বর্ধমানে সুকান্ত। নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলন চলাকালীন কাটোয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি না হওয়ার পিছনে রাজ্যে সরকারেরর ‘অসহযোগিতা’কেই দায়ী করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। বুধবার দুপুরে বর্ধমান সদরের সাংগঠনিক জেলা দফতরে তিনি দাবি করেন, “এনটিপিসি কেন্দ্র সরকারের সংস্থা। কিন্তু শিল্প করতে গেলে রাজ্য সরকারের সহযোগিতার প্রয়োজন। তা না পেলে শিল্প হবে কী ভাবে? তবে রাজ্যের থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব গেলে আমরাও উদ্যোগী হব।’’
যদিও পুরভোটের মুখে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জেলায় এসে অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ৮০০ একর জমি দেওয়ার পরেও একটি ইট গাঁথতে পারেনি। এর জবাব কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকেই দিতে হবে।’’
বাম আমলে অধিগৃহীত জমি এনটিপিসির হাতে তুলে দেয় তৃণমূল সরকার। রাজ্য সরকার নিজের হাতে থাকা প্রায় ১০০ একর জমিও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে দিয়েছিল। রাজ্য সরকারের মধ্যস্থতায় ১৫০ একর জমি কেনে এনটিপিসি। সব মিলিয়ে কাটোয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার জন্য এনটিপিসির হাতে ৮০০ একর জমি রয়েছে।
এনটিপিসি সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের ৫ অগস্ট কাটোয়ার চারটি মৌজার ৮৫০ একর জমিতে ৬৬০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট গড়ে তোলার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ৫৫৬ একর জমি অধিগ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। সেই জমি তুলে দেওয়া হয় পিডিসিএলের হাতে। ২০১০ সালে পিডিসিএল কাটোয়াতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সরকার এনটিপিসিকে তাপবিদ্যুৎ গড়ার দায়িত্ব দেয়। বাকি জমি এনটিপিসি সরাসরি কিনতে মাঠে নামে। প্রয়োজনীয় জমির বেশির ভাগ কেনার পরেও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে এনটিপিসির কেন উৎসাহ নেই, সে প্রশ্ন পুরভোটের আগে উস্কে দিয়েছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী।
কী রকম সহযোগিতার প্রয়োজন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সুকান্ত এ দিন বলেন, “দক্ষ শ্রমিকের জায়গায় যদি অদক্ষ শ্রমিক দেওয়া হয়, ইট গাঁথতে গিয়ে সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়তে হয়, তাহলে এনটিপিসি কেন, কেউ শিল্প করতে আসবে না। নৈরাজ্যের পরিস্থিতিতে কী শিল্প সম্ভব!” এ দিন তিনি সিঙ্গুরেও গিয়েছিলেন। বর্ধমানে বলেন, “রাজ্যে শিল্প সম্মেলন হচ্ছে। শিল্পের বধ্যভূমি সিঙ্গুর। সেই জায়গা দেখে এলাম। কী ভাবে রাজ্যকে শিল্পায়নমুখী করার পরিকল্পনা নেওয়া সম্ভব, তার শপথ নিলাম।’’
জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকারের সহযোগিতার জন্যই প্রয়োজনের সব জমিই কেনা হয়ে গিয়েছে এনটিপিসির। তারপরেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সেই জমি ফেলে রাখা হয়েছে। কাটোয়াতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে অর্থনীতি বদলে যেত। অনেক অনুসারী শিল্প হওয়ার সুযোগ ছিল। কর্মসংস্থানও হত।”
তবে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা কাটোয়ার প্রাক্তন বিধায়ক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “কাটোয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির ব্যাপারে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ভাঁওতা দিচ্ছে।’’
আর রাজনৈতিক কচকচানি নয়, জমিদাতারা চান, তাদের দেওয়া জমিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠুক। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জমি পড়ে থাকায় খেতমজুর থেকে অনেক চাষির অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়েছে। পিডিসিএলের দেওয়া পাঁচিল হেলে পড়েছে। এনটিপিসির দেওয়া কাঁটাতারের বেড়াও নষ্ট হচ্ছে। এনটিপিসি সূত্রে জানা যায়, প্রয়োজনীয় জমির মধ্যে ২৭ একর জমি কিনতে বাকি আছে। আপাতত সেই জমি কেনা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে জলের প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলেছে। দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকার পরে কোন খনি থেকে কয়লা পাওয়া যাবে, তারও খোঁজ মিলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy