নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে এক আইনজীবীর বাড়িতে এসে তাঁর মায়ের হার ছিনতাই করে পালাল দুই যুবক। মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে নিমতার এস এল চ্যাটার্জি স্ট্রিটে। পুলিশ জানায়, দুই যুবক মোটরবাইকে চেপে এসে প্রথমে বৃদ্ধার ছেলে, পেশায় আইনজীবী শান্তনুবাবুর খোঁজ করে। বৃদ্ধা দীপালিদেবী তাদের জানান, শান্তনুবাবু কোর্টে গিয়েছেন। এক যুবক তখন জানায়, তারা থানা থেকে এসেছে কিছু কাগজ দিতে। সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেটের কাছে এগিয়ে যান বৃদ্ধা দীপালিদেবী। মোটরবাইক স্টার্ট দিয়ে হেলমেট পরে বসে থাকে এক জন। অন্য জন বৃদ্ধার কাছে এসে দু’একটি কথা বলার পরেই আচমকা তাঁর গলার সোনার হার ছিনিয়ে বাইকে উঠে চম্পট দেয়। দীপালিদেবী বলেন, ‘‘ওরা পুলিশ বলে পরিচয় দিয়েছিল। সোদপুর থানা থেকে এসেছে বলল। দিনের বেলা এমন কাণ্ড ঘটবে, ভাবতেও পারছি না!’’
নিমতায় হার ছিনতাইয়ের ঘটনা নতুন নয়। যে এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে, তার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে নদীকূল। প্রবীণ শিক্ষিকা অঞ্জলি বন্দ্যোপাধ্যায়েরও এমন স্মৃতি টাটকা। প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। তখন হ্যাঁচকা টানে তাঁর গলা থেকে মোটরবাইক-আরোহী দুষ্কৃতীরা ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সোনার হার। কিংবা বছরখানেক আগে নিমতা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা তপতী বসুর ঘটনা। স্বামী-স্ত্রী বেরিয়েছিলেন হাঁটতে। পিছন থেকে এসে তপতীদেবীর গলার হার ছিনিয়ে নিয়ে যায় মোটরবাইকে আসা ছিনতাইকারীরা।
নিমতায় এমন ঘটনা ঘটে চললেও ছিনতাইবাজেরা ধরা পড়ে না। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়, পুলিশ তদন্তের আশ্বাসও দেয়। যেমনটা এ বারও হয়েছে। কিন্তু কিনারা হয় না। ২০১২ সালে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট গড়ে ওঠার পরে শুধু নিমতাতেই হার ছিনতাইয়ের ১২টি ঘটনা ঘটেছে। এমনিতেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে চুরি-ছিনতাই-ডাকাতির সংখ্যা অন্য এলাকার থেকে বেশি। সম্প্রতি সোদপুরের একটি এটিএম থেকে টাকা তুলে বেরোনোর পরেই এক ব্যক্তির মাথায় ভোজালির
কোপ মেরে মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় দুই যুবক। মাথায় সাতটি সেলাই পড়ে স্বরূপ বসু নামে ওই ব্যক্তির। তার কিছু দিন আগে ব্যারাকপুর-বারাসত রোডের ধারে একটি এটিএম থেকে টাকা তুলে বেরোনোর সময়ে এক প্রৌঢ়কে আক্রমণ করে দুই মোটরবাইক আরোহী।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘একই দল এটা করছে, না আলাদা দল, তা খতিয়ে দেখছি। এই ধরনের ছিনতাই বাড়তে দেওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy