দিমিত্রি পেত্রাতোস এবং ক্লেটন সিলভা। ছবি: সংগৃহীত।
আইএসএলে মুখোমুখি সাক্ষাতে পাঁচ বার দেখা। পাঁচ বারই জয়। সব মিলিয়ে টানা সাত কলকাতা ডার্বিতে জয়। শনিবার কলকাতা ডার্বির আগে এই পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে এগিয়ে রাখবে এটিকে মোহনবাগানকে। কিন্তু দীর্ঘ দিন যাঁরা ডার্বি দেখেছেন বা খেলেছেন, তাঁরা জানেন, এ ধরনের ম্যাচের আগে পরিসংখ্যান কোনও কাজে লাগে না। সেই দিন যে সবুজ ঘাসে কঠোর মানসিকতা দেখাবে, সেই জিতবে।
খাতায়-কলমে যদি বিচার করা যায়, তা হলে শনিবারের ম্যাচে সে ভাবে কাউকে এগিয়ে রাখা যাবে না। মোহনবাগান তিন বিদেশিকে পাচ্ছে না। ব্রেন্ডন হ্যামিল কার্ড সমস্যায় খেলতে পারবেন না। হুগো বুমোস এবং কার্ল ম্যাকহিউয়ের চোট রয়েছে। তিন বিদেশিই চলতি মরসুমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। জনি কাউকো চোটের জেরে মরসুম থেকেই ছিটকে গিয়েছেন। ফলে শনিবার মূলত দেশি ফুটবলারদের হাতেই থাকবে মোহনবাগানকে জেতানোর ভার।
লিস্টন কোলাসো, মনবীর সিংহরা চলতি মরসুমে ছাপ ফেলতে পারেননি। আগের মরসুমের সাফল্য এ বার দেখাতে পারেননি। কিন্তু ডার্বির মতো একটা ম্যাচে সাফল্য পেলে সমর্থকরা অতীতের পারফরম্যান্স ভুলে যেতে সময় নেবেন না। এই দুই ফুটবলারের কাছে অনেক আশা রয়েছে সমর্থকদের। আক্রমণ ভাগে দিমিত্রি পেত্রাতোস এবং রক্ষণে স্লাভকো দামিয়ানোভিচকেও বাড়তি ভূমিকা নিতে হবে।
ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে শেষ সাতটি ম্যাচে জিতেছে মোহনবাগান। তার মধ্যে ছ’টি ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন প্রীতম কোটাল। পাশাপাশি, তিনি এই মরসুমে বিশাল কায়েথের পর দ্বিতীয় ফুটবলার, যিনি প্রতিটি ম্যাচে খেলেছেন। সেই প্রীতম ডার্বির আগে বলেছেন, “ডার্বি খেলার জন্য কোনও অনুপ্রেরণা লাগে না। ডার্বি দুটো দলের আবেগের লড়াই। ইস্টবেঙ্গলও চাইবে শেষ ম্যাচে জিতে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে। আমরাও চাই তৃতীয় ম্যাচে জিতে ওড়িশার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে খেলতে। এই ম্যাচে ভাল পারফরম্যান্স এক জন ফুটবলারের মানদণ্ড তৈরি করে দেয়।”
মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো বলেছেন, “এই মরসুম অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। এক সময় আমরা লিগ-শিল্ড জেতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অনেক ফুটবলারের চোট আমাদের কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে। অনেকে এ বার ছন্দেও নেই। কিন্তু প্রত্যেকের উপরেই আস্থা রয়েছে। জানি যে কোনও একটা ম্যাচে ওরা হিসাব পাল্টে দিতে পারে। আপাতত লিগের শেষটা ভাল ভাবে করতে চাই।”
ইস্টবেঙ্গলের কাছে হারানোর কিছু নেই। শেষ ম্যাচে মুম্বইকে হারিয়েছে তারা, যারা এ বার অপ্রতিরোধ্য ছিল। দু’বার হারিয়েছে বেঙ্গালুরুকে। জেতার মতো খেলেছে অনেক ম্যাচেই। কিন্তু শেষ দিকে মনোযোগ হারানোর কারণে ম্যাচ হারতে হয়েছে। তবে মুম্বইকে হারানো যে তাদের বাড়তি সুবিধা দেবে, এমনটা মনে করছেন না কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন। বলেছেন, “ডার্বি বিশেষ ম্যাচ। এখানে কে এগিয়ে বা কে পিছিয়ে, তা দিয়ে কিছু বোঝা যায় না।”
মোহনবাগানের তিন বিদেশির না থাকা কি তাঁদের বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে? ইস্টবেঙ্গলের কোচ বলেছেন, “আমার জানার দরকার নেই। নিজের দলের ফুটবলাররা সুস্থ, স্বাভাবিক আছে কিনা, সেটা নিয়েই আমি বেশি মনোযোগী। ওরা প্লে-অফে চলে গিয়েছে। তার জন্য শুভেচ্ছা। আমরা ম্যাচটা জিততেই নামব।” ইস্টবেঙ্গলে চোট-আঘাতের কোনও সমস্যা আপাতত নেই। পুরো শক্তির দল নিয়েই নামবে তারা। ক্লেটন, জেক জার্ভিস, নাওরেম মহেশ, প্রত্যেকেই মরিয়া হয়ে রয়েছেন এই ম্যাচে নিজেদের সেরাটা দিতে।
মরসুম থেকে বেশি কিছু পাওয়ার নেই। হতাশ সমর্থকরা ডার্বি বয়কটের ডাক দিয়েছেন। এমনিতেই টিকিট নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ময়দানে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মধ্যে টিকিট নিয়ে উৎসাহও তেমন নেই। এই পরিস্থিতিতে শনিবার ডার্বি জিততে পারলে, কনস্ট্যান্টাইন এবং তাঁর দল হয়তো সমর্থকদের সেরা উপহার দিতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy