ছবি সংগৃহীত।
ছেলেদের ‘কুপথে’ যাওয়া নিয়ে তাঁর চিন্তুা নেই। কিন্তু ‘সম্ভ্রম’ রক্ষায় মেয়েদের কখনওই কো-এডুকেশন স্কুলে পাঠানো উচিত নয়।
আফগানিস্তান নয়। এ দেশেই এমন মন্তব্য করলেন জামিয়াত উলেমা-ই-হিন্দ (জেইউএইচ) প্রধান আরশাদ মাদানি। শুধু মুসলিম নয়, অ-মুসলিমদের জন্যও তাঁর পরামর্শ, মেয়ে-বোনেদের কো-এডুকেশন স্কুল বা কলেজে পাঠালে তাদের ‘শালীনতা ভঙ্গ’ হবে, অতএব শুধু মেয়েদের জন্য নির্ধারিত স্কুল বা কলেজে পাঠান!
আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় আসার পরেই ছেলে-মেয়েদের এক সঙ্গে পড়াশোনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। শুধু তা-ই নয়, কোনও পুরুষ শিক্ষক মেয়েদের পড়াতে পারবেন না। ছেলেমেয়েরা অন্য কোথাওই পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করতে পারবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কলেজ, সর্বত্র একই নিয়ম। আজ জেইউএইচ প্রধান আরশাদ মাদানির মন্তব্যে সেই তালিবানি ফতোয়ারই গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে। সংগঠনের বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘অনৈতিকতা ও অশ্লীলতা পৃথিবীর সব ধর্মেই
নিষিদ্ধ। এর থেকেই সমাজে অপরাধের জন্ম হয়।’’
প্রবীণ অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় ফিরে আসায় ভারতের মুসলিম সমাজের একাংশ খুব খুশি। উৎসব করছে তারা। ভয়ানক ব্যাপার। তালিবানের ক্ষমতায় আসা নিয়ে গোটা বিশ্ব চিন্তায়। এ দেশে ভারতীয় মুসলিমদের একাংশের উৎসব করাও কিন্তু কম চিন্তার নয়!’’
৭১ বছর বয়সি অভিনেতা আরও বলেন, ‘‘যাঁরা আনন্দ করছেন, তাঁদের ভেবে দেখা উচিত, তাঁরা কি এখনও প্রাচীন বর্বরতার মধ্যেই থাকতে চান, নাকি ধর্মের সংস্কার চান।’’
এ দেশের বহু জায়গাতে এখনও ধর্ষণের জন্য মেয়েদের দায়ী করা হয়। অপরাধীর বদলে নির্যাতিতাকেই হেনস্থা হতে হয়। মাদানির মন্তব্যেও আজ সেই ইঙ্গিতই মিলেছে। তাঁর মতে, স্কুল-কলেজে ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের মেলামেশাই সমাজে ‘অপরাধ’ ডেকে আনে, অতএব (ছেলেদের নয়) মেয়েদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
মেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিয়ে মাদানির বক্তব্যের প্রসঙ্গে সমাজকর্মী আমির কুরেশি বলেন, হিন্দু-মুসলিম, সব মেয়েরাই এখন অনেক অগ্রগতি করেছে। তাঁরা আইএএস হচ্ছেন, আইপিএস হচ্ছেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন। যদিও এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাবা-মায়ের উচিত মেয়েদের উপর নজর রাখা। যাতে তারা কুপথে না-যায়।’’
যদিও এটা স্পষ্ট হয়নি, মাদানি বা আমির কুরেশিরা কেন শুধুমাত্র মেয়েদের কুপথে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত! কুরেশি আরও বলেন, ‘‘কোনও ছেলে চাইবে না কোনও
অশিক্ষিত মেয়েকে বিয়ে করতে। কিন্তু একই সঙ্গে মেয়েদের ধর্মশিক্ষাও প্রয়োজন, যাতে তারা ভাল-মন্দের তফাত করতে পারে।’’ তাঁর এই কথাতেও অনেকের বক্তব্য, মেয়েদের ‘বস্তু’ হিসেবে দেখছেন কুরেশি। ছেলেদের শিক্ষিত বৌয়ের প্রয়োজনীয়তার জন্যই কি শুধু নারী-শিক্ষা দরকারি! এমন তো নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy