চিন, রাশিয়া ও পাকিস্তানের আপত্তি সত্ত্বেও নিরাপত্তা পরিষদ সংস্কার করার লক্ষ্যে সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জে এক খসড়া নথি গৃহীত হল। নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার কী ভাবে করা যায়, এই নথিতে তারই দিক্নির্দেশ করা হয়েছে। আগামী এক বছর ধরে এই নথি দিয়েই রাষ্ট্রপুঞ্জে আলোচনা চলবে। দেখা হবে, ভারত, জাপান, ব্রাজিল ও জার্মানির মতো দেশগুলোর দাবি মেনে তাদের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া সম্ভব কি না, বা দেওয়া হলেও তাদের ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে কি না। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নয়াদিল্লি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘বহু দিন ধরেই নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার করার কথা হচ্ছে। আমরা আশা করব, নিরাপত্তা পরিষদের সব ক’টি সদস্য-দেশ এই সংস্কারের প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভাবে সামিল হবে।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি সূত্র জানাচ্ছে, খসড়া নথি অনুসরণ করে সংস্কার করার নজির এর আগে আর দেখা যায়নি। গত ৩১ জুলাই এই খসড়া নথি তৈরি হয়েছিল। ১০ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য-দেশগুলোর কাছে চিঠি পাঠিয়ে সেই খসড়া নথির কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছিল। আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭০তম অধিবেশন শুরু। এই নথি গৃহীত হওয়ার ফলে এ বার ছাপার অক্ষরে যা লেখা আছে, শুধুমাত্র তা অনুসরণ করেই সংস্কারের কথাবার্তা এগোবে। নথির বাইরে কোনও প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হবে না। প্রত্যাশা মতোই চিন ও পাকিস্তান এই নথি গ্রহণের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছিল। তাদের সঙ্গে সুর মেলায় রাশিয়াও। তবে শেষ পর্যন্ত এই তিন দেশের আপত্তি ভোটাভুটিতে গড়ায়নি।
খসড়া নথি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে এই আলোচনার নেতৃত্বে থাকবেন রাষ্ট্রপুঞ্জে জামাইকার রাষ্ট্রদূত কোর্টনি র্যাটরায়। আজকের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত হরদীপ সিংহ পুরি বলেন, ‘‘কূটনৈতিক ভাবে ভারতের এটা একটা বিশাল বড় সাফল্য।’’ কূটনীতির টেবিল থেকে পাকিস্তান বার বার সরে যাওয়ায় তিতিবিরক্ত ভারত আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এ মাসেই রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭০তম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও বক্তব্য রাখবেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজকের সিদ্ধান্তের পরে মনে করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসতে পারেন।
নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার হলেও ভারতের কতটা লাভ হবে, সেই প্রশ্ন থাকছেই। বহু দিন নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদের জন্য তদ্বির করছে নয়াদিল্লি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য-দেশগুলিকে এর আগে নরেন্দ্র মোদী চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তারা যেন নিরাপত্তা পরিষদ সংস্কারের পক্ষেই রায় দেয়। এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭০তম অধিবেশনই এই সংস্কারের আদর্শ সময়। তবে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে অন্যতম চিন ও আমেরিকা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভারতকে স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া হলেও ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে না। রাষ্ট্রপুঞ্জের আজকের প্রস্তাবের পরেও তারা তাদের সেই অবস্থান থেকে সরবে, এ রকম কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy