জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে জামালপুরের স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বর। নিজস্ব চিত্র
করোনা-আক্রান্ত হলেন জামালপুরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী-সহ ৯ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এর জেরে জরুরি বিভাগ ছাড়া, আপাতত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্য বিভাগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জামালপুরে ৩৯ জন করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। জেলারই আর এক ব্লক ভাতারে ৫১ জন করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তার মধ্যে অধিকংশ জনই দু’টি গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জামালপুরের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রর চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শনিবার থেকে বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। জামালপুর ছাড়াও, লাগোয়া রায়না ব্লক, এমনকি, হুগলি জেলার একাংশ থেকেও কিছু রোগী এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে রয়েছেন ২০ জন। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগ খোলা থাকছে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা-পরিষেবা পাওয়া যাবে। বাকি বিভাগগুলি আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে। জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে।’’
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহখানেক আগে জামালপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ১২ জনের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। তার মধ্যে ছিলেন বন্ধ্যত্বকরণ অস্ত্রোপচার করানো তিন মহিলা। এর পরেই সেখানকার আট জন চিকিৎসক ও নার্সকে ‘গৃহ নিভৃতবাসে’ পাঠানো হয়। শুক্রবার রাতে রিপোর্ট আসে, দু’জন চিকিৎসক, তিন জন নার্স, এক জন করে ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং স্বাস্থ্যকর্মী ও দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এর পরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আতঙ্ক দেখা দেয়। স্বাস্থ্যকর্মীদের কেউ-কেউ অভিযোগ করেন, প্রয়োজনীয় ‘মাস্ক’, ‘পিপিই কিট’, ‘গ্লাভস’, ‘স্যানিটাইজ়ার’ নেই তাঁদের। এই অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ রোগী আসেন। বহির্বিভাগ বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বিস্তীর্ণ এলাকার রোগীরা। তাঁদের এখন ২৫ কিলোমিটার দূরে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল বা ১৪ কিলোমিটার দূরে রায়না স্বাস্থ্যকেন্দ্র অথবা ৪৫ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে হবে। বিএমওএইচ (জামালপুর) আনন্দমোহন গড়াই বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে অন্য বিভাগ খোলা হবে।’’
ভাতারে যে ৫১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই হারগ্রাম ও বামশোর গ্রামের বাসিন্দা বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। এ দিন ওই দুই এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। বামশোরের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গ্রামের কয়েকজনের করোনা-আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলায় এ দিন ইদের উৎসব ফিকে হয়ে গিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে অনেকে পরিযায়ী শ্রমিক বলে জানা গিয়েছে। হারগ্রামে কয়েক দিন আগে শিলিগুড়ি থেকে আসা দু’জনের রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। বৃহস্পতিবার গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় কয়েকজন আক্রান্তের খোঁজ মেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তার পর থেকে রাস্তাঘাট সুনসান। বিএমওএইচ (ভাতার) সঙ্ঘমিত্রা ভৌমিক বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy