Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

শত্রু সম্পত্তি আইন নিয়ে ৫ অধ্যাদেশ, অসন্তুষ্ট প্রণব

গোটা বছরে সংসদের তিনটি অধিবেশন কেটে গেল। কিন্তু সংসদে এড়িয়ে পাঁচ বার একই বিল অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিয়ে এল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তাতে সই করলেও অসন্তুষ্ট রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৪০
Share: Save:

গোটা বছরে সংসদের তিনটি অধিবেশন কেটে গেল। কিন্তু সংসদে এড়িয়ে পাঁচ বার একই বিল অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিয়ে এল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তাতে সই করলেও অসন্তুষ্ট রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, ‘শত্রু সম্পত্তি আইনে’র অধ্যাদেশটি সই করার সময়ে রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন পাঁচ বার একই বিল অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিয়ে আসা বেনজির ঘটনা। এটি দৃষ্টান্ত হওয়াও উচিত নয়। প্রশ্ন হল, এমন কী আছে এই বিলে? কেনই বা সংসদ এড়িয়ে বার বার এটিকে অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিয়ে আসতে হচ্ছে?

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, ১৯৬২, ১৯৬৫, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে দেশ ছেড়ে যাঁরা পাকিস্তান ও চিনে চলে গিয়েছেন তাঁদের সম্পত্তি এখন দখল করে নিয়েছে সরকার। ১৯৬৮ সালেই এই নিয়ে আইন তৈরি হয়। গোটা দেশে এই

ধরনের ‘শত্রু সম্পত্তি’ রয়েছে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার। আর যার বাজার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। এই বিশাল পরিমাণ সম্পত্তি দাবি করতে এখন সক্রিয় সেই সব পরিবারের উত্তরাধিকারীরা। যাঁরা জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক। বছর পাঁচেক

আগে বিতর্ক তৈরি হয় রাজা মেহমুদাবাদের সম্পত্তি কার হাতে থাকবে তা নিয়ে। আদালতে মামলা জিতে যান রাজা মেহমুদাবাদের উত্তরাধিকারীরা। তাঁদের হাতে ওই সম্পত্তি যাওয়া আটকাতেই সরকার ১৯৬৮ সালের আইনটি সংশোধন করে অধ্যাদেশ আনে।

মন্ত্রক জানিয়েছে, বিলটি লোকসভায় পাশ হয়ে গেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে তা থমকে যায় রাজ্যসভায়। বিরোধী দলগুলির দাবিতে সেটি রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতেও পাঠানো হয়।

তার সুপারিশ মেনে ফের অধ্যাদেশ আনা হয়। এ বারের শীতকালীন অধিবেশন না চলার জন্য আইনটি আনাই যায়নি। সে কারণেই পাঁচ বার অধ্যাদেশ আনতে হয়েছে সরকারকে। প্রশ্ন হল, এ বারের শীতকালীন অধিবেশনেও হট্টগোলের মধ্যেও প্রতিবন্ধীদের অধিকার সংক্রান্ত বিল সর্বসম্মতিতে পাশ হয়েছে রাজ্যসভায়। তাহলে এই বিল নিয়ে সমস্যা কোথায়?

বিজেপি সূত্রের দাবি, আসলে এই সম্পত্তি যাঁরা দাবি করছেন তাঁদের সিংহভাগই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। আর বেশিরভাগ বিরোধী দলই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে তাঁদের চটাতে চায় না। সিলেক্ট কমিটিতেও কংগ্রেস, এনসিপি, তৃণমূল, বাম দলগুলি এর বিরোধিতা করেছে। আর এই বিলের সমর্থনে ছিল বিজেপি ও এডিএমকে-র মতো দল। ইউপিএ আমলের আগে রাজা মেহমুদাবাদের উত্তরাধিকারীদের কৌঁসুলি ছিলেন পি চিদম্বরম, সলমন খুরশিদের মতো কংগ্রেস নেতারা। বিরোধীদের একাংশও স্বীকার করে নিচ্ছেন তাঁরা এই বিল সমর্থন করেননি। এক বিরোধী নেতার বক্তব্য, ‘‘যাঁরা এ দেশের নাগরিক তাঁদের কী করে পূর্বপুরুষের সম্পত্তির ভাগ থেকে বঞ্চিত করা যায়? এ তো নাগরিকত্বের শর্তেরই বিরোধী।’’ বিরোধীদের এই মনোভাবের কারণেই এখনও পর্যন্ত বিলটিকে রাজ্যসভার বৈতরণী পার করাতে না পেরে বার বার অধ্যাদেশের পথে হাঁটতে হচ্ছে কেন্দ্রকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Pranab Mukherjee President Enemy Property Act
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy