শান্তিপুরে কংগ্রেসের জনসভায় বক্তা অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
নাম না করেও দলত্যাগী বিধায়ককে ঠেস দিয়ে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
শনিবার শান্তিপুরে জনসভায় এসে বরং বারবার অজয় দে-র সঙ্গে তাঁর মধুর সম্পর্কের কথা তুলেছেন অধীর। বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে জোটের প্রার্থী তৎকালীন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্যের কাছে পরাজিত হন তিনি। সদ্য অরিন্দম তৃণমূলে গিয়েছেন ও তাঁর গোষ্ঠীর সঙ্গে অজয় দে-র গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব সামনে আসছে। দিন দুই আগে শান্তিপুর তা প্রত্যক্ষ করে। এ অবস্থায় শান্তিপুরে সভা করতে এসে অরিন্দমের নাম না করে অধীর আক্রমণ শানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের স্বার্থেই সিপিএমের সঙ্গে জোট করেছিলাম। সিপিএম না থাকলে কংগ্রেস জিততে পারত না। কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিধায়ক এলাকার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”
জেলা কংগ্রেসের অভিযোগ, এ দিন অধীর চৌধুরী যাতে শান্তিপুরে সভা করতে না পারেন তার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন অরিন্দম। এ দিন সভা চলার সময়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পোষ্টার মারতে দেখা যায় অরিন্দম অনুগামী কয়েক জনকে। তা নিয়ে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়। অধীরের কটাক্ষ, “কংগ্রেসের খেয়ে-পড়ে বড় হয়ে এখন বিশ্বাসঘাতকতা করে দিদির কাছে সার্টিফিকেট চাইছে।”
অথচ, উল্টো দিকে অজয়বাবুকে প্রশসায় ভরিয়ে দেন কংগ্রেস নেতা। অধীরের কথায়, “অজয় দে-র সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এক সঙ্গে রাজনীতি করেছি। এখানকার মানুষ তাঁকে কংগ্রেসের হয়ে একাধিক বার জিতিয়েছেন। আগে যখন বাইপাস ছিল না, শান্তিপুর শহরের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে মনে হত বহরমপুরে পৌঁছে গিয়েছি।” তার পরেই ফের তাঁর আক্রমণ, “অজয়দা যাঁদের জন্য দলত্যাগ করলেন আজ তারাই তৃণমূলের পান্ডা হয়ে তাঁকে তাড়ানোর চেষ্টা করছে। অজয়দা যাতে কংগ্রেসে আসেন, তার জন্য এ কথা বলছি না। কারণ এখন কংগ্রেসে সেই মধু নেই। তবে তাঁর সঙ্গে এখনও আমার সেই বন্ধুত্ব আছে।”
এতে অধীর আসলে কার ক্ষতি করলেন, সেই জল্পনাও অবশ্য দানা বেঁধেছে। কেননা, অধীর এ-ও বলতে ভোলেননি— ‘‘অজয়দা কথা বলতে ভয় পান, পাছে তাঁর টিকিট বাতিল করে দেন নেত্রী।’’ বস্তুত, তৃণমূলের ঘরোয়া বিবাদ অধীর আরও উস্কেই দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। যে দিন কলকাতায় শঙ্কর সিংহ, অরিন্দম ভট্টাচার্যরা কংগ্রসে যোগ দিয়েছিলেন, সে দিন কৃষ্ণনগরে ইফতার পার্টি করতে এসেই অধীর জানিয়ে দিয়েছিলেন, খুব শীঘ্র তিনি শান্তিপুরে সভা করতে আসবেন।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অসীম সাহা বলেন, “শান্তিপুরের মানুষ বরাবর কংগ্রেস মানসিকতার। তাই অরিন্দম তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের মনোবল ফিরিয়ে আনতেই এ দিন শান্তিপুরে সভা করলেন অধীর চৌধুরী।” তাঁর দাবি, “সভায় মানুষের ঢল প্রমাণ করল, তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে আছেন।” অরিন্দম অবশ্য বলেন, “মানুষ যাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তিনি এখন নানা হতাশায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এমন অনেক ভুল বকছেন।” সাবধানী অজয় দে বলেন, “ওঁর বক্তব্য নিয়ে শান্তিপুরের মানুষের মাথাব্যথা নেই। আমারও নেই। ওঁর দল এখন ফসিলে পরিণত হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy