বাঁশ বাগান রক্ষার্থে এবং অর্থকরী এই গাছটির উত্পাদন বাড়িয়ে কৃষিজীবীদের আর্থিক ভাবে লাভবান করতে এ বার ত্রিপুরার বন দফতর বিদেশ থেকে উন্নতমানের বাঁশগাছের চারা আমদানি করল। মূলত তাইল্যান্ড ও চিন থেকে এই বাঁশ চারাগুলি আনা হয়েছে। চিন থেকে আমদানি করা হয়েছে ‘মোসো’ এবং তাইল্যান্ড থেকে ‘ডেনড্রো ক্যালামাস অসপার’ শ্রেণির বাঁশের চারা।
‘মোসো’ ব্যবহৃত হবে শিল্পায়নের প্রয়োজনে এবং আর ‘ডেনড্রো’ ব্যবহার করা হবে খাদ্যসামগ্রী হিসেবে। ছোট তথা চারা বাঁশগাছের আগা কেটে যে নরম অংশটি (যার প্রচলিত নাম ‘কোঁড়’) পাওয়া যায় তা ত্রিপুরা-সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে উন্নতমানের প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ জনপ্রিয় সব্জি হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এটি একটি লোভনীয় খাদ্যবস্তু। ত্রিপুরার বনমন্ত্রী নরেশ জামাতিয়ার কথায়, ‘‘এই কোঁড়ের জোগান দিতে গিয়ে প্রতি বছর রাজ্যে হাজার হাজার চারা বাঁশগাছ কাটা পড়ে। তার ফলে বাঁশের উত্পাদন দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতেই এই ব্যবস্থা।’’
ত্রিপুরাতে প্রায় ১৫টি প্রজাতির বাঁশ পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও মানুষের ‘কোঁড়’ খাওয়ার তাগিদে এবং ভিন রাজ্যে বাঁশ জোগান দেওয়ার কারণে ত্রিপুরাতে বাঁশের বাজারে বেশ টান পড়ে। বন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, শুধু এ রাজ্যেই বাঁশের ‘কোঁড়’ লাগে বছরে ২০ হাজার মেট্রিক টন। এর উপর শিল্পের প্রয়োজনেও বাঁশ ব্যবহার করা হয় এ রাজ্যে। স্বভাবতই বাঁশবাগানের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বর্তমানে ত্রিপুরাতে বাঁশের উত্পাদন বছরে ২ লক্ষ মেট্রিক টন।
শিল্পের প্রয়োজনে এবং বাঁশের ‘কোঁড়’ জোগানের উদ্দেশে শুধু রাজ্যের বাঁশের উপর নির্ভর করলে যে চলবে না, বন দফতর সেটা বুঝতে পেরে আগে ভাগেই ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে বলে বনমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, ‘‘তাইল্যান্ড থেকে ৫ হাজার উন্নতমানের ডেনড্রো চারা গাছ আনা হয়েছে। চিন থেকে আনা হয়েছে মোসো প্রজাতির বাঁশ।’’ সেগুলি থেকে ১৫ হাজার চারা তৈরি হয়েছে। যাঁরা ‘জুম’ চাষ করেন, তাঁদের এ চারা বিতরণ করার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য বন দফতর। বাঁশের ‘কোঁড়’ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আদিবাসীদের যেমন প্রিয় খাদ্যবস্তু, সে রকম সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হোটেলগুলিতেও এর চাহিদা বর্তমানে বাড়ছে।
তাইল্যান্ড থেকে আনা ‘ডেনড্রো’ প্রকৃতির বাঁশগাছ ন’ মাসেই ‘কোঁড়’ উত্পাদন করতে সক্ষম। আর চিন থেকে আনা ‘মোসো’ ব্যবহার করা হবে শিল্পের চাহিদা মেটাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy