আসানসোলের বিধানবাগের জয়কয় নগর হাই স্কুলে বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসাবে চাকরি পান যোগেন্দ্র। একাধিক বার শিক্ষা দফতরে চাকরি স্থায়ী করার জন্য আবেদন জানান তিনি। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ১৯৯৪ সালে যোগেন্দ্র হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তখন উচ্চ আদালত জেলা স্কুল পরিদর্শককে নির্দেশ দেয় তাঁকে স্থায়ী পদে নিয়োগ করার জন্য। যোগেন্দ্রর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, আদালতের সেই নির্দেশ মানেননি আসানসোল জেলা স্কুল পরিদর্শক। জারি হয় আদালত অবমাননার নির্দেশ। অবশেষে ২০ বছর পর ২০১৪ সালে স্থায়ী শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন যোগেন্দ্র।
২০২১ সালে অবসর নেন বিজ্ঞানের ওই শিক্ষক। অর্থাৎ, ছ'বছর তিনি স্থায়ী পদে ছিলেন। যোগেন্দ্রর দাবি, ১৯৯৪ সালের নির্দেশ মানা হয়নি। তা মানা হলে স্থায়ী শিক্ষক হিসাবে ২৬ বছরের কর্মজীবন হত। এত দিনের সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে — এই অভিযোগ তুলে তিনি ফের উচ্চ আদালতে আসেন। ওই মামলায় বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, ওই শিক্ষকের তরফে কোনও গাফিলতি ছিল না। স্কুল পরিদর্শকের গা-ছাড়া মনোভাবের জন্যই ২০ বছরের পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন যোগেন্দ্র। আদালতের চোখে তা সুবিচার হয়নি বলে মনে হয়েছে। তাই তাঁকে এখন ২০ বছরের বেতন-সহ অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে।
আইনজীবী অঞ্জন বলেন, ‘‘সেই সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের মারফত শিক্ষক নিয়োগ হত না। কিছু যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। পরে আইন মাফিক স্থায়ী করার কথা। তা করা হয়নি। তবে এমন উদাহরণ প্রচুর রয়েছে। সরকারের ভেবে দেখা উচিত।’’ আদালতের এই রায়ের পর যোগেন্দ্রর কথায়, ‘‘কোনও লোভ থেকে নয়, নিজের অধিকার নিয়েই আদালতে গিয়েছিলাম। আদালত তাতে মান্যতা দিয়েছে। আমার দাবি যে ভুল নয়, তা প্রমাণিত। খুব ভাল লাগছে।’’
প্রসঙ্গত, যোগেন্দ্রর সঙ্গে ওই একই বছর একই স্কুলে চাকরি পান তাঁর বন্ধু অশোককুমার লাল। অশোকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। সেই মামলাতেও হাই কোর্ট ১৯৯৪ সাল থেকে স্থায়ী শিক্ষকের মতো সুযোগ-সুবিধা দিতে বলে অশোককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy