Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Opposition Alliance

কংগ্রেস ব্যস্ত ভোটে, ‘ইন্ডিয়া’ তাই থমকে

বিরোধী শিবিরের অকংগ্রেসি সদস্যেরা অনেকেই মনে করছেন, কংগ্রেস আসলে ভোটে ভাল ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে। তার পর আসন সমঝোতার দর কষাকষিতে তারা নিজেদের দাদাগিরি কিছুটা হলেও বেশি দেখাতে পারবে।

বিরোধী জোট। —ফাইল চিত্র।

বিরোধী জোট। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৫
Share: Save:

কিছু দিন আগেও সে জোরে ছুটছিল। কিন্তু এখন দৃশ্যতই থমকে রয়েছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার চাকা। পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের আগে এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গোটা নভেম্বর মাসে ‘ইন্ডিয়া’র কোনও বৈঠক বা জনসভা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কমিটি অনেকগুলি তৈরি হয়েছে, কিন্তু সেগুলির সামনে আপাতত কোনও কর্মসূচি নেই। তৃণমূলের পক্ষ থেকে তো তিনটি কমিটিতে এখনও প্রতিনিধিই পাঠানো হয়নি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আজ এই ‘উদ্যমহীনতা’র জন্য সরাসরি কংগ্রেসকে দায়ী করে বলেছেন, “ইন্ডিয়ার কোনও কাজই এখন করা যাচ্ছে না। কারণ কংগ্রেস পাঁচ রাজ্যের ভোট নিয়ে অতি ব্যস্ত। আমরা (বিরোধী দলগুলি) সবাই মিলে কংগ্রেসকে শক্ত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা বিধানসভা ভোটগুলির জন্য অন্য কিছুতে উৎসাহী নয়।”

তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আপ-এর অরবিন্দ কেজরীওয়াল কংগ্রেসের উপর চাপ দিয়েছিলেন, দ্রুত রাজ্যে রাজ্যে আসন সমঝোতা শেষ করার জন্য। তৃণমূলের বক্তব্য ছিল, অক্টোবরের ৩১ তারিখের মধ্যে আসন সমঝোতা শেষ করা হোক। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কিছুই হয়নি। মাঝে রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে, শরদ পওয়ারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে কথাবার্তায় ৪-৫ নভেম্বর নাগপুরে ইন্ডিয়া-র প্রস্তাবিত বৈঠক নিয়ে কথা হয়েছিল। কিন্তু ৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের প্রায় আড়াই হাজার পঞ্চায়েতে নির্বাচন রয়েছে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত নাগপুরে। সেই কারণে ওই সময় ইন্ডিয়া-র বৈঠক করা যাবে না বলে পওয়ার ইন্ডিয়া-র নেতাদের জানিয়ে দেন। এর পর ঠিক হয় ১২ নভেম্বর দীপাবলির আগে বৈঠক হবে।

কিন্তু এখন সূত্রের খবর, দীপাবলির আগে কিছুই হবে না। কারণ ৭ তারিখ থেকেই ভোট শুরু হয়ে যাচ্ছে। দীপাবলির ঠিক পরেই চার রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে। ৩ ডিসেম্বর ফল ঘোষণা হবে। কংগ্রেস নেতা সৈয়দ নাসির হুসেন আজ খোলাখুলি বলেওছেন “ইন্ডিয়া জোটে ২০২৪ নির্বাচনের জন্য আসন সমঝোতার সিদ্ধান্ত হয়ে রয়েছে। মুম্বইয়ের বৈঠক আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, সেই সিদ্ধান্তও হয়ে গিয়েছিল। কোন স্তরে হবে না হবে, তা নিয়ে কথা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কোনও রাজ্যে এখনও কোনও আলোচনা শুরু হয়নি। পাঁচ রাজ্যে ভোটের পরেই এই আলোচনা শুরু হবে। রাজ্যভিত্তিক আসন সমঝোতা নিয়েও আলোচনা হবে। বিধানসভা ভোট প্রক্রিয়া শেষ হলেই আমরা এগুলি রূপায়ণের কাজ শুরু করব।”

পাশাপাশি হুসেন এও বলেন, “কংগ্রেস পাঁচ রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের বিরুদ্ধে লড়ছে না। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে। তেলঙ্গনায় লড়ছে বিআরএস-এর বিরুদ্ধে। যারা ইন্ডিয়া জোটে নেই। ২০২৪-এর ভোটের পাঁচ মাস আগে এই নির্বাচনগুলিতে লড়াইটাও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জরুরি। লালু প্রসাদ যেমন চেয়েছেন, আমাদের ইন্ডিয়া জোটের সম্মেলন হবে পটনার গান্ধী ময়দানে।” নীতীশের মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিহারের প্রদেশ সভাপতি অখিলেশ প্রসাদ সিংহ বলেছেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আজকে যা বলেছেন, তা সিপিআই-এর সম্মেলনে বলেছেন। যত দ্রুত সম্ভব মোদীকে সরানোর জন্য উনি ব্যগ্র। সেই উৎকণ্ঠা থেকেই বলেছেন। ভুল কিছু বলেননি। কংগ্রেস এখন রাজ্যগুলিতে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। তার পর কংগ্রেস ফের ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে যোগ দেবে।”

তবে বিরোধী শিবিরের অকংগ্রেসি সদস্যেরা অনেকেই মনে করছেন, কংগ্রেস আসলে ভোটে ভাল ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে। তার পর আসন সমঝোতার দর কষাকষিতে তারা নিজেদের দাদাগিরি কিছুটা হলেও বেশি দেখাতে পারবে। একই সঙ্গে এটাও তাঁরা বলছেন, কংগ্রেস তথা রাহুল গান্ধী যে ভাবে আদানিকে সামনে রেখে একমুখী আক্রমণ করে চলেছেন, তাতে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ২০১৯-এর ভোটের আগেও রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে আক্রমণ শানিয়ে বিশেষ লাভ করতে পারেনি কংগ্রেস। তৃণমূল মনে করে, বাজারে আগুন লাগা দাম, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্বের মতো মানুষের জীবনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত সমস্যাগুলিকে একই ভাবে সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন।

অন্য বিষয়গুলি:

Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy