কী করেন?
বয়স ৩৩। চিত্রশিল্পী। ‘প্রোফাইল’ তোলেন। মানুষের মুখের ছবিতে ফুটিয়ে তোলেন সময়ের অস্থিরতা, ফেলে আসা কাল, ভবিষ্যতের স্বপ্ন। ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব ফোটোগ্রাফি’ বিশ্বের ১৬ জন উদীয়মান চিত্রগ্রাহকের তালিকায় রেখেছে সোহম গুপ্তকে। তখন একাদশ শ্রেণি। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ছাত্র। গণিত, পরিসংখ্যানবিদ্যা বইয়ে একেবারেই মন বসছে না। তার মধ্যেই ক্যামেরা কিনে আনলেন বাবা। কোথাও বেড়াতে গেলে ছবি তোলা হবে। সেটিই সঙ্গী হয়ে গেল। নিজের মনের অস্থিরতা ভুলতে অন্যের মুখের ছবি তোলা শুরু। তেমনই একটি ছবি পুরস্কার পেল। স্কুলে যখন লেখাপড়া না করার জন্য বকুনি খাচ্ছেন, তখন এমন সম্মান আত্মবিশ্বাস বাড়াল। ইতিমধ্যে স্কুল পেরিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পা। সোহম বলেন, ‘‘তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের শিক্ষকদের কাছে পাঠ নিয়ে নিজের উপর যেন ভরসা বাড়ল। স্বাধীন ভাবনা যে দোষের নয়, বুঝলাম। আত্মীয়-পড়শিরা যে যা-ই বলুন না কেন, ঠিক করে ফেললাম ছবিই তুলব।’’ প্রথাগত লেখাপড়ায় সেই ইতি।
কেন?
শিল্পচর্চার পীঠস্থান ল’বিয়েনেল ডি ভেনেজিয়ায় কাজ দেখানোর আমন্ত্রণ তাঁর আগে কোনও বাঙালি চিত্রগ্রাহক পাননি। নন্দলাল বসু, মকবুল ফিদা হুসেনের মতো হাতে-গোনা মাত্র কয়েক জন ভারতীয় শিল্পীর ছবি প্রদর্শিত হয়েছে সেখানে। বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামী শিল্পীর সঙ্গে ভেনিসের সেই শিল্প-উৎসবে ডাক পেয়েছেন সোহম। ফ্রান্স থেকে কম্বোডিয়া—নানা দেশের প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। জার্মানির এসেন শহরের ফোকওয়্যাং মিউজিয়ামে প্রদর্শিত রয়েছে তাঁর তোলা ২০টি ছবি।
আর কী?
সিনেমা দেখেন, গান শোনেন। তবে ছবি তোলা শুধু পেশা নয়, নেশাও। অবসরেও ছবিই তোলেন। ছবির বই সংগ্রহ করেন। দৈনন্দিন ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি দেয় ছবিই।
এর পর?
মূলত মানুষের ছবি তুলেছেন এত দিন। এখন কাজের মোড় ঘুরেছে। প্রকৃতির নানা রূপও তুলে ধরছেন ক্যামেরায়। পরিকল্পনা করে কোনও কাজ করেন না। আশা, আরও নানা ধরনের কাজ করবেন পরবর্তীকালে।