শ্রদ্ধা ওয়ালকর খুনের কথা জেনে স্তম্ভিত এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালার নতুন প্রেমিকা। তিনি নিজে পেশায় মনোবিদ। কিন্তু আফতাবের মানসিক বিকৃতি সম্পর্কে কোনও ধারণাই তাঁর ছিল না বলে জানিয়েছেন। পুলিশের প্রশ্নের মুখে তরুণী জানান, তাঁর সামনে আফতাবের আচরণ ছিল অত্যন্ত স্বাভাবিক। তিনি যে এমন নৃশংস ভাবে খুন করতে পারেন, তা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না প্রেমিকা।
আফতাবের সঙ্গে ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ওই মনোবিদ। বেশ কয়েক বার তিনি আফতাবের বাড়িতেও গিয়েছেন। বাড়িতে তাঁর থাকাকালীন শ্রদ্ধার কাটা মাথা ও অন্যান্য দেহাংশ ফ্রিজে রাখা ছিল— এ কথা জানতে পেরে রীতিমতো স্তম্ভিত তরুণী। তাঁর কাউন্সেলিং চলছে।
আরও পড়ুন:
শ্রদ্ধাকে খুনের ১২ দিনের মাথায় এই মনোবিদের সঙ্গে আফতাবের আলাপ হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। নতুন প্রেমিকাকে একটি আংটি উপহার দিয়েছিলেন আফতাব। পুলিশের দাবি, সেই আংটি আদতে ছিল শ্রদ্ধার। আফতাবের এই নতুন প্রেমিকার বয়ান রেকর্ড করছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, আফতাবের আচরণে কখনও অস্বাভাবিক কিছু তিনি দেখেননি। দু’বার তিনি ছতরপুরের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। আফতাব তাঁর কাছে মুম্বইয়ের বাড়ির গল্প করতেন বলে জানিয়েছেন তরুণী।
পুলিশকে তরুণী আরও জানিয়েছেন, আফতাব অত্যধিক মাত্রায় ধূমপান করতেন। তবে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলতেন। এ ছাড়া, সুগন্ধী ব্যবহারের দিকে আফতাবের ঝোঁক ছিল। তাঁকেও একাধিক বার সুগন্ধী উপহার দিয়েছেন আফতাব। তরুণী জানিয়েছেন, আফতাব নানা রকমের খাবারদাবারের গল্প করতে ভালবাসতেন। বিশেষত আমিষ খাবার তাঁর বেশি পছন্দ ছিল। রেস্তরাঁয় তাঁরা খেতেও গিয়েছেন বেশ কয়েক বার।
শ্রদ্ধার মৃত্যুর পর আফতাব তাঁর মতো আরও ১৫ থেকে ২০ জন মহিলার সঙ্গে ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। একাধিক মহিলাকে ফ্ল্যাটেও এনেছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় আফতাব শ্রদ্ধাকে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই খুনের জন্য তাঁর বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই।
লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটার অভিযোগ আফতাবের বিরুদ্ধে। শ্রদ্ধার দেহ মোট ৩৫ টুকরোয় ভাগ করে রেখে দেওয়া হয়েছিল ফ্রিজে। প্রতি দিন একটি একটি করে টুকরো নিয়ে আফতাব ফেলে আসতেন নিকটবর্তী জঙ্গলে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে পুলিশ।