তল্লাশির নাম করে এক দিনমজুরের ঝুপড়িতে ঢুকে তাঁর এক মাসের শিশুসন্তানের মাথা বুটের তলায় পিষে দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজস্থানের অলওয়ালের নউগাঁও থানার রঘুনাথগড় গ্রামে। দিন কয়েক আগের ঘটনাটি নিয়ে সরব হয়েছে রাজস্থানের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। দোষী পুলিশের শাস্তির পাশাপাশি পরিবারটির ক্ষতিপূরণের দাবিও উঠেছে। চাপের মুখে সে দিনের তল্লাশিতে যুক্ত পুলিশদের সকলকে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। তবে কোন পুলিশের বুটের নীচে চাপা পড়ে এক মাসের শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে মুখে কুলুপ পুলিশের। অজ্ঞাতপরিচয় পুলিশদের নামে এফআইআর দায়ের করেছে তারা। বিরোধীদের ও পরিবারের দাবি, মূল অপরাধীকে আড়াল করতে এই চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার এবং পুলিশ।
ঘটনাটি চলতি মাসের গোড়ার দিকে। একটি সাইবার অপরাধের মামলার তল্লাশিতে ভোররাতে নউগাঁও থানার একদল পুলিশ হানা দেয় রঘুনাথগড়ের দিনমজুর ইমরান খানের ঝুপড়িতে। ইমরানের ফোন বলতে একটা বোতাম টেপা সাধারণ ফোন। সেটা নিয়েই সাইবার অপরাধ জগতের মস্ত বড় ‘অপরাধে’ সঙ্গে জড়িত সে, এমনই অভিযোগে তার ঘরে তল্লাশি চালাতে ঢোকে পুলিশ বাহিনী। ইমরান, তার স্ত্রী রাজ়িদা এবং দুই সন্তানকে ঝুপড়ির বাইরে বার করে হেড কনস্টেবল গিরিধারী ও জগবীরের নেতৃত্বে ভিতরে ঢোকে সুনীল, ঋষি ও সাহিদ নামের তিন কনস্টেবল। সে সময় বিছানায় ঘুমোচ্ছিল ইমরান ও রাজ়িদার এক মাসের কন্যাসন্তান আলিসবা। ‘তল্লাশি’র সময় ওই পুলিশদেরই একজন ভারী বুট সমেত দাঁড়িয়ে পড়ে আলিসবা-র মাথার উপরে। কোনও শব্দ করার আগেই মাথা থেঁতলে বিছানাতেই মারা যায় সে।
‘তল্লাশি’ শেষে ফেরার সময়ে সাইবার অপরাধের ‘প্রমাণ’ হিসেবে ইমরানের বোতাম টেপা মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায় পুলিশ বাহিনী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিজেপি-শাসিত রাজস্থানের বিভিন্ন গ্রামে সংখ্যালঘুদের নানা ভাবে নিত্য দিন হেনস্থা করা হয়। শিশুটি মারা না গেলে এই ঘটনাটিও চাপা পড়ে যেত।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)