Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Central Vista Project

সেন্ট্রাল ভিস্টা আর্জি খারিজের চেষ্টা

এমনিতেই করোনা ঠেকাতে গত মাসের শেষ দিক থেকে টানা লকডাউন চলছে রাজধানীতে। আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। রাজধানীর শ্মশানে মৃতদেহের দীর্ঘ সারি। জায়গা নেই কবরস্থানে।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০৬:১৫
Share: Save:

সমালোচনার ঝড় বইছে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও। তার মধ্যেই করোনা অতিমারিকে অগ্রাহ্য করে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের কাজ চালু রেখেছে কেন্দ্র। লকডাউনেও যাতে কাজ বন্ধ না হয়, সে জন্য একে জরুরি পরিষেবার তকমা দিয়ে কাজ চালু রাখা হয়েছে। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে আগামিকাল, বুধবার থেকে দিল্লি হাই কোর্টে শুনানি শুরু হচ্ছে। সেখানে হলফনামা দিয়ে কেন্দ্র জানাল, ‘আইনের অপব্যবহার’ করে ওই প্রকল্প আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, সেন্ট্রাল ভিস্টা নিয়ে কেন্দ্রের যা আগ্রহ, তার অর্ধেক যদি তারা টিকাকরণ নিয়ে দেখাত, তা হলে দেশে মৃত্যুমিছিল হয়তো ঠেকানো যেত।

এমনিতেই করোনা ঠেকাতে গত মাসের শেষ দিক থেকে টানা লকডাউন চলছে রাজধানীতে। আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। রাজধানীর শ্মশানে মৃতদেহের দীর্ঘ সারি। জায়গা নেই কবরস্থানে। রাস্তার ধারের কাঠকুটোও তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহ সৎকারের জন্য। তার মধ্যেই কর্মব্যস্ত ইন্ডিয়া গেটের দু’ধারে রমরমিয়ে কাজ চলছে নরেন্দ্র মোদীর সাধের সেন্ট্রাল ভিস্টার। ২০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের জন্য রাস্তার দু’ধারের ৫০-৬০ বছরের পুরনো মহীরূহগুলো উপড়ে ফেলে চলছে রাস্তা চওড়া করার কাজ। হইহই করে কাজ চলছে মোদীর বাসভবন বানানোরও। সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে যে! যা দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন সারা বছর শুদ্ধ বাতাসের অভাবে ধুঁকতে থাকা দিল্লিবাসী। সর্বত্র এ নিয়ে সমালোচনায় অবশ্য কর্ণপাত করতে নারাজ মোদী সরকার। বরং তারা এখন ব্যস্ত সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের বিরুদ্ধে আগামিকাল থেকে দিল্লি হাই কোর্টে শুরু হতে চলা শুনানি খারিজের যুক্তি সাজাতে। মঙ্গলবার আদালতে হলফনামায় মোদী সরকার জানিয়েছে, ওই প্রকল্পের কাজ স্থগিত রাখার আর্জি আসলে আইনের অপব্যবহার!

দিল্লিতে লকডাউনের সময়ে নির্মাণকার্য চালাতে গেলে নির্মাণকার্য যেখানে হচ্ছে সেখানেই শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা করার কথা। কিন্তু সেন্ট্রাল ভিস্টায় কর্মরত শ্রমিকদের অন্য এলাকা থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। এতে সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ছে বলে প্রকল্পটির বিরোধিতা করে আদালতে জানিয়েছেন দুই আবেদনকারী।।

আজ কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, দিল্লিতে কার্ফু জারি হওয়ার আগেই ৪০০ জন শ্রমিককে নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৯ এপ্রিল কার্ফু জারি হওয়ার পরে নির্মাণকার্য যেখানে চলছে, সেখানে শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা করা শুরু করে সরকার। যত ক্ষণ না সেই ব্যবস্থা হচ্ছে, তত ক্ষণ শহরের অন্য প্রান্ত থেকে শ্রমিক ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। নির্মাণস্থলে ইতিমধ্যেই ২৫০ জন শ্রমিকের থাকার মতো কোভিড বিধিসম্মত বাসভবন তৈরি হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে চিকিৎসাকেন্দ্র। সেখানে কোভিড পরীক্ষা ও নিভৃতবাসের ব্যবস্থা আছে। ওই বাসভবনের ছবিও পেশ করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের দাবি, যে ভাবে বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে দৌড়োদৌড়ি করেছেন আবেদনকারীরা, তাতে আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পকে ফের আটকে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আর্জি খারিজ করে জরিমানার নির্দেশ দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছে কেন্দ্র।

এই আইনি বিতর্কের মধ্যেই দিল্লির সৌন্দর্যায়নের নামে বিপুল সংখ্যক গাছ কাটা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে নানা স্তরে। এমনিতেই দিল্লির দূষণ মাত্রাতিরিক্ত। এই অবস্থায় সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের নামে গাছ কাটা রুখতে মঙ্গলবার নির্মাণস্থলের কাছে বিক্ষোভ দেখানোর কথা ঘোষণা করেছেন বালিকা পরিবেশ আন্দোলনকারী লিসিপ্রিয়া কাঙ্গুজম। তাঁকে সামাজিক মাধ্যমে সমর্থন করেছেন অসংখ্য মানুষ। কিন্তু মোদী সরকার তাঁদের কথা শুনবে কি?

অন্য বিষয়গুলি:

Central Vista Project
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy