২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নিরহুয়া। ফাইল চিত্র
উত্তরপ্রদেশের আজমগড় লোকসভা আসনের দখল নিল বিজেপি। জিতলেন তারকাপ্রার্থী দিনেশলাল যাদব। ভোজপুরী তারকা অবশ্য ‘নিরহুয়া’ নামেই বেশি পরিচিত। বাংলার সঙ্গেও যোগ রয়েছে তাঁর। একটা সময়ে থাকতেন উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ায়। সেটা অবশ্য ছাত্রজীবনে।
২০১৯ সালে হেরেছিলেন। জিতলেন ২০২২-এ এসে। লোকসভা ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর যখন নিজের গাজিপুরের বাড়িতে ‘স্টাইলিশ’ ছেঁড়া জিন্স পরে গিয়েছিলেন দিনেশলাল, তখন তাঁর এক জ্যাঠামশাই বলেছিলেন, ‘‘ভোটে দাঁড়াতে বারণ করেছিলাম। ভোটে দাঁড়িয়ে হারলে এমনই হাল হয় নেতাদের! ছেঁড়া জামাকাপড় পরে ঘুরতে হয়।’’ কোনও উত্তর না দিয়ে সে দিন চুপ করেছিলেন দিনেশ। পরে এক সাক্ষাৎকারে সে কথা জানিয়েছিলেন তিনি। রবিবার উপনির্বাচনে জিতে সাংসদ হওয়ার পরে সেই জ্যাঠামশাইয়ের কাছে তিনি ফিরে যাবেন কি না, সেটা অবশ্য এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
দু’বছর আগে সপা প্রার্থীর কাছে হেরেছিলেন। প্রার্থী ছিলেন সপার জাতীয় সভাপতি অখিলেশ যাদব। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সেই আসনেই উপনির্বাচনে দিনেশকে প্রার্থী করে বিজেপি। তবে এ বার আর ভোজপুরী ছবির সুপারস্টারকে খালি হাতে ফেরায়নি আজমগড়।
রবিবার ভোটগণনার শুরু থেকেই এগোতে শুরু করেন নিরহুয়া। কিন্তু কয়েক রাউন্ড পরেই পিছিয়ে পড়তে থাকেন ভোজপুরী নায়ক, এগোতে শুরু করেন সপা প্রার্থী ধর্মেন্দ্র যাদব। কিন্তু কয়েক রাউন্ড যেতেই নায়কের ‘কামব্যাক’। ধীরে ধীরে জয়ের কাছে পৌঁছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন রুপোলি পর্দার নায়ক। শেষ পর্যন্ত ১১ হাজার ২১৩ ভোটে জয় পান তিনি।
जनता की जीत!
— Nirahua Hindustani (@nirahua1) June 26, 2022
आजमगढ़वासियों आपने कमाल कर दिया है। यह आपकी जीत है। उपचुनाव की तारीखों की घोषणा के साथ ही जिस तरीके से आप सबने भाजपा को प्यार, समर्थन और आशीर्वाद दिया, यह उसकी जीत है। यह जीत आपके भरोसे और देवतुल्य कार्यकर्ताओं की मेहनत को समर्पित है। pic.twitter.com/mZ6YWzxFv5
জয়ের পরেই টুইট করে আজমগড়বাসীকে ধন্যবাদ জানান দিনেশ লাল। নিরহুয়া লেখেন, ‘জনগণের জয়! আজমগড়ের মানুষ, আপনারা কামাল করে দিয়েছেন। এটা আপনাদের জয়। উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে, আপনারা সবাই যেভাবে বিজেপিকে ভালবাসা, সমর্থন এবং আশীর্বাদ করেছেন, এটি তার জয়। আপনাদের বিশ্বাস এবং ঈশ্বরতুল্য কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতি এই জয় নিবেদিত।’ অখিলেশের কাছে বিরাটর ব্যবধানে পরাজিত হন নিরহুয়া। ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৮৭৪ ভোটে পরাজিত হয়েও আজমগড়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই চলছিলেন এই নায়ক-গায়ক। উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘গত তিন বছর যেভাবে নিরহুয়া আজমগড়ের সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন, তাতেই উপনির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কারণ, চলতি বছর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটেও বিজেপির হয়ে প্রচারে সময় দিয়েছিলেন তিনি। সাংসদ হয়ে সেই পরিশ্রমের ফলই পেয়েছেন নিরহুয়া।’’ প্রার্থীপদ ঘোষণার পরেই প্রচারের জন্য একটি গানও তৈরি করেছিলেন তিনি। রবিবার সেই গান ‘কমল কা বটন দবইহো ভইয়া, অপনে আজমগড়কে লিয়ে’-র পঙ্ক্তি কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে গণনা কেন্দ্র ছাড়েন দিনেশলাল।
ভোজপুরী সিনেমার তৃতীয় প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে যাচ্ছেন নিরহুয়া। জাতীয় রাজনীতির কারবারিদের মতে, নিরহুয়ার জয়ের ফলে ভোজপুরী ছবির জগতে বিজেপির আধিপত্য আরও শক্তিশালী হল। কারণ, ২০১৪ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব দিল্লি থেকে সাংসদ রয়েছেন ভোজপুরী সিনেমার আরও এক সুপারস্টার মনোজ তিওয়ারি। ২০১৭ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ ২০১৭ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন ভোজপুরী সিনেমার আরও এক খ্যাতনামী নায়ক রবি কিষন। ২০১৯ সালে তিনিও গোরক্ষপুর থেকে সাংসদ হয়েছেন। আর এ বার নিরহুয়াকেও সংসদে পাঠাতে সফল হওয়ায় বিজেপি ভোজপুরী ফিল্ম জগৎকে অনেকটাই দখলে রাখতে পারবে।
কারণ, পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল শিল্পাঞ্চল থেকে শুরু করে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ হয়ে রাজস্থান পর্যন্ত ভোজপুরী সিনেমার প্রভাব যথেষ্ট। তাই একের পর এক ভোজপুরী চিত্রতারকাদের নিজেদের শিবিরে টানছে গেরুয়া শিবির। এবং সেই চিত্রতারকাদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ভোটের ফসলও ঘরে তুলছে তাঁরা। যাঁর সম্প্রতি উদাহরণ কলকাতার বেলঘরিয়ায় নিজের কলেজ-জীবন কাটিয়ে যাওয়া নিরহুয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy