Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

হোসুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ৯, মন্ত্রীর মন্তব্যে ক্ষোভ

তদন্ত শুরুই হয়নি, অথচ দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু ঘোষণা করে দিলেন, বেঙ্গালুরু-এর্নাকুলাম ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পড়েছে রেললাইনে বোল্ডার পড়ে থাকার কারণে। শুক্রবার সকালে বেঙ্গালুরুর ৪৫ কিলোমিটার দূরে এই দুর্ঘটনায় ৯ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। কয়েক জনের আঘাত গুরুতর।

দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল। ছবি: এএফপি।

দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৮
Share: Save:

তদন্ত শুরুই হয়নি, অথচ দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু ঘোষণা করে দিলেন, বেঙ্গালুরু-এর্নাকুলাম ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পড়েছে রেললাইনে বোল্ডার পড়ে থাকার কারণে। শুক্রবার সকালে বেঙ্গালুরুর ৪৫ কিলোমিটার দূরে এই দুর্ঘটনায় ৯ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। কয়েক জনের আঘাত গুরুতর।

রেলের কর্তারা এই দুর্ঘটনার সঠিক কারণ সম্পর্কে এখনও সন্দিহান। কোথা থেকে রেলমন্ত্রী লাইনে বোল্ডার পড়ে থাকার তত্ত্ব পেলেন, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে তাঁদের। তবে রেলেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে ওই ট্রেনের চালক বলেন চলন্ত ট্রেনটি যে ভাবে ঝাঁকুনি দিয়ে লাইন থেকে ছিটকে গিয়েছে, তাতে মনে হয়েছে লাইনে বড় পাথর থাকতে পারে। সেই মনে হওয়াটাই কারণ হিসেবে ঘোষণা করে দিলেন রেলমন্ত্রী। রেলের অফিসাররাই বলছেন, প্রভুর এই কাণ্ড ডেকে তাঁদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাই মনে পড়ে যাচ্ছে। তাঁদের কথায়, কার্যকারণ খতিয়ে না-দেখে এ ভাবে আলটপকা মন্তব্য করে কোনও বিষয়কে জটিল করে তোলার প্রকৃষ্ট উদাহরণ মমতাদেবী। মন্ত্রীদের এ ধরনের কাজে তদন্তকারীদেরও অসুবিধা হয়।

দুর্ঘটনার পরে রেলের সেফটি কমিশনার তদন্ত শুরু করেছেন। কিন্তু আগেই মন্ত্রী কারণ জানিয়ে দেওয়ায়, সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে রেলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। রেলকর্তাদের কথায়, তদন্তের আগেই রেলমন্ত্রী কারণ বলে দিলে, তদন্তকারীদের দায় বর্তায় মন্ত্রীর বক্তব্যকেই প্রতিষ্ঠা করার। সাঁইথিয়া দুর্ঘটনার পর তদানীন্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেভাগেই অর্ন্তঘাতের তত্ত্ব খাড়া করে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য রেলের ত্রুটিই কারণ হিসেবে প্রকাশ্যে এসেছিল তদন্তে।

রেল সূত্রের খবর, ট্রেনটি বেঙ্গালুরু থেকে ছাড়ে ভোর সওয়া ৬টা নাগাদ। সাড়ে ৭টা নাগাদ আনেকাল রোড ও হোসুরের মাঝে ট্রেনটির ৯টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। কামরাগুলি ছিটকে একে অপরকে ধাক্কা মারায় দুমড়ে মুচড়ে যায়। প্রচণ্ড শব্দে মানুষ ছুটে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে ঘটনাস্থলে যায় রেলের উদ্ধারকারী দল। রেলকে সাহায্য করার জন্য কর্নাটক এবং তামিলনাড়ু থেকেও একটি করে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি মৃতদের আত্মীয়দের হাতে ২ লক্ষ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে এককালীন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মন্ত্রী রেললাইনে পাথর থাকার কথা বললেও রেলের একটি সূত্র বলেছে, লাইনের ত্রুটির কারণেও ঘটনাটি ঘটতে পারে। তবে সেটা পরিষ্কার হবে সেফটি কমিশনারের তদন্তে। ওড়িশার জাজপুরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার সঙ্গে এই দুর্ঘটনার মিল পাচ্ছেন কর্তারা। জাজপুরে লাইনে ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে। রেল কর্তাদের বক্তব্য, জোনগুলিতে লাইন মেরামতির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হচ্ছে। অনেক সময়েই ঠিকাদারদের লোকজন ঠিক মতো কাজ করে না। এতেই বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। রেল কর্তাদের বক্তব্য, মেরামতি কাজের বহু পদ এখন শূন্য। তা পূরণ না করলে নজরদারিতে ঘাটতি থেকেই যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

hosur train accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy