Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

‘প্রথম দলে দরকার ছিল রাহানেকে’

জাতীয় নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের অধিনায়ক হিসেবে আজহারউদ্দিন, সচিন-দের সামলাতে হয়েছে।

উল্লাস: পূজারাকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরে সতীর্থদের সঙ্গে মর্কেল। ছবি: রয়টার্স

উল্লাস: পূজারাকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরে সতীর্থদের সঙ্গে মর্কেল। ছবি: রয়টার্স

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

দু’রাত কেপ টাউনের পিচ কভার-বন্দি হয়ে থাকার পরে সোমবারেই তা দিনের আলো দেখেছিল। আর তার পরেই মহম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরা-দের দাপটে ৬৫ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার বাকি আট উইকেট পড়ে যায়। ফলে ২০৮ রান করলেই ম্যাচটা জিততে পারত বিরাট কোহালিরা।

তার বদলে চার দিনেই ভারতের ৭২ রানে এই হার। তাও দক্ষিণ আফ্রিকা এক বোলার কম নিয়ে খেলার পরে। আমার প্রশ্ন, কেপ টাউন টেস্টে দল নির্বাচনটা কি ঠিকঠাক হয়েছিল?

উত্তরটা হল— হয়নি।

অন্তত দু’টো বদল দরকার ছিল এই টিমে। শিখর ধবনের জায়গায় টেকনিকের দিক থেকে পোক্ত কেএল রাহুল কেন ওপেনিংয়ে নয়? আর দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে অতীতে সফল টিমের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান অজিঙ্ক রাহানে-কে অবশ্যই টিমে রাখতে হতো। সেটা কার জায়গায় তা দেখা টিম ম্যানেজমেন্ট-এর কাজ।

আরও পড়ুন: ২০১৯-এর আইপিএল কি তবে দক্ষিণ আফ্রিকায়?

খবরের কাগজ পড়েই জেনেছি, নির্বাচক প্রধান এমএসকে প্রসাদ এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকায়। আমার জানতে ইচ্ছা করছে, প্রধান নির্বাচক দল গড়ার ব্যাপারে কি কোনও মতামতই দেননি? নাকি তাঁর কথা শোনা হয়নি।

জাতীয় নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের অধিনায়ক হিসেবে আজহারউদ্দিন, সচিন-দের সামলাতে হয়েছে। মনে পড়ে যাচ্ছে, আমার নির্বাচক থাকার সময় শ্রীলঙ্কা সফরের কথা। ভারতের কোচ তখন মদনলাল। সে বার আমরা দলে রেখেছিলাম ওড়িশার ক্রিকেটার দেবাশিস মোহান্তি-কে। আমরা তখন সফরকারী দলের সঙ্গে বিদেশ যেতে পারতাম না। ফলে কথাবার্তা চলত টেলিফোনেই। কলম্বোয় প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে টেস্টের আগে মদনলাল ফোন করে বলল, মোহান্তিকে খেলাতে চায়। আমি পত্রপাঠ সেই আবেদন নাকচ করে দিই। বলেছিলাম, প্রেমদাসার পিচ ব্যাটিং সহায়ক। এখানে মোহান্তি নয়। সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা করেছিল ন’শো রান। পরের ম্যাচ ছিল ক্যান্ডি-তে। সেখানে পিচ একটু স্যাঁতসেঁতে থাকে। আমরা মোহান্তিকে ওখানে খেলাতে বলি। মোহান্তিও চার উইকেট পায়। নির্বাচকরা যদি দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরতে যান, তা হলে আলাদা কথা। কিন্তু বিদেশ সফরে টিমের সঙ্গে থাকলে তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভারতীয় দলের স্বার্থে।

সোমবার সারাদিনে পড়ল ১৮টা উইকেট। যার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার আটটি। ভারতের দশটি। আর এই ১৮ উইকেটের নব্বই শতাংশই কিন্তু ক্যাচ আউট হয়েছে উইকেটের পিছনে। যার অর্থ বোলাররা বাউন্সের সঙ্গে দু’দিকে সুইংটা ঠিক মতো করাতে পেরেছে নিয়ন্ত্রিত লেংথের মাধ্যমে।

এ দিন ভারতের হয়ে বুমরা ও শামি দারুণ বল করল। আসলে ওরা দু’জনেই স্টাম্প লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বলটা এল মর্নি মর্কেলের হাত থেকে। চেতেশ্বর পূজারাকে ফিরিয়ে দেওয়ার সময়। ভারতের সেরা বলটা করেছে বুমরা। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি-কে। যেখানে বুমরার বলের গতি ও বাউন্স ডুপ্লেসি সামলাতে পারেনি।

ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শিখর ধবনকে জানতে হবে ‘রাইজিং ডেলিভারি’ কী ভাবে সামলাতে হবে। দ্বিতীয় ইনিংসে দরকার ছিল পিচ আঁকড়ে থেকে মারার বলটা আক্রমণ করা। বিরাট কোহালি এবং রোহিত শর্মা সেই শর্ত মেনে খেলাটা ধরেছিল। ওদের কাছ থেকে একটা শতরানের পার্টনারশিপ এলেই ম্যাচ ঘুরে যেত। কিন্তু রোহিত ফিফ্থ স্টাম্পের বল ব্যাটের ভিতরের দিকে কানায় লাগিয়ে উইকেটে টেনে এনে কুৎসিত আউট হল। রোহিতকে বুঝতে হবে, সাদা বল আর লাল বলের তফাত। সাদা বল কিন্তু বেশি সুইং করে না।

এ দিন ব্যাটে রান না পেলেও দুই ইনিংস মিলিয়ে দশটা ক্যাচ ধরে নতুন নজির গড়ল ঋদ্ধিমান সাহা। ওর উইকেটকিপিং নিয়ে বলার কিছু নেই। কিন্তু সাত নম্বরে নেমে ওর ব্যাটে রান দরকার। কারণ ঘাড়ের কাছে কিন্তু নিঃশ্বাস ফেলছে পার্থিব পটেল। এর পরের টেস্টেও ও যদি রান না পায়, তা হলে কিন্তু পার্থিব-কে খেলাও ধ্বনি তোলার লোকের অভাব হবে না। যে কোনও বিদেশ সফরেই প্রথম টেস্টে হারলে দল ব্যাকফুটে চলে যায়। মনোবলে ধাক্কা লাগে। ধাক্কা লাগে টিম স্পিরিটেও। দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে সঠিক দল নির্বাচনের সঙ্গে দরকার ব্যাটিং পারফরম্যান্সে আমূল পরিবর্তন। তার জন্য নেটে কী ভাবে বল ছাড়তে হবে তার অনুশীলন শুরু হোক মঙ্গলবার থেকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy