Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
ধুন্ধুমার দুর্গাপুরের স্কুলে

‘ঠিকঠাক’ ক্লাস হয় না, ভাঙচুর

ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, শহরে পড়ুয়াদের এমন ‘তাণ্ডব’ কার্যত কখনও দেখা যায়নি। তাঁদের দাবি, গোটা স্কুল জুড়ে এমন ভাঙচুর চালানোর পিছনে দীর্ঘ দিনের পুরনো রাগ থাকতে পারে।

ভাঙচুরের পরে। শনিবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুরের পরে। শনিবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০২:০৪
Share: Save:

মুখে রুমাল বেঁধে এক দিকে চলছে পড়ুয়াদের ক্ষোভ। অন্য দিকে, পড়ে ভাঙচুর হওয়া বেঞ্চ, অধ্যক্ষের গাড়ি, কম্পিউটার। শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে দুর্গাপুরের বিধাননগরের সেক্টর ২বি-র একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ুয়ারা এ ভাবেই ‘ভাঙচুর’ চালিয়েছে বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের পাল্টা অভিযোগ, স্কুলে ঠিক মতো ক্লাস হয় না। স্কুলের ডিরেক্টরও দুর্বব্যহার করেছেন।

মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ‘ফি’ বৃদ্ধি নিয়ে ধুন্ধুমার বেধেছিল দুর্গাপুরে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের এমন ঘটনা। কী ঘটেছে এ ক্ষেত্রে? স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়মিত ক্লাস হয় না, এই অভিযোগে শুক্রবার রাতে একাদশ শ্রেণির আবাসিক পড়ুয়াদের একাংশ দেখা করেছিল ডিরেক্টর মাধব আচার্যের সঙ্গে। পড়ুয়াদের দাবি, ঘন ঘন শিক্ষক বদলে পড়াশোনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে। অভিযোগ, সেই সময়ে কথা কাটাকাটি হয় দু’পক্ষে। সেখানেই মাধববাবু এক পড়ুয়াকে মারধর ও দুর্বব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এর পরেই পড়ুয়াদের একাংশ স্কুলে ভাঙচুর চালায়।

শনিবার সকালে ফের গোলমাল শুরু হয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখে রুমাল বেঁধে বেশ কয়েক জন ভাঙচুর চালায়। অভিযোগ, ভাঙচুর চালানো হয়েছে স্কুল বাস, অধ্যক্ষের গাড়ি, ক্লাসঘরের বেঞ্চ, আলো-পাখা, এসি মেশিন, বোর্ড, অফিসের কম্পিউটার, চেয়ার, আলমারি, সোফা, জানলার কাচ প্রভৃতিতে। স্কুল চত্বরের বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে বহু সামগ্রী।

ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, শহরে পড়ুয়াদের এমন ‘তাণ্ডব’ কার্যত কখনও দেখা যায়নি। তাঁদের দাবি, গোটা স্কুল জুড়ে এমন ভাঙচুর চালানোর পিছনে দীর্ঘ দিনের পুরনো রাগ থাকতে পারে। এ দিনই স্কুল চত্বরে মুখে রুমাল বাঁধা পড়ুয়াদের কয়েক জনকে হিন্দিতে চিৎকার করতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের থেকে চার লাখ, ছ’লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয় না। দু-এক মাসের বেশি কোনও শিক্ষক থাকেন না। পড়াশোনার কী হবে?’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের অভিযোগ, ‘‘দেড় বছর ধরে বলা হচ্ছে, সোমবার থেকে ঠিকমতো ক্লাস হবে। কিন্তু সেই ‘সোমবার’ আর আসে না। স্কুলের কোনও বোর্ডের অনুমোদন নেই। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসতে পারব কি না, তা-ও জানি না।’’ স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে একই অভিযোগ করেন অভিভাবকদের একাংশও। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্কুলটির বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। পরিস্থিতির সামাল দিতে কখনও মধ্যস্থতা করতে হয়েছে প্রশাসনকে। চলতি শিক্ষাবর্ষেও বেশ কয়েকবার অভিভাবক-বিক্ষোভ হয়েছে।

স্কুলের ডিরেক্টর মাধববাবুর মোবাইলে ফোন করা হলেও, তা বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা হয়নি। স্কুলের তরফে পিয়ালী কেশ দাবি করেছেন, পড়ুয়াদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত ক্লাসও হচ্ছে। শনিবার রাত পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়ের করেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy