Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

আবেগ তুঙ্গে, অধরা স্বপ্নের দৌড়ে বাঘবাহিনী

২০১২ সালের ২২ মার্চ। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল মাত্র ২ রান। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। সেই রান দুটি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলাফল এশিয়া কাপের ফাইনাল জেতে পাকিস্তান। ২ রান সংখ্যায় অনেক কম।

ফাইনালের আগে মাঠে গা ঘামাচ্ছেন মাশরফি বাহিনী। এএফপি-র তোলা ছবি।

ফাইনালের আগে মাঠে গা ঘামাচ্ছেন মাশরফি বাহিনী। এএফপি-র তোলা ছবি।

ঢাকা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ১৬:৩৯
Share: Save:

২০১২ সালের ২২ মার্চ। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল মাত্র ২ রান। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। সেই রান দুটি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলাফল এশিয়া কাপের ফাইনাল জেতে পাকিস্তান। ২ রান সংখ্যায় অনেক কম। তবে করতে না পারা সেই ২ রানের আক্ষেপ শুধু ১১ ক্রিকেটারের ছিল না, ছিল দেশের কোটি কোটি মানুষের। অঝোরে কেঁদেছিলেন সাকিব-মুশফিক-নাসিররা। বাদ যাননি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষও। টাইগারদের সেদিনের কান্না, হাসিতে রূপ নেয় গত বুধবার। ওই দিন ‘সেই’ পাকিস্তানকেই ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে টাইগাররা।

২০১২ সালে ফাইনালে জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েও স্বপ্নটা অধরাই থেকে গিয়েছিল মাশরাফিদের। সেই অধরা স্বপ্ন পূরণে এ বার মাশরাফিদের সামনে বাধা ভারত। রবিবার সেই একই মঞ্চ, একই ভেন্যুতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচটি জিতলেই টাইগাররা অর্জন করবে এশিয়ার সেরা হওয়ার গৌরব।

এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের জন্য সবুজ ঘাসের চাদরে বসানো হয়েছিল মিরপুরের উইকেটে। সেই ভারতের সঙ্গে ফের রবিবার ফাইনালে মুখোমুখি টাইগাররা। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, পেস বোলিংয়েই ভারত বধ করতে চায় বাংলাদেশ। তাই উইকেটে যতটা সম্ভব ঘাস রাখা হতে পারে।

টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্র জানিয়েছে, ফাইনালে বাংলাদেশ দলের একাদশে আসতে পারে দুটি পরিবর্তন। মিঠুনের জায়গায় আসতে পারেন নুরুল হাসান সোহান। আর স্পিনার আরাফাত সানিকে বসিয়ে চতুর্থ পেসার হিসেবে খেলানো হতে পারে আবু হায়দার রনিকে। ভারতকে দমিয়ে রাখতে বাংলাদেশের অস্ত্রই হবে পেসাররা। এজন্য যতটা সম্ভব উইকেটে রাখা হচ্ছে ঘাস।

টি-টোয়েন্টির র‌্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর দল ভারতের সঙ্গে র‌্যাঙ্কিংয়ের ১০ নম্বর দল বাংলাদেশ খেলবে আজ। অভিজ্ঞতা, ফর্ম, দলীয় শক্তি- যেভাবেই বিশ্লেষণ করা হোক, বাংলাদেশের চেয়ে ঢের এগিয়ে ভারত। তবে এখানেই কিন্তু শেষ নয়। টাইগাররাও কিন্তু কম যায় না।

ভারতের সাম্প্রতিক ফর্মের তুলনায়ও মাশরাফি বাহিনী খুব একটা পিছিয়ে নেই। বরং অনেকটাই এগিয়ে। বাংলাদেশ দলের অপরিসীম সাহস, লড়াকু মানসিকতা, ১৬ কোটি বাংলাদেশির সমর্থন, চেনা পরিবেশ, দলীয় ঐক্যে অনেকটাই এগিয়ে মাশরাফিরা।

ভারত পাঁচবার এশিয়া কাপেই শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলেছে। এছাড়া বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের অভিজ্ঞতাও আছে তাদের। তাই তো তাদের নেই বাড়তি চাপ।

চাপ অবশ্য বাংলাদেশেরও নেই। বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটা অনেক কিছু অর্জনের। তাদের হারানোর কিছু নেই। আছে অনেক কিছু পাওয়ার। ম্যাচটি জিতলে বড় কোনও টুর্নামেন্ট জয়ের রেকর্ড গড়বে লাল-সবুজের দল।

এর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত মহারণ দেখতে টিকিট নিয়ে শনিবার হয়ে গিয়েছে লঙ্কাকাণ্ড। এখনও হন্যে হয়ে টিকিট খুঁজছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। মিরপুর স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার হলেও টিকিট পেতে লড়ছে লাখো মানুষ। এমন অসম লড়াইয়ে যারা জিতবে তারাই রবিবার গ্যালারিতে গর্জন তুলবেন। তারাই সমর্থন ও সাহস যোগাবেন টাইগারদের।

এই সংক্রান্ত আরও খবর...

টাইগারদের সমর্থনে বদলে গেল লাখ লাখ প্রোফাইল পিকচার

২০১২ সালে ভারত শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। তবে লিগ পর্বে হারাতে পারেনি পাকিস্তানকে। যাদের কাছে ফাইনালে হেরেছিল টাইগাররা। এবারও লিগ পর্বে ভারতের কাছে হারা বাংলাদেশই ফাইনালে উঠলো। প্রতিপক্ষ ভারত। চার বছর আগের স্মৃতি রবিবার ফিরে আসবে কিনা বলা কঠিন। তবে মাশরাফির দল একাট্টা সেই সময় ভুলিয়ে দিতে।

ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে দলের চেয়ে দলের বাইরে ক্রিকেটপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস ও বিশ্লেষণ বেশি। আশা বাংলাদেশেই জিতবে।

মাশরাফি অবশ্য ফাইনাল নিয়ে তেমন বিশেষ কিছু ভাবছেন না। তাই তো শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘না জিতলে কিছুই না। আমি এটাই বিশ্বাস করি। এমন নয়, যে বাংলাদেশ ক্রিকেট এখানেই থেমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সামনে অনেক উজ্জ্বল ভবিষ্যত আছে। এই টুর্নামেন্ট খুব ভালো একটি বার্তা দিয়েছে যে টি-টোয়েন্টিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। জিতলে অসম্ভব ভালো লাগবে। কিন্তু না জিতলে কিছুই না। আমরা ঠিকই সামনের দিকে এগিয়ে যাবো এবং ভালো করবো।’

২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পর থেকেই এশিয়ার এই দুই দলের মধ্যে কার খেলা মানেই বাড়তি উত্তাপ। দুই দলের কাছে মর্যাদার লড়াইও। এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ক্যাচ ফস্কে জয় থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। তবে আগের ম্যাচের হার ফাইনালে বাড়তি কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন মাশরাফি।

তাঁর মতে, ‘ওই ম্যাচে যদি ২০০ রান ব্যবধানেও বাংলাদেশ জিততো তা হলেও ফাইনাল ম্যাচে কোনও প্রভাব ফেলত না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটাই এমন, আপনাকে প্রত্যেক ম্যাচে ভালো খেলতে হবে। যেদিন খেলা সেদিন ভালো খেলতে পারলে তবেই জয় আসবে। এখানে আগেকার সাফল্য, ব্যর্থতা নতুন ম্যাচে খুব বেশি প্রভাব ফেলে না।’

সৌজন্যে বাংলা ট্রিবিউন।

অন্য বিষয়গুলি:

bangladesh asia cup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy