ঈদের আগে কালনায় চলছে বিকিকিনি। —নিজস্ব চিত্র।
জমি থেকে ধান ওঠেনি এখনও, বৃষ্টিতে সব্জির ফলনও বেশ কম। ফলে জেলার কৃষি এলাকাগুলিতে ঈদের বাজারও অনেকটাই মনমরা এ বছর। কালনা মহকুমার অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের দাবি, গ্রামগঞ্জের বেশিরভাগই পরিবারই অন্যান্যবারের তুলনায় কম দামের জামাকাপড় চাইছেন।
তবে এ মরসুমে জামাকাপড়ের পাশাপাশি জুতো, সুগন্ধি থেকে সিমাই, লাচ্চা, খেজুর সবেরই চাহিদা থাকে তুঙ্গে। ঈদের দিন দশেক আগে থেকেই জমে ওঠে বাজার। কালনা শহরের একাধিক শাড়ি, জামার দোকান ঘুরে দেখা গিয়েছে, পাওয়ার লুমে তৈরি শাড়ি ছাড়া, বাংলাদেশি শাড়ি এবং সিল্ক জামদানির চাহিদা রয়েছে। তবে তাঁতের চাহিদা তেমন নেই। সমুগ্রদড়ের তাঁত ব্যবসায়ী কার্তিক ঘোষের দাবি, “ঈদে যে পরিমাণ তাঁতের শাড়ি বিক্রি হয় এ বার তা অনেকটাই কম।” তিনি জানান, মজুরি, সুতোর দাম বৃদ্ধি,কারিগরের সমস্যা নিয়ে আটশোর নীচে এ বার কোনও শাড়ি বিক্রি করা যাচ্ছে না। ফলে পাঁচ থেকে ছশো টাকা যাঁদের বাজেট তাঁরা অনেকেই অন্য শাড়ির দিকে ঝুঁকছেন। তবে তার মধ্যেও সারা গায়ে কাজ করা শান্তিপুর, ফুলিয়ার শাড়ি বহু ক্রেতারই পছন্দের। চাহিদা রয়েছে জরির কাজ থাকা চওড়া আঁচল বা পাড়ের শাড়িরও। এছাড়া কমবয়েসীদের জন্য দেদার রয়েছে চুড়িদার, লেহেঙ্গা। শহরের বৈদ্যপুর এলাকার এক পোশাক ব্যবসায়ী রঞ্জিত হালদার জানান, এ বছর বুকে আর নীচের ঘেরে কাজ করা ফুলহাতা চুড়িদারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাঁর দাবি, একটি জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়ালের নায়িকা পাখি এ ধরণের চুড়িদার পরেন। ক্রেতারাও দোকানে এসে সেই পাখি চুড়িদারই চাইছেন। আর চুমকির কাজ করা লেহেঙ্গার চাহিদা তো প্রতি বছরই থাকে।
ছেলেদের পোশাকের মধ্যে শেরওয়ানি, শর্ট ঝুলের গেঞ্জি, ন্যারো জিনসের বাজার ভাল। রঞ্জিতবাবু বলেন, ঈদের বাজারকে সামনে রেখে সাড়ে তিন, চার হাজার টাকার বহু নতুন ধরনের পোশাক আনা হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্রেতারই বাজেট হাজার থেরে বারশোর মধ্যে। শহরের আরেকটি ছেলেদের পোশাকের দোকানের মালিক সুমিত সরকার জানান, এ বার ঈদের বাজারে দামি জিনিস ছেড়ে মাঝারি দামের প্যান্ট, শার্টের দিকেই ঝুঁকছেন ক্রেতারা। শহরের পাশাপাশি ধাত্রিগ্রাম, কুসুমগ্রাম, কালেখাঁতলা, পারুলিয়ার মতো গ্রামীণ এলাকার বাজারগুলিরই একই দশা। বেশ কিছু ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা জানান, সবে মাত্র আমন চাষ শুরু হয়েছে। সার কেনা, জমি তৈরি, মজুরি সব কাজই নগদ টাকায় সারতে হচ্ছে। ফলে ঈদের বাজারে রাশ টানতে হচ্ছে। কুসুমগ্রামের বাসিন্দা মহিদুল শেখের বক্তব্য, বাড়িতে ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। ধারদেনা করে ঈদের বাজার করতে হবে এ বার। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে গাছের গোড়া পচে বহু সব্জি খেত নষ্ট হয়েছে। ফলে অনেক চাষিই নতুন করে এখন সব্জি লাগাচ্ছেন। নাদনঘাটের বাসিন্দা আসাদুল শেখ জানান, দিন পনেরো পরে জমি থেকে পাট উঠবে। তখন অনেক চাষির হাতে নগদ টাকা আসবে। ফলে অনেকে ধারেও ঈদের জিনিসপত্র কিনছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy