কোথাও সরব বিক্ষোভ। কোথাও বা মৌনী মিছিল। নবজাতকের আঙুল কাটার ঘটনায় রাখি সরকার নামে এক নার্সের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে এই দুই পন্থায় প্রতিবাদ জানালেন বালুরঘাট থেকে কলকাতার নার্সেরা।
কিছু দিন আগে বালুরঘাট হাসপাতালে একটি শিশুর হাতের স্যালাইনের চ্যানেল খোলার সময় তার আঙুল কেটে যায়। অভিযোগ, রাখি মোবাইলে কথা বলতে বলতে কাজ করছিলেন বলেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই নার্সের সমালোচনায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাখিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এখন জেল-হাজতে।
রাখির মুক্তির দাবিতে বালুরঘাট হাসপাতালের নার্সেরা সোমবার নার্সিং কাউন্সিলের নির্দেশ অনুযায়ী শুধু তাঁদের জন্য নির্ধারিত কাজটুকুই করেছেন। তাই রোগীদের স্যালাইনের চ্যানেল তৈরি, রক্ত দেওয়ার মতো পরিষেবা দিতে হয় চিকিৎসকদের। ওই দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে তাঁদের নাজেহাল হতে হয় বলে অভিযোগ ডাক্তারদের। নার্স সংগঠনের দাবি, নার্সিং কাউন্সিলের নির্দেশিকা অনুযায়ী স্যালাইনের চ্যানেল তৈরি বা রোগীকে রক্ত দেওয়া নার্সদের কাজ নয়। তবু তাঁরা রেওয়াজ মেনে এগুলোও করে আসছিলেন। রাখিকে মুক্তি না-দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা আর ওই সব কাজ করবেন না।
আন্দোলনকারী নার্সেরা বিকেলে বালুরঘাট হাসপাতালের সুপারের ঘরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। রাখির মুক্তির বিষয়ে তিনি উদ্যোগী হবেন বলে সুপার তপন বিশ্বাস আশ্বাস দেওয়ার পরে নার্সেরা আন্দোলন তুলে নেন। আন্দোলনকারী সংগঠন নার্সেস ইউনিটির রাজ্য সহ-সভানেত্রী ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাখির মুক্তি এবং হাসপাতালে আমাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে সুপার উদ্যোগী হবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আপাতত তিন দিনের জন্য আন্দোলন তুলে নিলাম। সাত দিনে দাবি না-মিটলে প্রয়োজনে বড় আন্দোলনের পথে যাব।’’
নার্সেস ইউনিটি সুপারকে জানায়, জরুরি অবস্থায় দ্রুত পরিষেবা দিতে নার্সেরা সহযোগিতা করবেন। অর্থাৎ সেই সময় স্যালাইনের চ্যানেল তৈরি বা অন্য যা যা দরকার, তা তাঁরা করবেন। ‘‘কিন্তু তার বাইরে ওয়ার্ডে সাধারণ ডিউটির সময় আমরা কাজ করব নার্সিং কাউন্সিলের নির্দেশ অনুযায়ী,’’ বলেন ভাস্বতীদেবী।
রাখির মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের নার্সেরা এ দিন কলকাতায় মৌনী মিছিল করেন। তাঁদের দাবি, জামিন-অযোগ্য ধারায় ইচ্ছাকৃত অঙ্গহানির যে-মামলা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে। এ দিন নার্সেরা এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে মৌনী পদযাত্রা করেন। অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজে নার্সেরা কালো ব্যাজ পরেন। তাঁদের দাবি, মোবাইল কানে দিয়ে কাজ করার অভিযোগ সত্য নয়। চ্যানেলটি না-খুললে হাতে গ্যাংগ্রিন হয়ে যেত। শিশুটিকে বাঁচাতে গিয়েই কোনও ভাবে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। শিশুটিকে পিজিতে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হয়েছিল। বয়স আরও একটু বাড়লে তার প্লাস্টিক সার্জারির ব্যবস্থা হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy