কী করেন?
পেশায় পুলিশকর্মী। নানা থানার জল খেয়ে এখন হুগলির চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটে। চোর-ছ্যাঁচড়-ডাকাত-অপরাধী ধরার পেশায় যথেষ্ট সফল। উত্তরবঙ্গ থেকে জঙ্গলমহল, বর্ধমান থেকে হুগলি— কোথায় না কোথায় কাজ করেছেন বছর চল্লিশের এই ‘তরুণ’। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব সুনামের সঙ্গে সামলেও তাঁর মনের খিদে মেটে না। সামাজিক দায়িত্ববোধ পেশাগত দায়িত্বকে ছাপিয়ে যায়। পকেটের টাকা খরচ করে তিনি সামাজিক কাজ করেন।
কেন?
জীবনে চলার পথে অন্যের পাশে দাঁড়ানোই মানুষ হিসাবে কর্তব্য, এমনটাই মনে করতেন সেই ছোটবেলা থেকে। বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির যে গ্রামে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, সেই কাপিষ্ঠার পোস্টমাস্টার বার্ধক্যভাতার টাকা তছরুপ করেছিলেন। অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দুর্দশা মানতে পারেননি সুকুমার। তাঁদের কথা ভেবেই চিঠি লিখেছিলেন হেড অফিসে। তছরুপের ঘটনার তদন্ত হয় সেই চিঠি পাওয়ার পর। এক বছরের জন্য সাসপেন্ড হন সংশ্লিষ্ট পোস্টমাস্টার। তছরুপের টাকাও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর পর ২০০১ সাল। গুজরাতের ভুজে ভয়াবহ ভূমিকম্প। কোনওক্রমে ১০০ টাকা জোগাড় করে গ্রামেরই পোস্টঅফিস থেকে মানি অর্ডার করে সুকুমার পাঠিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। সেই শুরু। ‘নেশা’টা আর কাটেনি। এখনও মানুষের পাশে দাঁড়াতেই কাজ করা।
আর কী?
রোজকার ডিউটি, ডিউটি শেষে নানা ধরনের সামাজিক কাজের পর আর তেমন অবসর সময় মেলে না। তারও ফাঁকে যেটুকু অবসর পাওয়া যায়, গান শোনা আর আড্ডায় কেটে যায়। কখনও কখনও সিনেমা দেখার ফুরসতও মেলে। সানি দেওল সুকুমারের প্রিয় অভিনেতা। আর পুরনো অভিনেতাদের মধ্যে অমিতাভ বচ্চন।
এর পর?
সরকারি চাকরি, তা-ও আবার পুলিশের! ফলে অনেক রকমের বাধ্যবাধকতাও থাকে সামাজিক কাজ করার ক্ষেত্রে। কিন্তু তিনি সে সব মেনে নিয়েছেন। আপাতত ভবিষ্যৎ নিয়ে তেমন ভাবে ভাবেন না। শুধু ভাবেন, চাকরি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পরে বাকি জীবনটা মানুষের কাজের জন্য ব্যয় করবেন।