গন্ডারের চোরাশিকার, মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সঙ্ঘাত রুখতে ১০ দফা কর্মসূচি করবে অসম। আজ বিধানসভায় এ কথা জানান বনমন্ত্রী প্রমীলারানি ব্রহ্ম। তিনি জানান, গত পাঁচ বছরে বন্যপ্রাণীর হানায় ৪২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মানুষের আক্রমণে মারা গিয়েছে ১১৭টি প্রাণী। তার মধ্যে চিতাবাঘের সংখ্যা ২৭টি, হাতি ৮৫টি, রয়্যাল বেঙ্গল ৫টি। অন্য দিকে ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত শিকার হওয়া গন্ডারের সংখ্যা ১৩৮টি। তার মধ্যে বর্তমান সরকারের আমলে শিকার হয়েছে ১০টির। একই সময়ে ৫১৬ জন চোরাশিকারি ধরা পড়েছে। শিকারচক্রে জড়িত অভিযোগে ধরা পড়েছে তিন বনরক্ষী।
প্রমীলারানি জানান, বন্যপ্রাণী ও মানুষের সংঘাত রুখতে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে ‘প্রতিরোধ বাহিনী’ গড়েছে প্রশাসন। তাদের দেওয়া হয়েছে টর্চ, শব্দবাজি, কেরোসিন। হাতি-উপদ্রুত এলাকায় সৌরশক্তিচালিত বিদ্যুৎ-বেড়া বসানো হচ্ছে। বনের ফাঁকা এলাকায় হাতির পছন্দের গাছ লাগানো হবে। প্রয়োজনে কুনকি হাতি দিয়ে বুনো হাতিদের নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। বনকর্মীরা নিয়ম করে টহল দেবেন।
জেলা পর্যায়ে জেলাশাসক, এসপি, আবগারি বিভাগ, পঞ্চায়েত, গ্রামরক্ষী বাহিনী মিলে কমিটি গড়া হবে। তৈরি হবে ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’। তার মাধ্যমে হাতির গতিবিধির খবর দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। প্রধান মুখ্য বনপাল গুয়াহাটিতে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খুলেছেন। প্রতি জেলায় তৈরি হচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশন টিম। জনসচেতনতা বাড়াতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও প্রচার মাধ্যমের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
বনমন্ত্রী হিসেব দেন, ২০১৬ সালের বন্যায় ৩২টি গন্ডার, ৪০৮টি হড ডিয়ার, ১৬টি বারশিঙা, ১৩টি বুনো মোষ, ২৪টি বুনো শুয়োর, ৬টি সম্বর, একটি হাতি, ৮টি শজারু, একটি অজগর, একটি হগ ব্যাজার, একটি পেলিক্যান পাখি মারা গিয়েছে। গত পাঁচ বছরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া হাতির সংখ্যা ১০টি। ১২টি হাতি ট্রেনের ধাক্কা ও দুর্ঘটনায় মরেছে।
মন্ত্রী জানান, বন দফতরে মঞ্জুরি পাওয়া পদের সংখ্যা ১২ হাজার ৭৪১টি। তার মধ্যে বর্তমানে কর্মরত ৯ হাজার ৪৮৭ জন। বাকি শূন্যপদ দ্রুত পূরণের চেষ্টা করছে দফতর। ১ হাজার ৫১৪ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। বন বিভাগের ১২টি কোষাগারে জমা থাকা ২ হাজার ৩৮টি খড়্গের মধ্যে ১৩টি বাদে সবগুলির পরীক্ষা করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। তার মধ্যে নকল পাঁচটি খড়্গ।
প্রমীলারানি জানিয়েছেন, চোরাশিকার রুখতে বন সুরক্ষা বাহিনীকে এ কে ৪৭ ও অন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কেনা হয়েছে ২০০টি এসএলআর। নিয়োগ হবে অতিরিক্ত গৃহরক্ষী বাহিনী। চোরাশিকার আটকাতে ‘অ্যান্টি রাইনো পোচিং টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হবে। বনলাগোয়া গ্রামে ‘ইকো ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ক প্রচার চালিয়ে মানুষকে সংরক্ষণ ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করা হবে। গন্ডার হত্যার মামলার শুনানি দ্রুত করতে ১০টি ফাস্ট ট্র্যাক আদালত তৈরি হবে। আইন সংশোধন করে চোরাশিকারির যাবজ্জীবন সাজার ধারা তাতে যোগ করা হয়েছে। কাজিরাঙায় বসানো হয়েছে ‘ইলেকট্রনিক আই’। মিলেছে ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারির অনুমতি। চাষের খেতে কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করতে গ্রামে গ্রামে সচেতনতা সভা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy