—ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গলে তাঁর গোলের সংখ্যা অনেক। তবু সেই ফ্রিকিক এখনও ভুলতে পারছেন না ডু ডং।
গত বছরের এক ফ্রিকিক। এমনই এক কলকাতা লিগে ডার্বিতে মারা ফ্রিকিক।
ডু ডং যে কী বস্তু, ওই এক ফ্রিকিকে সে দিন চিনে গিয়েছিল কলকাতা। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন ডং। ইস্টবেঙ্গল জিতেছিল চার গোলে। বাহাত্তর ঘণ্টা পর আবারও এক ডার্বি। আবার কলকাতা লিগ। আবার ডু ডং।
ওই ফ্রিকিক আর মারা সম্ভব?
‘‘কেন নয়? এটা মানছি, আগের মতো ফর্মে আমি এখন নেই। ও রকম শটও আর মারতে পারিনি। আশা করছি, বুধবারের ডার্বিতেই আবার মারতে পারব। ও রকম একটা স্পেশ্যাল ফ্রিকিকেই ডার্বি জিততে চাই,’’ শনিবার রাতে বাড়িতে বসে বলছিলেন ডং। যাঁকে ইতিমধ্যেই তাতাচ্ছে, ডার্বিতে নিজের গোলের হিসেব। তিন ম্যাচে চার গোল— চাগিয়ে দেওয়ার মতোই ব্যাপার!
‘‘আসলে ইস্টবেঙ্গলে আসার পর কর্তা আর সমর্থকদের সিরিয়াসনেস দেখে বুঝে গিয়েছিলাম, এই ম্যাচটা আলাদা। এখানে হারলে আর দেখতে হবে না। এই ম্যাচের আগে রাতের ঘুম ওড়ে, খাওয়াদাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এটাও ঠিক যে, সে সব সামলেও ডার্বিতে আমার কী রেকর্ড, আপনারাই বিচার করুন,’’ বলে দিচ্ছেন লাল-হলুদ মিডিও। মুশকিল হল, গত বারের মতো এ বার লাল-হলুদ ফরোয়ার্ড লাইন অতটা আগুনে নয়। কোনও এক র্যান্টি মার্টিন্স নেই। সোজাসুজি বললে, ভরসা জাগানোর মতো কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। আদিলেজা আছেন ঠিকই, কিন্তু অন্ধ ভরসা করার মতো কোনও উপাদান এখন ও কর্তা-সমর্থকদের জোগাতে পারেননি।
সেখানে সব চাপ তো আপনার উপর?
শুনে ডং যা বললেন, চমকে যাওয়ার মতো। কোরিয়ান মিডিওর পরিষ্কার উত্তর, ‘‘চাপ নেই। পুরো টিমেরই কোনও চাপ নেই। বরং এই অবস্থা আমরা উপভোগ করছি!’’ আসলে ডংয়ের কাছে ডার্বি এমন এক মঞ্চ যেখানে হাজার-হাজার সমর্থকের সামনে নিজের প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখানো যায়। দেখাতে পারলে, লোকে মনে রাখে। ডংয়ের কাছে ডার্বি হল নিজেকে ইতিহাসের প্যাপিরাসে তুলে রাখার একটা অমোঘ সুযোগ। ‘‘ইস্টবেঙ্গলে খেলি বলে আজ এই সুযোগ পাচ্ছি। আমি তো সেটা নেব। ক্লাব আমার উপর যে ভরসাটা করছে, আমি তো চেষ্টা করব সেটা ফিরিয়ে দেওয়ার। অহেতুক টেনশন করব কেন? চাপই বা নেব কেন?’’
ট্রেভর জেমস মর্গ্যান শুনলে খুশি হবেন যে, ডার্বির প্রাক্-মুহূর্তে তাঁর ছাত্রের ভাবনাচিন্তাতেও পরিবর্তন এসেছে। যেমন, পজিশন। ডার্বিতে কোন পজিশনে তাঁকে কোচ খেলাবেন, ভাবার কোনও প্রয়োজন দেখছেন না। বরং অক্লেশে বলে দিচ্ছেন, প্রয়োজনে ডিফেন্সে খেলতেও রাজি! ‘‘আগে ও সব ভাবতাম। ভাবতাম যে, স্ট্রাইকারের পিছনে খেলতে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। কিন্তু এখন ও সব ভাবি না। আমার কাছে জেতাটা জরুরি। নিজে কোন পজিশনে খেললাম, সেটা নয়।’’
মর্গ্যানের সঙ্গে কেমিস্ট্রি যে আস্তে আস্তে ভাল হচ্ছে, তার ইঙ্গিতও পাওয়া গেল। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য না ট্রেভর মর্গ্যান— কার কোচিং বেশি পছন্দ? ডং যা ইঙ্গিত দিলেন, তাতে বিশ্বজিৎ নয়, বিশ্বজিতের উত্তরসুরির দিকেই ভোটটা থাকবে। ‘‘দু’জনেই বড় কোচ। কিন্তু মর্গ্যানের প্লাস পয়েন্ট হল উনি সবার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে পারেন। যোগ্যতাকে সম্মান করেন।’’ কিন্তু সেই মর্গ্যানই তো ডার্বিতে থাকবেন না? চারদিকে সমালোচনার ঝড় বইছে, আপনাদেরও তো সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা। ‘‘অসুবিধে হবে না। ইস্টবেঙ্গলের শক্তি হল একতা। আমরা সবাই জানি, কী করতে হবে। কোচ থাকুন বা না থাকুন, কোনও সমস্যা হবে না। ম্যাচটা জিতে বরং কোচকে উপহার দিতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy