Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪

সালিশিই চেয়েছিলাম, বয়ান বদল নির্যাতিতার বাবার

এক তরুণীর গণধর্ষণের পর পঞ্চায়েতে মিটমাট করে নিতে সালিশি ডেকেছিলেন পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান, এমনই অভিযোগ করেছিলেন নির্যাতিতার বাবা। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বাগদার সিন্দ্রাণী পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা নির্যাতিতা তরুণীর বাবা ওই দাবি করেন শুক্রবার। ওই তরুণীই সেই অভিযোগই করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগদা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩৪
Share: Save:

এক তরুণীর গণধর্ষণের পর পঞ্চায়েতে মিটমাট করে নিতে সালিশি ডেকেছিলেন পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান, এমনই অভিযোগ করেছিলেন নির্যাতিতার বাবা। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বাগদার সিন্দ্রাণী পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা নির্যাতিতা তরুণীর বাবা ওই দাবি করেন শুক্রবার। ওই তরুণীই সেই অভিযোগই করে। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই বয়ান বদল করে নির্যাতিতার বাবা তৃণমূলের দলীয় তদন্ত কমিটিকে জানালেন, মেয়ের সম্মানের কথা ভেবে উপপ্রধান কালীপদ মণ্ডলের কাছে তিনিই সালিশির অনুরোধ করেন।

সালিশির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, বনগাঁ উত্তর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি যদি দেখে সালিশির অভিযোগ যথাযথ, তা হলে ওই উপপ্রধানকে দল থেকে বরখাস্ত করা হবে। শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্বজিৎবাবু তরুণীর বাড়িতে যান। তার সামনে তরুণীর বাবা জানান, মেয়ের সম্মানের কথা ভেবে তিনিই কালীপদবাবুর কাছে গিয়েছিলেন মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য। সালিশিতে মীমাংসা না হওয়ায় কালীপদবাবুই থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ দিন বাগদার কয়েকজন তৃণমূল নেতার সামনেই কথাবার্তা হয় তরুণীর বাবার। বিশ্বজিৎবাবু তাঁর সঙ্গে আলাদা করা কথা বলতে চান। কিন্তু তরুণীর বাবা রাজি হননি।

কিন্তু কেন এই বয়ান বদল? তরুণীর বাবা অবশ্য কোনও চাপের কথা স্বীকার করেননি। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, কালীপদবাবুর ঘনিষ্ঠ এক নেতার সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে ওই তরুণীর বাবাকে। তবে সালিশি যে একটা হয়েছিল তা বিশ্বজিৎবাবুও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। জ্যোতিপ্রিয়বাবু শনিবার বলেন, “রবিবার তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাব। কালীপদবাবু সালিশিতে যুক্ত থাকলে শাস্তি অনিবার্য।” এদিনই সকালে তরুণীর বাড়িতে যান স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। উপেনবাবু বলেন, “পুলিশকে বলেছি নিরপেক্ষ তদন্ত করে দ্রুত দোষীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার করতে। চার্জশিট দ্রুত দিয়ে আদালতে মামলার শুনানি শুরু করতে বলেছি পুলিশকে। এই বিষয়ে সালিশির কোনও গুরুত্ব নেই।”

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কালীপদবাবু দীর্ঘদিন ধরেই পঞ্চায়েতে সালিশি করে আসছেন। মহিলা-সংক্রান্ত নানা বিষয় তার মধ্যে থাকে। মূলত আর্থিত জরিমানা করা হয় পঞ্চায়েতের সালিশিতে। বাগদা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সভাপতি তৃণমূলের তরুণ ঘোষ বলেন, “কালীপদ বাবু দীর্ঘদিন ধরেই সালিশি করেন পঞ্চায়েতে, যা করা উচিত নয়।” অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালালেও শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কারও গ্রেফতার করতে পারেনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy