Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sukanta Majumdar

Death: রামপ্রসাদের মৃত্যু ঘিরে তুঙ্গে তরজা

দুর্গাপুরের বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা, ফুচকা বিক্রেতা রামপ্রসাদ সরকারের (৪৫) ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’কে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা আরও বাড়ছে।

মৃতের ছেলের সঙ্গে কথা বলছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই।

মৃতের ছেলের সঙ্গে কথা বলছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২২ ০৬:০৭
Share: Save:

দুর্গাপুরের বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা, ফুচকা বিক্রেতা রামপ্রসাদ সরকারের (৪৫) ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’কে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা আরও বাড়ছে। দলের বুথ সভাপতি রাজা সরকারের বাবা বলেই রামপ্রসাদকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

বৃহস্পতিবার সুকান্ত দুর্গাপুরে ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল কাউন্সিলরের মদতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। দলের বুথ সভাপতি রাজার বাবা বলেই রামপ্রসাদকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।” অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এ দিকে, এই মৃত্যুর ঘটনায়, রাজনীতি জুড়ে দেওয়ার নিন্দা করেছে সিপিএমও। রাজার প্রতিক্রিয়া, “এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের উপরে ভরসা আছে। যদি বিচার না পাই, তা হলে দলকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে যাব।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপ্রসাদ সোমবার রাতে ভাইয়ের বাড়ি শ্রমিকনগরে যান। সেখানে তিনি মত্ত অবস্থায় অনন্ত জানা নামে স্থানীয় এক বৃদ্ধের খোঁজখবর করতে গিয়ে অশালীন শব্দ প্রয়োগ করেন এবং কথা কাটাকাটির সময় অনন্তের বুকে চড়ে বসেন বলে অভিযোগ। অনন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে, রামপ্রসাদ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। অভিযোগ, মাঝ রাস্তা থেকে বৃদ্ধের পরিবারের লোকজন আরও কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে রামপ্রসাদকে ধরে নিয়ে যান শ্রমিকনগরের একটি মাঠে। সেখানে তাঁকে মারধর করা হয়। বাড়ি ফিরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেন রামপ্রসাদের ভাই বাপ্পা। পুলিশ অনন্তের ছেলে বিশ্বজিৎ জানা, সুরজিৎ সরকার ও মনোরঞ্জন দাস নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। মৃতের ছেলে রাজার দাবি, ঘটনার সময় স্থানীয় ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শিপুল সাহা এলাকায় থাকলেও, তিনি সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। এলাকায় গিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারও দাবি করেন, অভিযুক্তেরা সকলেই তৃণমূল কর্মী, এলাকার কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ। যদিও শিপুলের দাবি, দু’পক্ষই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত।

এ দিকে, উপযুক্ত বিচার চেয়ে বুধবার শ্রমিকনগরে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন দলের নেতারা। ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত ও রাজনৈতিক রং বিচার না করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানান তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ‘মহিলা সমিতি’র প্রতিনিধিরা। পরে, পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত। তাঁর দাবি, “এমন নৃশংস ভাবে অত্যাচার মাত্র তিন জন মিলে করতে পারে না। অন্তত ১০-১৫ জন মিলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “মৃত্যুর পরে পরিবারের বাকিদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” সুকান্তর দাবি, অভিযুক্তেরা তৃণমূল কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে বসে থাকেন ২৪ ঘণ্টা। কাউন্সিলর ও অভিযুক্তদের ‘কললিস্ট’ খতিয়ে দেখুক পুলিশ।

সিপিএম নেতা পঙ্কজের মন্তব্য, “রামপ্রসাদের রাজনৈতিক পরিচয় আমরা উল্লেখ করতে চাই না। আসল কথা হল, এক জন সাধারণ মানুষকে তৃণমূল-আশ্রিত ‘দুষ্কৃতী’রা ‘নৃশংস’ ভাবে ‘পিটিয়ে’ মেরেছে। এর বিচার চাই। প্রথম থেকে আমরা এই দাবিতে আন্দোলন করছি। ঘটনার দু’দিন পরে, বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে।”

বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল কাউন্সিলর শিপুল বলেন, “কোনও একটা ঘটনা ঘটলেই, বিজেপি সেখানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা ছড়াতে চায়।” তাঁর দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। স্থানীয় বিবাদ থেকে এমনটা ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত করছে। দোষীদের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।

অন্য বিষয়গুলি:

Sukanta Majumdar BJP Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy