আইপিএলের প্রথম ৪০টি ম্যাচে ১১১টি ক্যাচ ফেলেছেন বিভিন্ন দলের ক্রিকেটারেরা। ২০২০ সালের পর এত বেশি ক্যাচ পড়েনি কোনও আইপিএলে। ফিল্ডারেরা রাতের দিকে শিশিরে ভেজা বল ধরতে সমস্যা পড়ছেন, এমন নয়। ম্যাচগুলির প্রথম ইনিংসেও প্রচুর ক্যাচ ধরতে পারছেন না তাঁরা।
আইপিএলে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চারটি করে ক্যাচ ফেলেছেন ট্রিস্টান স্টাবস এবং খলিল আহমেদ। অনেক সহজ ক্যাচও পড়তে দেখা যাচ্ছে এ বারের আইপিএলে। যা দেখে বিস্মিত হচ্ছেন ধারাভাষ্যকারেরা। ক্রিকেটপ্রেমীরাও। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি চারটি ক্যাচের একটি ফেলে দিয়েছেন ক্রিকেটারেরা। শুধু তাই নয়, ফিল্ডিংয়ে রান গলানো এবং রান আউটের সুযোগ নষ্টের পরিমাণও অনেক বেড়েছে। অথচ আইপিএলের প্রতিটি দলেই রয়েছেন বিশেষজ্ঞ ফিল্ডিং কোচ।
ক্রিকেট মহলে যাঁরা ভাল ফিল্ডার হিসাবে পরিচিত, তেমন ক্রিকেটারেরাও এ বার একাধিক ক্যাচ ফেলেছেন। ৫৫ বলে ১৪১ রানের ইনিংসে দু’বার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান অভিষেক শর্মা। রাজস্থানের ক্রিকেটারেরা বেঙ্গালুরুর দুই ওপেনার ফিল সল্ট এবং বিরাট কোহলির ক্যাচ ফেলে দেন। এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত দু’টি স্টাম্প আউটের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। তার মধ্যে একটি করেছেন পন্থ। তিনটি ক্যাচও ফেলেছেন লখনউ অধিনায়ক। আর কোনও উইকেটরক্ষক একগুলি ক্যাচ ফেলেননি।
ক্যাচ ধরার ব্যর্থতার ক্ষেত্রে সকলের উপরে রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। আটটি ম্যাচে ২৭টি ক্যাচের ১৬টিই ফেলে দিয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। সাফল্যের হার ৬২.৭ শতাংশ। রান আউটের সুযোগ ১৩ বার নষ্ট করেছে চেন্নাই। ধোনিদের মিস ফিল্ডিং হয়েছে ২৬ বার।
চেন্নাইয়ের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। আটটি ম্যাচে ৩৩টি ক্যাচের মধ্যে ১৫টি ফেলে দিয়েছেন দিল্লির ক্রিকেটারেরা। সাফল্যের হার ৬৮.৭ শতাংশ। ১৪ বার রান আউট করার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন তাঁরা। মিস ফিল্ডিং করেছেন ২৮ বার।
তৃতীয় স্থানে পঞ্জাব কিংস। আটটি ম্যাচে ২৯টি ক্যাচের মধ্যে ১৩টি ফেলে দিয়েছেন শ্রেয়স আয়ারেরা। সাফল্যের হার ৬৯ শতাংশ। ২০ বার রান আউটের সুযোগ নষ্ট এবং ২৩ বার মিস ফিল্ডিং করেছেন পঞ্জাবের ক্রিকেটারেরা।
চতুর্থ স্থানে লখনউ সুপার জায়ান্টস। ন’টি ম্যাচে ৩৭টি ক্যাচের ১৪টি ধরতে পারেননি ঋষভ পন্থেরা। সাফল্যের হার ৭২.৫ শতাংশ। ২২ বার রান আউট করার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তাঁরা। লখনউয়ের ক্রিকেটারদের মিস ফিল্ডিংয়ের সংখ্যা ৩৫।
ব্যর্থতার নিরিখে পঞ্চম স্থানে রয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। আটটি ম্যাচে ৩১টি ক্যাচের মধ্যে ১১টি ধরতে পারেননি সঞ্জু স্যামসনেরা। সাফল্যের হার ৭৩.৮ শতাংশ। ১৭ বার রান আউটের সুযোগ নষ্ট করেছে রাজস্থান। রাজস্থানের ক্রিকেটারেরা মিস ফিল্ডিং করেছেন ২৬ বার।
ক্যাচ ধরার ব্যর্থতায় ষষ্ঠ স্থানে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। সাতটি ম্যাচে ২৮টি ক্যাচের ন’টি ফেলেছেন প্যাট কামিন্সেরা। সাফল্যের হার ৭৫.৬ শতাংশ। ১৩ বার রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন তাঁরা। হায়দরাবাদের মিস ফিল্ডিংয়ের সংখ্যা ২৫।
হায়দরাবাদের পর পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে থাকা গুজরাত টাইটান্স। তারা আটটি ম্যাচ খেলে ৪১টি ক্যাচের মধ্যে ১১টি ফেলেছে। সাফল্যের হার ৭৮.৮ শতাংশ। সপ্তম স্থানে রয়েছেন শুভমন গিলেরা। ১৮টি রান আউটের সুযোগ নষ্ট করেছে গুজরাত। শুভমনদের মিস ফিল্ডিংয়ের সংখ্যা ২১।
হারের ভার বেশি হলেও ক্যাচ ধরার সাফল্যে যুগ্ম ভাবে অষ্টম স্থানে রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আটটি ম্যাচ খেলে কেকেআর ৩৫টি ক্যাচের মধ্যে সাতটি ক্যাচ ফেলেছে। সাফল্যের হার ৮৩.৩ শতাংশ। ১২ বার রান আউটের সুযোগ নষ্ট করেছেন অজিঙ্ক রাহানেরা। কলকাতার মিস ফিল্ডিংয়ের সংখ্যা ১৮।
যুগ্ম ভাবে অষ্টম স্থানে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুও। আটটি ম্যাচ খেলে বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটারেরা ৩৫টি ক্যাচের মধ্যে সাতটি ক্যাচ ফেলেছেন। সাফল্যের হার ৮৩.৩ শতাংশ। ১৯টি রান আউটের সুযোগ নষ্ট করেছেন রজত পাটিদারেরা। বেঙ্গালুরুর মিস ফিল্ডিংয়ের সংখ্যা ৩১।
ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। হার্দিক পাণ্ড্যেরা ৮৩.৬ শতাংশ ক্যাচ ধরেছেন। তাঁদের মিস ফিল্ডিংয়ের সংখ্যাও সবচেয়ে কম ১৪টি। আটটি ম্যাচ খেলে মুম্বই ৪১টি ক্যাচের মধ্যে ধরতে পারেনি আটটি। ২৪টি রান আউটের সুযোগ নষ্ট করেছে তারা। ১০টি দলের মধ্যে সবচেয়ে ভাল ফিল্ডিং এখনও পর্যন্ত করেছে মুম্বই।
আরও পড়ুন:
এ বারের আইপিএলে জয়ী দলগুলি ৫৬টি ক্যাচ ফেলেছে। সাফল্যের হার ৭৭.৮ শতাংশ। পরাজিত দলগুলির ফেলে দেওয়া ক্যাচের সংখ্যা ৪৯টি। সাফল্যের হার ৭৩.৩ শতাংশ। দিল্লি ক্যাপিটালস এবং রাজস্থান রয়্যালসের মধ্যে টাই হওয়া ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছ’টি ক্যাচ পড়েছিল। চারটি ক্যাচই ফেলেন দিল্লির ক্রিকেটারেরা।