Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

সংখ্যালঘুদের জন্য পাঁচ প্রকল্প কেন্দ্রের

এক হাতে কোরান, অন্য হাতে কম্পিউটার। নির্বাচনী প্রচারে পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘুদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই লক্ষ্য পূরণে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন তিনি। মোদীর নির্দেশে কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক কয়েক দিনের মধ্যে পাঁচ দফা প্রকল্প ঘোষণা করতে চলেছে।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০৪:০৫
Share: Save:

এক হাতে কোরান, অন্য হাতে কম্পিউটার।

নির্বাচনী প্রচারে পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘুদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই লক্ষ্য পূরণে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন তিনি। মোদীর নির্দেশে কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক কয়েক দিনের মধ্যে পাঁচ দফা প্রকল্প ঘোষণা করতে চলেছে।

সেগুলি কী? এক, দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেই সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটার দেওয়া হবে। তাঁদের উচ্চশিক্ষার জন্য থাকবে বিশেষ স্কলারশিপের ব্যবস্থা। দুই, হাতের কাজ শিখিয়ে রোজগার বাড়াতে চালু করা হতে পারে ‘উস্তাদ’ নামে একটি প্রকল্প। প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কারিগরকে ‘উস্তাদ’ উপাধিও দেওয়া হবে। তিন, ছোটখাটো ব্যবসা করে উপার্জনের পথ করে দেওয়ার জন্য মুসলিম মহিলাদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হতে পারে ‘রোশনি’। তাঁদের হাতের কাজ শেখানোর জন্য গোটা দেশে ৭০০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও তৈরি করা হবে। চার, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাঁচে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আরও ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয় গড়া হবে। পাঁচ, দেশে মোট ৬ লক্ষ একর জমিতে ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। সরকারের বক্তব্য, ওই জমির অনেকাংশ নানা দখলদারের হাতে চলে গিয়েছে। সে সব হটিয়ে সেখানে মুসলিমদের জন্য শিক্ষা স্বাস্থ্য ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে।

মোদী সরকারের বক্তব্য, কংগ্রেস বরাবর সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে দেখে এসেছে। ভোটের জন্য তোষণ করে এসেছে। কিন্তু তাঁদের উন্নয়নের জন্য ভাবেনি। ইদানীং কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশও নিজেদের এই ত্রুটির কথা স্বীকার করছেন। সম্প্রতি এ কে অ্যান্টনি এ নিয়ে মুখও খুলেছেন। এই তোষণ-নীতির বিরুদ্ধে মোদী ভোটের আগে থেকেই সরব ছিলেন। কিন্তু তিনিই এখন সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য যে প্রকল্প নেওয়ার কথা ভাবছেন, সেটা তোষণ নয় বলেই দাবি করছে বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, মোদী যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, সে সময় তাঁর সরকারে আলাদা কোনও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর ছিল না। তিনি উন্নয়নে সকলকেই শরিক করতেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মোদী বুঝেছেন, এত দিনের অবহেলায় অনেক রাজ্যে সংখ্যালঘুরা পিছিয়ে রয়েছেন। তাঁদের সেই অবস্থা থেকে তুলে আনার জন্য প্রথম দিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। বিজেপির ইস্তাহারেও মাদ্রাসা আধুনিকীকরণের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এর মানে তোষণ নয়।

কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী নাজমা হেপতুল্লা সংখ্যালঘু নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কয়েক দফা আলোচনা সেরে ফেলেছেন। ওয়াকফ বোর্ডের একটি বিল সংসদে পড়ে রয়েছে। সেটি এখন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিচারাধীন। নাজমা বলেন, “বিলটি পাশ হলে বিপুল পরিমাণ ওয়াকফ জমিতে অনৈতিক কব্জা হঠানো সম্ভব হবে। সেই সম্পদ সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে।”

সংখ্যালঘু নেতৃত্ব এ নিয়ে কী বলছেন? অল ইন্ডিয়া উলেমা কাউন্সিলের জেনারেল সেক্রেটারি মহমুদ দরিয়াবাদির দাবি, ওয়াকফের সম্পত্তিতে অনেক জায়গায় সরকারই কব্জা করে বসে আছে। সেখানে কোথাও পুলিশ স্টেশন, কোথাও পুরসভার দফতর হয়েছে। তাঁর আরও বক্তব্য, “মাদ্রাসার আধুনিকীকরণের বিষয়টি আমাদের উপরে ছেড়ে দেওয়াই ভাল। সরকারকে বরং দেখতে হবে, কেন পঞ্চম, অষ্টম বা দশম শ্রেণির পর ছাত্ররা পড়ছে না। সেই লক্ষ্যে যদি উন্নয়ন করা হয়, তা হলে আপত্তি নেই।” অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের মুখপাত্র আবদুর রহমান আনজারিয়ার মতে, “সরকারকে মাথায় রাখতে হবে সংখ্যালঘুরা যাতে চাকরি পান। চাকরিই যদি পাওয়া না-যায়, তাহলে শিক্ষার মান বাড়িয়ে কী হবে?”

উত্তরে মন্ত্রকের তরফে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, সরকার সব দিক মাথায় রেখেই এগোচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

diganta bandyopadhyay central project for muslims
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy