Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Swasthya Sathi Card

Swasthya Sathi Card: চিকিৎসার ‘টোপ দিয়ে জালিয়াতি’, গ্রেফতার শাশুড়ি-জামাই, নজরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড

পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘এটা একটা বড় কেলেঙ্কারির ঘটনা। আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আসার পরেই তদন্ত শুরু করেছি। কাউকে ছাড়া হবে না।’’

বর্ধমানের নার্সিংহোমে তদন্তে পুলিশ।

বর্ধমানের নার্সিংহোমে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২২ ০৮:১২
Share: Save:

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে বড় জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানে। রীতিমতো এজেন্ট নিয়োগ করে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সংগ্রহ করে চিকিৎসার নামে উপভোক্তাদের টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে অভিযোগে কাটোয়া থানায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে পুলিশ। দু’জন এজেন্ট-সহ বর্ধমানের খোসবাগানের একটি নার্সিংহোমের নামেও অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ ওই দুই এজেন্ট, কাটোয়ার গাঁফুলিয়া গ্রামের সালেয়ারা বিবি ও তাঁর জামাই মুন্সি নুর আলমকে বর্ধমানের ওই নার্সিংহোম থেকে সোমবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে অনেক স্বাস্থ্যসাথী কার্ড।

পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘এটা একটা বড় কেলেঙ্কারির ঘটনা। আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আসার পরেই তদন্ত শুরু করেছি। কাউকে ছাড়া হবে না।’’ জেলাশাসক প্রিয়ঙ্কা সিংলাও বলেন, ‘‘প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’’

প্রশাসনের দাবি, প্রকৃত উপভোক্তার হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা দিতে ‘জাল’ কার্ডে নজর রাখা হচ্ছে। ঠিক নথিপত্র না থাকায় অনেক কার্ড ব্লকও করে দেওয়া হয়েছে। তার পরেও ‘জালিয়াতির’ উদাহরণ সামনে আসছে।

কী ভাবে হচ্ছে জালিয়াতি?

পুলিশের দাবি, কাটোয়ার গাঁফুলিয়া গ্রামের সালেয়ারা বিবি স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তাদের ‘টোপ’ দিয়ে বর্ধমানের খোসবাগানের ওই নার্সিংহোমে নিয়ে যেতেন। ‘টোপ’ হিসাবে প্রত্যেক উপভোক্তাকে গড়ে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হত। গত তিন মাসে গাঁফুলিয়া, দুর্গাগ্রাম, বাঁধমুড়ো, পঞ্চাননতলা থেকে অন্তত ৩০ জনকে ওই নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছেন বলে তদন্তকারীদের দাবি। ওই নার্সিংহোমে কাজ করেন সালেয়ারার জামাই। পুলিশের দাবি, ধৃত মহিলা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, প্রত্যেক উপভোক্তা পিছু তিনি নার্সিংহোম থেকে আট থেকে ১৭ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন পেয়েছেন। কিন্তু সমস্যা হয় গাঁফুলিয়া গ্রামের মানেকা বিবি ও রাজিয়া বিবির ক্ষেত্রে। অভিযোগ, বর্ধমানের ওই নার্সিংহোম থেকে ফিরে এসেও ‘প্রাপ্য’ টাকা মেলেনি বলে হট্টগোল বাধান তাঁরা। খবর যায় পুলিশের কাছে। তদন্ত করে কাটোয়া থানার এসআই আব্দুল হাসেম হাজারি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এ মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই দুই মহিলাকে বর্ধমান নিয়ে গিয়েছিলেন সালেয়ারা। তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাজেয়াপ্ত করে জানা গিয়েছে, মানেকা ও রাজিয়ারার কার্ডে এক লক্ষ ১৮ হাজার ও এক লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা অনুমোদন হয়েছে। পাঁচ বারে ৬১,৪০০ টাকা ও ৬৪,৬০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ওই দুই মহিলার দাবি, ‘‘আমাদের বলা হয়েছিল, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিয়ে চেক-আপ করা হবে। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ওই নার্সিংহোমে গিয়ে দু’টো কাগজে টিপ সই দিয়েছি। আর যাইনি। টাকাও পাইনি।’’

আলমপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘লোভ দেখিয়ে আমাদের এলাকার অনেক মহিলাকে বর্ধমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যাঁরা টাকা পেয়েছেন, তাঁরা চুপ করে গিয়েছেন। এ ভাবে জালিয়াতি করা সম্ভব, ভাবতেই পারছি না!’’

এ দিন বিকেলে পুলিশ বর্ধমানের ওই নার্সিংহোমে তল্লাশি চালায়। কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ‘হার্ড ডিস্ক’ বাজেয়াপ্ত করা হয়। নার্সিংহোমের মালিক আবির গুহর দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ যে কেউ করতেই পারে। প্রমাণিত তো হয়নি। পুলিশের তদন্তে কিছু উঠে এলে, তখন এ বিষয় নিয়ে কথা বলব।’’ তবে ধৃত যুবক যে তাঁর নার্সিংহোমের কর্মী, তা মেনে নিয়েছেন তিনি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায়ের কথায়, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। আমরাও খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Swasthya Sathi Card Fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy