নির্লিপ্ত: তাঁর দ্রুততম দশ হাজার রানের বিশ্বরেকর্ডে ক্রিকেট বিশ্ব মেতে উঠলেও কোহালি উচ্ছ্বাসহীন। ফাইল চিত্র
ওয়ান ডে ক্রিকেটে দ্রুততম দশ হাজার রানের শৃঙ্গে আরোহন করে তিনি সম্মানিত। তবে পাশাপাশি বিরাট কোহালি এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, দেশের হয়ে খেলাটাই তাঁর কাছে আসল ব্যাপার।
বিশাখাপত্তনমে নিজের ৩৭তম ওয়ান ডে সেঞ্চুরি করার পথে ২০৫ ইনিংসে দশ হাজার রান করে সচিন তেন্ডুলকরের রেকর্ড ভেঙে দেন তিনি। ম্যাচের শেষে বিসিসিআই ওয়েবসাইটে কোহালি বলেন, ‘‘আমি কোনও দিন ভাবিনি এই জায়গায় পৌঁছতে পারব। আমার কাছে একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশের হয়ে খেলা। সেই রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আমি আজ এখানে এসে পৌঁছেছি।’’
গোটা ক্রিকেট দুনিয়া কোহালির কৃতিত্বে মেতে উঠলেও ভারত অধিনায়ক নিজে ভেসে যেতে চান না। বরং তিনি বলেছেন, ‘‘এই রেকর্ড যে একদিন আমার হবে, তা কোনও দিন মাথায় আসেনি। এই ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিচ্ছে, কেউ যদি সঠিক পদ্ধতি মেনে চলে, সঠিক কাজটা করে, তা হলে ফল পাওয়া যাবেই।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এত দূর আসতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ। তবে এ সব জিনিস অত গুরুত্ব পায় না, যখন বুঝতে পারেন আপনি দশ বছর খেলার পরে কোথায় পৌঁছছেন। আমি যে এ ভাবে খেলে যেতে পারছি, সেটাই আমার কাছে বিশেষ ব্যাপার। কারণ এই খেলাটা আমি খুব ভালবাসি। তাই যত বেশি সম্ভব ম্যাচ খেলে যেতে চাই। এটাই আমার কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’
কোহালি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর কাছে রেকর্ডের আগে থাকবে দলের স্বার্থ। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাজটা হল দলের জন্য যত বেশি সম্ভব রান করে যাওয়া। দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজটা করে যাচ্ছি বলে এখানে পৌঁছেছি। কিন্তু আমার সব সময়ই লক্ষ্য থাকে, দলের প্রয়োজনে রান করা।’’
কোহালি মনে করেন, দেশ এবং দলের কথা ভেবেই তিনি নিজের শারীরিক এবং মানসিক ক্ষমতাকে এই জায়গায় নিয়ে আসতে পেরেছেন। তাঁর অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোহালি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, এত রান আমি করতে পেরেছি, কারণ দলের প্রয়োজনের কথা সব সময় আমার মাথায় থাকে। দলের স্বার্থের কথা মাথায় রাখি বলেই আমি নিজের শারীরিক এবং মানসিক ক্ষমতাকে সব সময় বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। যে কারণে এত রান করতে পেরেছি। নিজের ব্যাটিং বা ও রকম ব্যক্তিগত কোনও লক্ষ্যের ওপর নজর থাকলে সম্ভবত এত রান করতে পারতাম না।’’
দশ বছর ধরে তিনি দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে চলেছেন। কিন্তু সেটা করে যে তিনি কাউকে ‘কৃতার্থ করেননি’, সেটাও বলে দিয়েছেন। পাশাপাশি এও বলেছেন, ‘‘দেশের হয়ে খেলাটা আমার কাছে দারুণ সম্মানের। দশ বছর খেলার পরেও বলব, আমার আলাদা করে কিছু অধিকার জন্মায়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটা রান করতে গেলেও পরিশ্রম করতে হয়।’’ তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘এমন অনেকে আছে যারা ভীষণ ভাবে ভারতের জন্য খেলতে চায়। তাই যখন কেউ এই জায়গায় পৌঁছয় (ভারতের প্রতিনিধিত্ব), তাকে সব সময় সাফল্যের খিদেটা ধরে রাখতে হয়। কোনও কিছুই সহজ ভাবে নিলে চলে না।’’
সব কিছুর আগে যে তিনি দলের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন, তা পরিষ্কার কোহালির কথায়। অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘যদি প্রয়োজন হয়, তা হলে আমি ওভারে ছ’বার ডাইভ মারব, ঝাঁপিয়ে পড়ে রান আউট হওয়া আটকাব। আমি দলের জন্য কাজটা করব। কারণ সেটাই আমার কর্তব্য। সে জন্যই আমাকে দলে নেওয়া হয়েছে। আমি কারও কোনও উপকার করছি না ডাইভ মেরে। কাউকে কিছু দেখানোরও নেই। আমি কাজটা করব স্রেফ দলের কথা ভেবেই।’’
বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘‘আমি যদি ক্লান্ত হয়েও পড়ি, তা হলেও আমি ওই বাড়তি একটা রানের জন্য দৌড়ব। কারণ ওই একটা রান-ই দলের কাজে আসবে। আমার লক্ষ্যই থাকে সেটা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy