Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

মিড-ডে মিল বিশ বাঁও জলে, ক্লাসও বন্ধ স্কুলে

মিড-ডে মিল চালানো যাচ্ছে না—এই যুক্তি দেখিয়ে পরপর দু’দিন ক্লাস হল না বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের আচার্য দুর্গাপ্রসন্ন বিদ্যামন্দিরে। শুক্রবার ওই স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন বর্ধমান পুরসভার মিড-ডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক।

ফাঁকা বড়নীলপুরের স্কুল। নিজস্ব চিত্র।

ফাঁকা বড়নীলপুরের স্কুল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

মিড-ডে মিল চালানো যাচ্ছে না—এই যুক্তি দেখিয়ে পরপর দু’দিন ক্লাস হল না বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের আচার্য দুর্গাপ্রসন্ন বিদ্যামন্দিরে। শুক্রবার ওই স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন বর্ধমান পুরসভার মিড-ডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক। মালবাহী গাড়িতে আসা বেশ কয়েক বস্তা চাল ফেরত পাঠিয়ে দেন ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) খগেন্দ্রনাথ রায়।

বেশ কয়েক বছর ধরেই ওই স্কুল বিতর্কে থেকে। কখনও স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এক শিক্ষিকার অশান্তি সংবাদ শিরোনামে এসেছে। কখনও আবার মিড-ডে মিলের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন স্কুলেরই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষককে শো-কজও করা হয়েছিল। এ দিন ওই স্কুলের বেশির ভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকার অভিযোগ, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সুজিত চৌধুরীর আমলে ঠিকমতো মিড-ডে মিল হত না। তার পরেও স্কুলের পাস বইয়ে দেখা যাচ্ছে, মিড-ডে মিল চালানোর মতো টাকা নেই। মুদির দোকানেও প্রায় ৩৭ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, এই অবস্থায় কী ভাবে মিড-ডে মিল চালানো সম্ভব? যা শুনে সুজিতবাবু বলেন, “আমি তো বলেই দিয়েছি, পুরনো সব দায় আমার।”

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বীণা মণ্ডলের অবশ্য দাবি, শিক্ষক-শিক্ষিকারা ‘দায়িত্ব’ নিতে অস্বীকার করছেন বলেই স্কুলে মিড-ডে মিল চালু করা যাচ্ছে না। এ দিন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝে বসেই তিনি বলেন, “আমার কথা কেউ শোনে না। কেউ দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। আমার পক্ষে একা কী ভাবে মিড-ডে মিল চালানো সম্ভব?” মিড-ডে মিল চালানো যাবে না বলে বৃহস্পতিবার চতুর্থ পিরিয়ডের পরে এবং শুক্রবার দ্বিতীয় পিরিয়ডের পরে আর ক্লাস হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার অভিভাবকেরা। তাঁদের কথায়, “শহরের অন্য স্কুলগুলো যেখানে রমরমিয়ে চলছে, সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের হওয়ার পরেও এই স্কুল ধুঁকছে। আমাদের এলাকার ছেলেমেয়েরা শহরের অন্য স্কুলে ভর্তি হয়।” এর জন্য শিক্ষকদের একাংশের ভূমিকাই দায়ী বলে অভিভাবকেরা মনে করেন। তাঁদের বক্তব্য, “মিড-ডে মিলের মতো স্কুল পরিচালনার অভ্যন্তরীণ বিষয়ের জন্য ক্লাসে যাচ্ছেন না শিক্ষকেরা! তার ফল ভুগতে হল ছোট পড়ুয়াদের।”

স্কুলের শিক্ষকরা অবশ্য বলছেন, “আজ তো দু’পিরিয়ড পর্যন্ত স্কুল করেছি। তার পরে মিড-ডে মিল নিয়ে বৈঠক ছিল।” বীণাদেবী বেশ অসহায়ের সুরে বলেন, “অরাজকতার মধ্যে দিয়ে স্কুল চলছে। আমাকে কেউ সহযোগিতা করছে না।” বর্ধমান পুরসভার মিড-ডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের ক্ষোভ, “দুপুরের রান্না বন্ধ করার কারণ জানতে গিয়ে আমাকে শিক্ষকদের কাছে অপমানিত হতে হল। এ ভাবে মিড-ডে মিল বন্ধ করা যায় না।” পুরো পরিস্থিতি জানাতে গিয়ে ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ দিন ভর্ৎসিতও হন জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে। খগেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ক্লাস না করে, মিড-ডে মিল চালু না করে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ গর্হিত অপরাধ করেছেন। আমার কাছে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের সবাইকে শো-কজ করা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

mid day meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy