পিচ পরীক্ষা। শেষ টেস্ট খেলতে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে। ছবি: গেটি ইমেজেস।
১৬৪ হেক্টর আয়তনের বিরাট একটা পাবলিক পার্ক। তারই একফালি অংশে, মানে হ্যাগলি ওভালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে চিরবিদায় জানাতে চলেছেন ব্রেন্ডন ম্যাকালাম।
ঘরের মাঠে ঘরের তারকা ছেলে শেষ বারের মতো দেশের হয়ে নামছে, স্বাভাবিক ভাবেই টেস্ট ঘিরে গোটা নিউজিল্যান্ড উত্তেজিত। টেস্টের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ম্যাচের তৃতীয় দিন আবার ভয়াবহ ক্রাইস্টচার্চ ভূমিকম্পের পঞ্চম বার্ষিকী। যে ভূমিকম্পে প্রাণ হারান শহরের প্রায় দুশো মানুষ। এক-এক সময় তাই মনে হতেই পারে, এই টেস্টে ক্রিকেট গৌণ। মুখ্য আবেগই।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে ম্যাকালাম অবশ্য আবেগ নয়, এগিয়ে রাখছেন ক্রিকেটকে। সিরিজে ০-১ পিছিয়ে থাকা দলের অধিনায়ক মনে করছেন, ক্রিকেটের স্বার্থে বহির্বিশ্বকে মন থেকে মুছে ফেলাটা ‘খুব সহজ’। ম্যাকালাম বলছেন, ‘‘আমরা একটা কাজ করতে নামছি। যে কোনও ভাবে সিরিজ ড্র করতে হবে। এই ম্যাচ উপভোগ করা ছাড়া আর কিছু নিয়ে ভাবছি না। ম্যাচ শেষ হলে তার পর বাকি সব কিছু নিয়ে ভাবব।’’
প্রথম টেস্টে সিমার-বন্ধু উইকেটে চার দিনে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় টেস্টেও সবুজ উইকেট থাকছে ক্রাইস্টচার্চে। ডাগ ব্রেসওয়েল এবং পিটার সিডলের চোটের জন্য দু’দলেই বদল হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে তাদের সবচেয়ে সফল বোলার ম্যাট হেনরিকে ফেরাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। অন্য দিকে সিডলের বদলি হিসেবে খেলবেন জেমস প্যাটিনসন।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ অবশ্য সবুজ উইকেটকে বিশেষ পাত্তা দিচ্ছেন না। ‘‘মনে হয় না এই পিচটা নিয়ে আলাদা করে ভাবার কিছু আছে। আমি শুধু চাই যাতে আমার ব্যাটসম্যানরা এই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। এখানে যে সবুজ পিচ পাব, সেটা তো সবাই আগে থেকেই জানতাম,’’ বলছেন স্মিথ।
ম্যাকালাম আবার ঠিক করে ফেলেছেন, টস জিতলে আগে বোলিং নেবেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলছিলেন, ‘‘উইকেটে বেশ ভাল ঘাস আছে। দুটো টিমের বোলাররাই এই উইকেটে বল করতে মুখিয়ে থাকবে। ব্যাট হাতে এই পিচে সময় কাটানো খুব একটা সুখকর হবে না।’’
দুই অধিনায়ক যতই ক্রিকেটকে এগিয়ে রাখুন, ক্রিকেটবিশ্বের বেশি আগ্রহ সম্পূর্ণ অক্রিকেটীয় একটা ব্যাপার নিয়ে— শেষ টেস্ট খেলে ওঠা ম্যাকালামের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? তিনি কাঁদবেন, না কি আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন? ইংল্যান্ডের এক বুকি যেমন বাজি ধরেছেন, টেস্ট শেষে ম্যাকালামের চোখে জল দেখা যাবেই যাবে। সেই প্রশ্নে ম্যাকালাম আপাতত উত্তাপহীন জবাব দিয়েছেন, ‘‘সেটা নির্ভর করছে কতক্ষণ ব্যাট করি, তার পর। দেখা যাক কী হয়।’’ শেষ টেস্টে কি দেশকে তাঁর ট্রেডমার্ক বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেবেন? ম্যাকালামের উত্তর, ‘‘ক্রিজে না নামা পর্যন্ত তো বলতে পারব না কী রকম ইনিংস খেলব!’’
আবেগকে ব্যাকফুটে পাঠানোর মধ্যেও অবশ্য একটা ব্যাপারে তাঁর তৃপ্তি গোপন করেননি নিউজিল্যান্ডের ক্যারিশমা সম্পন্ন তারকা। সেটা হল, ঘরের মাঠে টেস্ট খেলে আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শেষ করার তৃপ্তি। তিনি বলেছেন, ‘‘নিউজিল্যান্ড প্লেয়ারদের কাছে টেস্ট ক্রিকেটের গুরুত্ব, মর্যাদা আলাদা। ক্রিকেটের সবচেয়ে বিশুদ্ধ ফর্ম্যাট খেলে বিদায় নেওয়াটা তাই খুব আনন্দের। তা-ও আবার নিজের ঘরের মাঠে। ব্যাপারটার মধ্যে একটা রোম্যান্স আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy