যে কোনও সমস্যা, যে কোনও প্রশ্ন—সমাধান হাতের কাছেই। সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে জি়জ্ঞাসা করলেই উত্তর মিলবে নিমেষে। কাজ আরও সহজ করে দিচ্ছে এআই টুল।
ব্রণের সমস্যা? বিটের শট খান।
ওজন কমাবেন? ভেষজ চায়ে চুমুক দিন।
মেদ ঝরাতে সকালে খান ডিটক্স পানীয়।
কেউ বলেন, এই শটে চুলের জেল্লা ফেরে, কেউ বলেন, ডিটক্স পানীয় চুমুক দিলেই মেদ গলবে এক সপ্তাহে। কিন্তু সত্যিই কি এই পরামর্শ কাজের? যে কেউ সকালে উঠে যে কোনও পানীয় চুমুক দিলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য লাভ করা সম্ভব?
সকালে উঠে পানীয় খাওয়া কেন জরুরি?
মা-ঠাকুরমারা বলতেন সকালে উঠেই জল খাওয়া দরকার। বাড়ির অভিভাবকদের কারও আবার পরামর্শ, এক গ্লাস নয় পর পর দুই-তিন গ্লাস জল খেলে শরীর ভাল থাকবে। বেশিরভাগ বাড়িতেই অবশ্য জল খাওয়া হোক বা না হোক, চা-কফি সকালের পানীয়ের তালিকায় থাকবেই।
আরও পড়ুন:
সকালে উঠে জল খাওয়া দরকার, মানছেন পুষ্টিবিদেরাও। কারণ, টানা ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমের সময় জল খাওয়া হয় না। অথচ শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপের জন্য জল জরুরি। ফলে শরীরে জলের অভাব দূর করতেই এই পরামর্শ। কিন্তু খাবেন কোন পানীয়? শুধু জল খেলে হবে। না কি বেছে নিতে হবে ডিটক্স পানীয় কিংবা স্বাস্থ্যকর শট?
কলকাতার পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর কথায়, ঘুম থেকে উঠে জল খাওয়াই যথেষ্ট। রাতে ঘুমের সময় শরীরে বিপাকক্রিয়ায় যে সব দূষিত পদার্থ তৈরি হয়, তা বার করে দেওয়ার জন্য জল খাওয়া দরকার। তবে বাড়তি উপকারের জন্য চাইলে কেউ মেথি ভেজানো জল, চিয়ার জল, মৌরির জল খেতেই পারেন যদি না তাঁর কোনও বিশেষ সমস্যা থাকে।
সকালের পানীয় বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত লক্ষ্য, এমনটাই মনে করেন পুষ্টিবিদেরা।
দিল্লির পুষ্টিবিদ অঞ্জলি নৈন বলছেন, ‘‘পানীয় কেন বেছে নিচ্ছেন, সেটি জরুরি। ঘুম ভাব ছাড়ছে না, তখন এক কাপ কফি খেলে শরীর ঝরঝরে লাগবে। আবার যিনি কফি পছন্দ করেন না, তুলনামূলক হালকা পানীয় চান তিনি গ্রিন টি বেছে নিতে পারেন।’’
আরও পড়ুন:
সকালে উঠে কারও পেট ভার হয়ে থাকে। কেউ আবার চান ওজন কমাতে। কারও লক্ষ্য থাকে, শরীর ভাল রাখা। পুষ্টিবিদদের কথায়, কারণ অনুযায়ী পানীয় বেছে নেওয়া দরকার। হজমের সমস্যা থাকলে সকালে উঠে আদা দিয়ে তৈরি ভেষজ চা ভাল। আবার তিনি বেছে নিতে পারেন পুদিনাপাতার চা, যেখানে চা পাতা থাকবে না। যিনি চাইছেন পুষ্টিকর, ভিটামিনে সমৃদ্ধ কিছু খেতে, তিনি সব্জির রস, ফল, স্মুদিও খেতে পারেন।
প্রয়োজন অনুযায়ী পানীয়
ওজন কমানো: অনেক সময়ই দাবি করা হয়, পানীয়ে চুমুক দিলে মেদ ঝরবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলেন, ওজন কমানো শুধু পানীয়ে চুমুকে দিয়ে হয় না। দৈনন্দিন খাবারের পরিমাণ, পুষ্টি এবং আনুষঙ্গিক অনেক বিষয়ই এর সঙ্গে যুক্ত। তবে কোনও কোনও পানীয় হজমক্ষমতা বৃদ্ধি করে বা বিপাকক্রিয়ার হার বাড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। সমাজমাধ্যম প্রভাবী পুষ্টিবিদ ভৃতি শ্রীবাস্তবের পরামর্শ— জিরে, গোটা ধনে, কারিপাতা, আদা একসঙ্গে ফুটিয়ে সেই জল খাওয়া উচিত। জিরে, আদা-সহ প্রতিটি উপাদানেরই নিজস্ব পুষ্টিগুণ রয়েছে। হজমক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে পানীয়টি।
উজ্জ্বল ত্বক: ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক ভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এ ছাড়াও নানা রকম খনিজেরও কিছু ভূমিকা থাকে। ভৃতি বলছেন, আমলকি, সেলেরি, অ্যালো ভেরা এবং গাজরের শট ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। গাজরে থাকে ভিটামিন এ। অ্যালো ভেরাতেও থাকে প্রদাহনাশক উপাদান। একই সঙ্গে ব্রণের সমস্যা থাকলে ভাজাভুজি এবং চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
পেটের স্বাস্থ্য: পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অ্যালো ভেরা এবং ত্রিফলা ভেজানো জল ভাল।