শতরানের পর রোহিত শর্মা। ছবি এএফপি।
রবিবার দুপুরে মাঠে ঢোকার সময় চোখে পড়ল ছেলেটাকে। পাকিস্তানের পতাকার রংয়ে পোশাক। মাথায় লম্বা টুপি। করাচি থেকে এসেছেন। নামটাও অদ্ভুত। শাহবাজ পাকিস্তানি। মুখ উজ্জ্বল করে দাঁড়িয়েছিলেন। পরিচিত সাংবাদিক দেখে হাতটা মুঠো করে ঝাঁকালেন। যেন বোঝাতে চাইলেন, এ বার আমরা জিতব।
ম্যাচ শেষে তাঁকে খুঁজে পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। পাওয়াও যায়নি। গ্যালারিতে তখন তেরঙ্গার ঝড়। বাজছে ‘বন্দে মাতরম।’ গর্জন উঠছে— ট্রফি এ বার আমাদেরই।’’
এ রকম নিখুঁত একটা পারফরম্যান্সের পরে ভারতীয় শিবিরে অবশ্য সে রকম উল্লাসের ছায়া নেই। বরং ভাবনা অনেকটা এ রকম, এ আর এমন কী। জেতার কথা ছিল, জিতেছি। ম্যাচের পরে যুজবেন্দ্র চহাল সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলে গেলেন, ‘‘দেখুন, উল্টো দিকে কারা, তা নিয়ে আমরা ভাবি না। সে পাকিস্তান হতে পারে, ইংল্যান্ড হতে পারে, দক্ষিণ আফ্রিকা হতে পারে। আমাদের কাজটা হল মাঠে গিয়ে নিজেদের সেরাটা দেওয়া। তার পর ফলটা যা হওয়ার তাই হবে।’’ গ্রুপের ম্যাচে পাকিস্তানকে যে সহজে হারিয়ে সুপার ফোরে খেলতে নামছে ভারত, তা দলকে ভুলে যেতে বলেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ম্যাচের পরে টিভি-তে তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিজেদের বলেছিলাম, আগের ম্যাচে কী হয়েছে, তা ভুলে যাও। এটা নতুন লড়াই। আমাদের আবার সেরাটা দিতে হবে। সেটাই করেছে ছেলেরা।’’ বুমরাকে নিয়েও আলাদা করে বলেছেন রোহিত। অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘বুমরা এখন বোলার হিসেবে অনেক পরিণত হয়েছে। অনেক ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে ওর। বুমরা নিজের বোলিং সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল। ও জানে কোথায়, কোন জায়গায় ফিল্ডার রাখতে হবে।’’
সূর্যের তেজ যত কমেছে, দুবাই স্টেডিয়াম তত ভরে উঠেছে। রবিবার এখানে কাজের দিন হওয়ায় অফিস বন্ধ হওয়ার পরেই গ্যালারি ভরেছে। তবে ঢোকার সময় দেখা গিয়েছিল, একই সঙ্গে পাশাপাশি পতাকা নিয়ে ঢুকছেন ভারত-পাকিস্তানের সমর্থকেরা। পাশাপাশি বসে মুখে ভারত-পাকিস্তানের পতাকা আঁকছেন। কিন্তু এক সঙ্গে তাঁদের বাড়ি ফেরা বোধ হয় হয়নি। কারণ, ভারতীয় ব্যাটিংয়ের কুড়ি ওভার হওয়ার মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, সুপার ফোরের এই ম্যাচের ভাগ্য কী হতে পারে। গ্যালারি তখন থেকেই ফাঁকা হতে শুরু করে। যাঁরা বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁরা কোন দলের সমর্থক, তা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না।
আরও পড়ুন: রোহিত-ধওয়নের সেঞ্চুরিতে ধরাশায়ী পাকিস্তান, ৯ উইকেটে জিতল ভারত
ম্যাচের সেরা শিখর ধওয়ন বলছিলেন, ‘‘আমি এখন ভাল ছন্দে আছি। এই ফর্মটা ধরে রাখতে চাই।’’ পাকিস্তান নিয়ে ধওয়নের বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ খুব ভাল। তাই ওপেনার হিসেবে চেয়েছিলাম, শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচটা বার করতে। ওপেনারদের কাজই হল, নতুন বলটা সামলে দেওয়া।’’
তিনি এবং তাঁর অধিনায়ক— দু’জনেই সেঞ্চুরি করেছেন। রোহিতের ইনিংস নিয়ে ধওয়ন বলেছেন, ‘‘দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলল রোহিত। এক বার জমে গেলে ও বড় রান না করে মাঠ ছাড়ে না। এটা খুব ভাল ব্যাপার যে, আমরা দু’জনেই নিজেদের উইকেটে থাকার গুরুত্বটা বুঝি।’’ একটা সময় শোয়েব মালিক-সরফরাজ আহমেদ যখন জুটি বেঁধেছিলেন, তখন গ্যালারিতে পাকিস্তানি পতাকার ওড়াওড়ি নজরে এসেছিল। কিন্তু তার পর তা হারিয়ে যায়। ঠিক যেমন ম্যাচ থেকে মাঝপথেই হারিয়ে গেল পাকিস্তান।
ফাইনালে চলে যাওয়া ভারত এ বার অপেক্ষা করে থাকবে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য। রবিবার হেরে ছিটকে গিয়েছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশ না পাকিস্তান, শুক্রবার কে হবে ভারতের প্রতিপক্ষ— এখন অপেক্ষা তারই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy